জিহাদ ছিনতাই ডাকাতি করত ঢাকায়

এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৪ | ০০:২০
ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যা মিশনে অংশ নেওয়া জিহাদ হাওলাদারের বাড়ি খুলনার দিঘলিয়ার বারাকপুর গ্রামে। স্কুলের গণ্ডি পেরোনোর আগেই লেখাপড়া ছেড়ে বাবা জয়নাল হাওলাদারের সঙ্গে রংমিস্ত্রির কাজ শুরু করে। একপর্যায় দুটি মারামারির মামলায় জড়িয়ে পড়ে গা-ঢাকা দেয়। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় আমানুল্লাহ সাঈদ ওরফে শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে খুলনায় একটি রাজনৈতিক সমাবেশে পরিচয় হয় তার।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, এলাকা ছাড়ার পর জিহাদ ঢাকায় একটি বস্তিতে থাকত এবং ছিনতাই-ডাকাতি করত। তার নামে ঢাকার বিভিন্ন থানায় চুরি-ছিনতাই ও ডাকাতির মামলা রয়েছে। কয়েক বছর আগে ঢাকায় সিরিজ ডাকাতির ঘটনায় ডিবির তেজগাঁও বিভাগের হাতে গ্রেপ্তার হয়। এই মামলা থেকে শিমুলের মাধ্যমে জামিন নিয়ে দেশ ছাড়ে। শিমুল ভূঁইয়ার হাত ধরেই জড়িয়েছে বড় অপরাধে।
ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, জিহাদের বিরুদ্ধে দিঘলিয়া থানায় ২০২৩ সালে একটি মামলা হয়। এর আগে ২০২০ সালে এলাকায় মারামারির দুটি ঘটনায় দুই মামলায় আসামি হন। মারামারির ঘটনায় মামলায় ৮ মাস জেলও খেটেছেন তিনি।
মামলার তদন্ত তদারক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই হত্যাকাণ্ডে জড়ানোর বহু আগে থেকে শিমুলের সঙ্গে জিহাদেরর পরিচয়। ভারতে শিমুলের আশ্রয়েই থাকতেন তিনি। ভারতীয় পুলিশকে হত্যার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন জিহাদ। আজীম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ৯ জনের মধ্যে পাঁচজন খুলনার। এ ছাড়া একজন টাঙ্গাইলের, একজন ভোলার ও দুইজন ঝিনাইদহের রাজনৈতিক নেতা।
দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর বাজারের পাশে টিনশেডের বাড়িতে থাকে জিহাদের পরিবার। তার ছোট ভাই জায়েদ বারাকপুর এলাকার আনসার হত্যা মামলার আসামি। জিহাদ ঢাকা ও যশোরের দুটি মামলায় জড়িয়ে পড়ে গা-ঢাকা দেয় বলে জানান তার স্ত্রী মুন্নি বেগম। বাড়ি ছাড়ার পর থেকে তার কোনো খোঁজ নেই। এর মধ্যে এক দিন তার খোজে যশোর থেকে ডিবি পুলিশ বাড়িতে এসেছিল। সর্বশেষ ৯ মাস আগে ফোন করে এক-দেড় মিনিট কথা বলে শিশুসন্তান ও বাবা-মার খোঁজখবর নেয় জিহাদ। এ সময় তার অবস্থান সম্পর্কে কিছুই জানায়নি। জিহাদের বাবা জয়নাল হাওলাদার বলেন, এলাকায় মারামারি হলে জিহাদ তাতে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ত। এমন ছোটখাটো ঘটনা থেকে ছেলে সন্ত্রাসে জড়িয়ে পড়ে।
গত বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশীদ বলেন, গত ১৩ মে সকালে কলকাতায় এমপি আজীম তাঁর বন্ধু গোপালের বাসা থেকে বের হন। এরপর নিখোঁজ হন তিনি। ওই দিন কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে অপেক্ষায় ছিলেন ফয়সাল। আজীমকে স্বাগত জানাতে লাল গাড়ির কাছে যান তিনি। সেখানে অপেক্ষায় ছিলেন শিমুল ভূঁইয়া। অন্যদিকে কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিভা গার্ডেন্সের ভাড়া বাসায় অপেক্ষায় ছিলেন মোস্তাফিজ ও জিহাদ। জিহাদের নেতৃত্বে আজীমকে হত্যার পর কেটে টুকরো টুকরো করে লাগেজে ভরে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়।
- বিষয় :
- আনোয়ারুল আজীম