ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

এমপিদের নামে আসা শুল্কমুক্ত গাড়ি বিক্রি করবে সরকার

এমপিদের নামে আসা শুল্কমুক্ত গাড়ি বিক্রি করবে সরকার

এমপিদের নামে আসা শুল্কমুক্ত গাড়ি। ছবি: সংগৃহীত

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৪ | ২২:৪৩ | আপডেট: ২৮ আগস্ট ২০২৪ | ২২:৪৯

শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি কিনতে পারতেন সংসদ সদস্যরা। সেই সুবিধায় বিভিন্ন সংসদ সদস্যের নামে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে ৫২টি বিলাসবহুল গাড়ি। তবে সংসদ না থাকায় সংসদ সদস্য পদমর্যাদা আর নেই। ফলে গাড়িগুলো বিনা শুল্কে ছাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগও নেই। এসব গাড়ি বাজারমূল্যে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের উৎপাদন, সরবরাহ ব্যবস্থা, বাজার পরিস্থিতিসহ সার্বিক মূল্য পরিস্থিতি’ পর্যালোচনা সভায় বিষয়টি আলোচনায় আসে। সভায় উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, এসব গাড়ির বেশির ভাগই টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার ও ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো। সহজ শর্তে বাজারমূল্যে এগুলো বিক্রি করতে এনবিআরকে নির্দেশনা দিয়েছেন উপদেষ্টা।

সভায় রাজস্ব আহরণ প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনায় সাবেক এমপিদের আমদানি করা গাড়ির প্রসঙ্গ তুলে এসব গাড়ির বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা চান এনবিআর কর্মকর্তারা। শুল্কমুক্ত সুবিধায় ৫২টি গাড়ির আমদানিমূল্য প্রায় ৭০ কোটি টাকা। শুল্কসহ প্রতিটি গাড়ির দাম পড়বে ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার বেশি। তখন উপদেষ্টা তাদের জানান, এ মুহূর্তে রাজস্বের দরকার। গাড়িগুলো বিক্রি করা হলে অনেক রাজস্ব আয় হবে। ফলে বাজারমূল্যে নির্ধারিত শুল্ক দিয়ে গাড়িগুলো বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অনেকে এসব গাড়ি কিনতে সাহস পাবেন না। তবে এ ক্ষেত্রে বিক্রির জন্য কিছু শর্ত সহজ করতে হবে। তাহলে এসব গাড়ি বিক্রির মাধ্যমে রাজস্ব আদায় হবে।

এগুলো ছাড়াও দ্বাদশ জাতীয় সংসদের এমপিদের জন্য আরও কিছু গাড়ি আমদানি প্রক্রিয়াধীন ছিল। কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, শুল্কমুক্ত সুবিধার কাগজপত্র দিয়ে এসব গাড়ি আনা হলেও সংসদ ভেঙে দেওয়ায় আর সে সুবিধা পাওয়া যাবে না। এখন স্বাভাবিক শুল্ককর দিয়ে গাড়িগুলো খালাস করতে হবে।

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে কম দামের ল্যান্ড ক্রুজারটি আমদানি করা হয়েছে প্রায় ৯৮ লাখ টাকায়। শুল্ক দিতে গেলে গাড়িটির দাম পড়বে প্রায় ৮ কোটি ১০ লাখ টাকা। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আনা ৩ হাজার ৩৪৬ সিসির এ গাড়িটির স্বাভাবিক শুল্ককর হার ৮২৬ দশমিক ৬ শতাংশ।

শুল্কমুক্ত সুবিধায় এসব গাড়ি আমদানি করেছেন সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। এ ছাড়া চিত্রনায়ক ফেরদৌস, সিরাজগঞ্জের জান্নাত আরা হেনরী, হবিগঞ্জের ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া সাবেক এমপি শাহজাহান ওমর, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানও এ তালিকায় আছেন। সংরক্ষিত আসনে সদস্যদের মধ্যে বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি করেছেন তারানা হালিমসহ কয়েকজন।

আরও পড়ুন

×