এমপি আজীম হত্যা
দায় স্বীকার করে জবানবন্দি আ’লীগ নেতা বাবুর

আনোয়ারুল আজীম
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৪ | ০০:৩৬
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের মামলায় আরও একজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি হলেন ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবু। এ নিয়ে আজীম হত্যা মামলায় চারজন দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। গ্রেপ্তার অপর আসামি ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু আট দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।
শুক্রবার সাত দিনের রিমান্ড চলাকালে কামাল আহমেদ বাবুকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। বাবু ঘটনার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তাঁর জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে ৬ জুন রাতে ঝিনাইদহ শহরের আদর্শপাড়া এলাকা থেকে বাবুকে আটক করে ডিবি। ৯ জুন বাবুকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এর পর তাঁকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। অন্যদিকে, ১১ জুন ধানমন্ডি থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে ডিবি পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনায় সম্পৃক্ততা পাওয়ায় ১৩ জুন তাঁকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আওয়ামী লীগ নেতা বাবু এমপি আজীম হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে বেশ কিছু তথ্য দিয়েছেন। তিনি এ ঘটনায় আরেক আওয়ামী লীগ নেতা মিন্টুর ভূমিকা নিয়ে কথা বলেছেন। বাবু এলাকায় মিন্টুর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। বাবুর গাড়িতে অধিকাংশ সময় চলাফেরা করতেন মিন্টু।
এর আগে আজীম হত্যাকাণ্ডে মিন্টুর জড়িত থাকার বিষয়টি প্রথম সামনে আসে শিমুল ভূঁইয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে। শিমুল ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিতে তাঁর নাম বলেছেন। এ ছাড়া বাবুর নামও ফাঁস করেন শিমুল। এর পর গোয়েন্দারা খুঁজতে থাকেন কেন, কীভাবে, কী কারণে এই হত্যাকাণ্ডে মিন্টুর নাম সামনে আসছে। এর উত্তর মেলাতে গিয়ে গোয়েন্দাদের তদন্তে সন্দেহভাজন কিছু বিষয় ঘুরপাক খায়। যেমন, আজীম হত্যার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার আগে কেন বাবুর ফোন থেকে ছবি দেখে তা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন মিন্টু। নিজ জেলার একজন সংসদ সদস্যকে হত্যা করার মতো লোমহর্ষক ঘটনার ক্লু পেয়েও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কেন জানাননি তিনি। ওই সময় আজীমের পরিবারের সদস্যরা নানা জায়গায় তাঁকে খোঁজাখুঁজি করছিলেন। যখন অনেকেই জানতেন আজীম নিখোঁজ, তখন মিন্টু নিশ্চিত হয়ে যান আজীমকে হত্যা করা হয়েছে। কলকাতা থেকে লাশ উদ্ধারের আগেই কেন হঠাৎ বাবুর তিনটি ফোন সেট গায়েব হয়! এই ঘটনায় থানায় জিডিও করেন তিনি। পরে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে বাবু দাবি করেন, তাঁর ব্যবহৃত তিনটি ফোন সেট নিয়ে গেছেন মিন্টু। এসব নষ্ট করে ফেলা হতে পারে।
- বিষয় :
- আনোয়ারুল আজীম
- হত্যা