অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণে প্রতিশ্রুতির বার্তা যুক্তরাষ্ট্রের

পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধি দলের বৈঠক
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১২:১৫ | আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১২:৩৮
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণ, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, মানবাধিকার সমুন্নত রাখা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো মার্কিন দূতাবাসের এক বার্তায় এমন আশ্বাস দেওয়া হয়।
এতে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পেরে ভালো লেগেছে। আমরা আমাদের অংশীদার বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণ, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, মানবাধিকার সমুন্নত রাখা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় রোববার সকালে ঢাকা সফররত মার্কিন প্রতিনিধি দল পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান রাজস্ব দপ্তরের ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যান। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।
গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের প্রতি ওয়াশিংটনের ভূরাজনৈতিক সমর্থনের জানান দিতেই উচ্চ পর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধি দলটি ঢাকায় এসেছে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক দিক থেকেও ঢাকার প্রতি উদার হতে চায় ওয়াশিংটন। শনিবার মার্কিন অর্থ দপ্তরের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বে দেশটির বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা ঢাকায় পা রেখেছেন।
ঢাকায় পৌঁছানোর পর মার্কিন প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠক নিয়ে মার্কিন দূতাবাস জানায়, জ্বালানি নিরাপত্তা থেকে শুরু করে ডেটা সেন্টার এবং পরিবহন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসাগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে। সঠিক অর্থনৈতিক সংস্কার হলে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি খাত বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক রেখে জনগণের কাঙ্খিত সংস্কারে নজর দেওয়া সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। এ চ্যালেঞ্জে সহযোগিতার হাত বাড়াতেই এসেছে মার্কিন এ প্রতিনিধি দল। দলটির নেতৃত্বে অর্থ দপ্তরের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি থাকলেও রাজনৈতিক পটভূমিতে ‘মূল আকর্ষণ’ পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু’কে ঘিরে। কারণ, ডোনাল্ড লু বাংলাদেশে পা রাখার আগে যৌথভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন ওয়াশিংটন-দিল্লি ২+২ প্রতিরক্ষাবিষয়ক ইন্টারসেশনাল সংলাপে। যেখানে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ। তাতে ভারতের পক্ষ থেকে অন্যান্য সহযোগিতার পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়। ভারতের তরফ থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন, ঢাকায় ভারতবিরোধী প্রচারণা ও জঙ্গিবাদের প্রভাব বিস্তারের মতো ইস্যু সামনে আনা হয়। তবে এখন ওয়াশিংটনের অগ্রাধিকার, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা যাতে অব্যাহত থাকে। এ কারণে দিল্লির পক্ষ থেকে ঢাকাকে যাতে বেকায়দায় ফেলা না হয়, দেশটিকে সে বার্তাই দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন প্রতিনিধি দলের সফর নিয়ে গেল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর মার্কিন প্রতিনিধি দলের সফরই প্রমাণ করে, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের আলোচনা বহুমাত্রিক হবে। কিছু সুনির্দিষ্ট বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এর সঙ্গে সংগতি রেখে বাংলাদেশও প্রস্তুতি নিচ্ছে।