ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

ঢাকায় নেমে গ্রেপ্তার লিবিয়ায় পাচার চক্রের হোতা মাহবুব

ঢাকায় নেমে গ্রেপ্তার লিবিয়ায় পাচার চক্রের হোতা মাহবুব

গ্রেপ্তার লিবিয়ায় পাচার চক্রের হোতা মাহবুব। ছবি: সমকাল

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪ | ০০:৩১

সাধারণ মানুষকে ভালো বেতনে ইউরোপে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে দেশ থেকে লিবিয়া নিয়ে যেত একটি চক্র। তাদের আটকে রেখে নির্যাতন করে আদায় করত লাখ লাখ টাকা মুক্তিপণ। এ চক্রের হোতা মাহবুব পাঠানকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।

সিআইডি জানায়, লিবিয়ায় সক্রিয় মানব পাচার চক্রের হোতা মাহবুবকে গত ২৮ জুন সন্ধ্যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। লিবিয়ায় বেনগাজি ও ত্রিপলি শহরে দুটি মানব পাচার গ্রুপ সক্রিয়। বেনগাজির চক্রটি মাহবুব আর ত্রিপলির চক্রটি মনির নামে একজন নিয়ন্ত্রণ করে। একটি গ্রুপ কোনো জিম্মিকে নির্যাতন করে টাকা নেওয়ার পর পাঠিয়ে দেওয়া হতো অন্য গ্রুপের কাছে। সেখানেও নির্যাতন করে আরেক দফা টাকা হাতিয়ে নেওয়া হতো। ২০২১ সালের ১৭ মে ৬৪ বাংলাদেশিসহ ১০৪ জন অভিবাসী তিউনিসিয়ার উপকূলে ভাসতে থাকা অবস্থায় উদ্ধার হন। তারা সবাই মাহবুবের দ্বারা মানব পাচারের শিকার। উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশিদের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সহায়তায় দেশে ফেরত আনে সিআইডি। তাদের মধ্যে শরীয়তপুর নড়িয়া থানার মিলন ব্যাপারী ওই বছরই এ চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে নড়িয়া থানায় মামলা করেন। মাহবুবকে সেই মামলায়ই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

সোমবার সন্ধ্যায় সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান জানান, মাহবুব আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন। তাঁর চক্রের অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 

তদন্ত সূত্র জানায়, চক্রটি ২০২১ সালে মিলন ব্যাপারী ও অন্যান্য ভুক্তভোগীকে প্রথমে দুবাই নিয়ে যায়। সেখান থেকে মিসর হয়ে নেওয়া হয় লিবিয়ার বেনগাজি। এর পর ক্যাম্পে ভুক্তভোগীদের জিম্মি করে চলে নির্যাতন। সেই ভিডিও পরিবারের সদস্যদের কাছে পাঠিয়ে দাবি করা হয় মুক্তিপণ। ২০২১ সালের ২ মে মিলনের মা বিউটি আক্তার ও চাচি মনি বেগম আসামিদের দেওয়া ব্যাংক হিসাব নম্বরে ২ লাখ ৯৯ হাজার ৮২০ টাকা পাঠান। এর পর মাহবুব মিলনকে ইতালি পাঠানোর কথা বলে ত্রিপলিতে আরেক চক্রের হোতা মনিরের ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেন। সেখানেও মিলনকে আটকে নির্যাতন করে দ্বিতীয় দফায় টাকা দাবি করা হয়। ওই বছরের ১২ মে মিলনের পরিবার আবারও চার লাখ টাকা মুক্তিপণ দেয়। দেশে থাকা এই চক্রের প্রতিনিধি হেনা বেগম মুক্তিপণের টাকা সংগ্রহ করতেন। তাঁকেও গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। বর্তমানে তিনি জামিনে আছেন।

আজাদ রহমান জানান, দুই দফায় টাকা নিয়ে মিলন ও অন্যান্য ভুক্তভোগীকে ইতালির উদ্দেশে ভূমধ্যসাগরে প্লাস্টিকের নৌকায় তুলে দেওয়া হয়। পরে তিউনেসিয়া সীমান্তে ভাসতে থাকা অবস্থায় উদ্ধার হন তারা। 


 

আরও পড়ুন

×