হাইকমিশনার জানালেন
অভিন্ন আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে ভারত
সীমান্ত কিশোর হত্যায় প্রতিবাদ জানালো বাংলাদেশ

ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ছবি: সংগৃহীত
কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২০:৪৬
নিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিয়ে ঢাকা ও দিল্লির অভিন্ন আকাঙ্ক্ষা রয়েছে, তা বাস্তবায়নে ভারত কাজ করছে বলে জানিয়েছেন ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। মঙ্গলবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
প্রণয় ভার্মা বলেন, পররাষ্ট্রসচিব দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। আমাদের দুই দেশের যোগাযোগের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। ফলে বৈঠকটি মূলত পরিচিতিমূলক ছিল।
এছাড়া বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সম্পর্কের বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। নিরাপত্তা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে দুই দেশের অভিন্ন আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে ভারত বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে কাজ করছে। আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাব। বাংলাদেশের সম্পর্ক ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে আমরা কাজ করবো।
ভারতীয় দূতের কথা শেষ হওয়ার পর এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, সীমান্ত হত্যা এখন আলোচিত বিষয়, এ নিয়ে আপনার মন্তব্য কী— জবাবে হাইকমিশনার বলেন, এ নিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কথা বলেছেন।
পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাত নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভারতের সরকার সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেছে। বৈঠকে পররাষ্ট্রসচিব ছাত্র–জনতার আন্দোলনকে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ হিসেবে উল্লেখ করেন। প্রধান উপদেষ্টাকে শুভকামনা জানানোর জন্য ভারতীয় সরকার ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি ধন্যবাদ জানান তিনি। এছাড়া পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে চিঠি পাঠানোর জন্য ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকেও ধন্যবাদ জানান।
বৈঠকে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশী। দুই দেশের সম্পর্ককে মানুষ কেন্দ্রিয়ভাবে এগিয়ে নিতে চায় বাংলাদেশ। বৈঠকে বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন পররাষ্ট্রসচিব। এছাড়া দুই দেশের সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোসব সীমান্ত হত্যা বন্ধ ও তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি সইয়ের বিষয়ে বলেন তিনি। এছাড়া আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে সার্ক ও বিমসটেকের আওতায় অর্থপূর্ণ সহযোগিতার ওপর জোন দেন জসীম উদ্দিন। আর রোহিঙ্গাদের দ্রুততম সময়ে প্রত্যাবাসনের জন্য ভারতের সহযোগিতা আশা করে বাংলাদেশ বলে প্রণয় ভার্মাকে জানান পররাষ্ট্রসচিব।
সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ
৯ সেপ্টেম্বর ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সে (বিএসএফ) গুলিতে বাংলাদেশি কিশোর জয়ন্ত কুমার সিংহকে (১৬) হত্যার দায়ে ভারতকে প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ।
এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনে পাঠিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সীমান্তে প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র ব্যবহার এবং সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের একাধিকবার প্রতিশ্রুতির পরও এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা।
বাংলাদেশ সরকার এ নির্মম কর্মকাণ্ডের নিন্দা করে। দুই দেশের নাগরিক একে অপরের সীমানার ভেতরে বৈধ নথি ছাড়া প্রবেশ করলে, তা বিচারের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের সুনির্দিষ্ট আইন রয়েছে, তার আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই তাদের নির্যাতন ও হত্যা করা যেতে পারে না।
বাংলাদেশ ভারত সরকারকে এ ধরনের নির্মম কর্মকাণ্ড যাতে পুনরায় না হয় তার আহ্বান জানিয়েছে। সেই সঙ্গে সীমান্তে সকল হত্যাকাণ্ডের তদন্ত এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে।