তহবিল বরাদ্দের নীতিমালা অনুসরণ করছে না গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড

ছবি: সংগৃহীত
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৪ | ১৪:১৩
বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় গঠিত গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড (জিসিএফ) বরাদ্দের ক্ষেত্রে নীতিমালা অনুসরণ করছে না বলে অভিযোগ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, জিসিএফ স্বীকৃত ‘তহবিল পাওয়ার যোগ্য’ ১৫৪টি দেশের মধ্যে ২৫টি (১৬ দশমিক ২ শতাংশ) দেশ প্রকল্প পায়নি: এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি দেশ এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের। ‘বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ’ ৯৬টি দেশের মধ্যে ৮টি দেশ প্রকল্প পায়নি।
আজ মঙ্গলবার ধানমন্ডিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটি এ দাবি করেছে। সংবাদ সম্মেলনে ‘সবুজ জলবায়ু তহবিলে বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশের অভিগম্যতা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন টিআইবি গবেষক নেওয়াজুল মওলা ও সহিদুল ইসলাম।
সংস্থাটি অভিযোগ করে বলছে, অভিযোজন প্রকল্পগুলো অধিকাংশই অনুদানভিত্তিক হওয়ায় প্রকল্প অনুমোদনে জিসিএফের অধিক আগ্রহ দেখাচ্ছে। শুধুমাত্র অভিযোজনের জন্য ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার (২৫ দশমিক ৮ শতাংশ) অনুমোদন করা হয়েছে।
জিসিএফ তহবিলের শুরু থেকে অভিযোজন এবং প্রশমন থিমে বরাদ্দে ৫০:৫০ অনুপাত বজায় রাখার লক্ষ্যমাত্রা গত ৮ বছরে অর্জিত হয়নি বলেও দাবি সংস্থাটির।
সংস্থাটি আরও অভিযোগ করেছে, যে কয়টি ঝুঁকিপূর্ণ দেশে অভিযোজনের অর্থায়ন হয়েছে তার অধিকাংশই আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হয়েছে; এক্ষেত্রে জাতীয় প্রতিষ্ঠানকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশে জিসিএফ তহবিলের ৯টি প্রকল্পে মোট অনুমোদিত অর্থের মাত্র ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ ছাড় করা হয়েছে। একটি প্রকল্প অনুমোদনের দীর্ঘ তিন বছর পর প্রথম কিস্তির অর্থছাড় করা হয়েছে। অর্থছাড়ে বিলম্ব হওয়ায় প্রকল্প বাস্তবায়নেও বিলম্ব হয়; ফলে প্রকল্পভুক্ত এলাকায় জলবায়ু ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় মধ্য মেয়াদে ২০২৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের কমপক্ষে ১২ হাজার মিলিয়ন ডলার প্রয়োজনের বিপরীতে পেয়েছে মাত্র ১ হাজার ১৮৯ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার। যা প্রয়োজনীয় মোট অর্থের ৯ দশমিক ৯ শতাংশ।
টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জিসিএফ যদি ব্যর্থ হয়, নিজেরাই নীরব থাকে সেখানে আমাদের কথা বলা ছাড়া উপায় নেই। জিসিএফ সামিট এক যুগ ধরে কাজ করছে, তাদের কার্যক্রম হতাশাজনক। উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্যে চ্যালেঞ্জ তৈরি করে তাহলে সহযোগিতা পাওয়ার ক্ষেত্র কমিয়ে দিয়েছে।
কান্ট্রি ওনারশিপ বিষয়ে টিআইবি নির্বাহী পরিচালক বলেন, জিসিএফ নিজেদের নীতিমালার বাইরে গিয়ে কান্ট্রি ওনারশিপে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সংস্থাগুলোর জন্যে ঋণ দিচ্ছে আর আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে অনুদান দিচ্ছে। সুকৌশলে বোঝা আরোপ করছে কারণ সেসব দেশ জিসিএফে অনুদান দেয়, সে দেশের সংস্থায় অনুদান নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশে প্রকল্প বাস্তবায়নে জিসিএফ দুর্নীতির অভিযোগ করলেও প্রতিষ্ঠানটি নিজেরাই দুর্নীতি করছে।
- বিষয় :
- জলবায়ু ঝুঁকি
- টিআইবি