ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

তিন পার্বত্য জেলায় অন্তর্বর্তী পরিষদ গঠন শিগগিরই

তিন পার্বত্য জেলায় অন্তর্বর্তী পরিষদ গঠন শিগগিরই

ফাইল ছবি

 সত্রং চাকমা, রাঙামাটি

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৩:৫৪

শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরপরই আত্মগোপনে চলে গেছেন তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা। ৫ আগস্টের পর আর তাদের দেখা মেলেনি। চেয়ারম্যান ও সদস্যরা না থাকায় পরিষদগুলোর কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। অবশ্য দু-একদিনের মধ্যে অন্তর্বর্তী পরিষদ গঠন করা হবে বলে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোতে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও গত তিন যুগে তা হয়নি। দল মনোনীত প্রতিনিধিদের দিয়ে চলছিল কার্যক্রম। তবে এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি না থাকায় মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারেনি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পার্বত্য চুক্তি অনুযায়ী স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়ে পৃথক ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও নির্বাচন বিধিমালা তৈরি না হওয়ায় নির্বাচন হচ্ছে না।
পাহাড়ের শাসন পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা, গতিশীলতা ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ১৯৮৯ সালে পাহাড়ি সম্প্রদায় থেকে একজনকে চেয়ারম্যান করে ৩৪ সদস্যের স্থানীয় সরকার পরিষদ গঠন করা হয়। ১৯৮৯ সালের ২৫ জুন পাঁচ বছর মেয়াদের জন্য এসব পরিষদের একবার নির্বাচনও হয়েছিল। এর পর আর হয়নি।

১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের পর স্থানীয় সরকার পরিষদের পরিবর্তে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান নামে পার্বত্য জেলা পরিষদ নামকরণ করে একজন পাহাড়ি ব্যক্তিকে চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্য করে অন্তর্বর্তী পরিষদ গঠন হয়। তবে একই বছরে বান্দরবানের এক পাহাড়ি ব্যক্তি কেন পরিষদগুলোর নির্বাচন হবে না– হাইকোর্টে এর রিট করলে তিন মাসের মধ্যে পরিষদের নির্বাচন অথবা পরিষদের প্রথম নির্বাচিত কমিটির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের রায় হয়। কিন্তু সরকার ওই রায়ের কার্যকারিতার বিরুদ্ধে দফায় দফায় আপিল করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের মেয়াদ বাড়ায়। ফলে যে সরকারই ক্ষমতায় আসে, সেই সরকারেরই মনোনীত দলীয় লোকজন দিয়ে অন্তর্বর্তী পরিষদের কার্যক্রম চলে আসছে। সর্বশেষ ২০১৪ সালে তিন পার্বত্য পরিষদের আইন সংশোধন করে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদকে পুনর্গঠন করে একজন চেয়ারম্যানসহ ১৫ সদস্যের অন্তর্বর্তী পরিষদ গঠন করে সরকার। এতে আওয়ামী লীগ মনোনীত ব্যক্তিদের নিয়ে পরিষদের কার্যক্রম চলছিল।
৫ আগস্টের পর তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের দলীয় মনোনীত চেয়ারম্যান ও সদস্যরা পলাতক। ৩ সেপ্টেম্বর রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অংসুই প্রু চৌধুরী। খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যরা কাগজে-কলমে বহাল রয়েছেন। 
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান বলেন, উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাদে দৈনন্দিন ও দাপ্তরিক কার্যক্রম চালাতে জেলা পরিষদগুলোতে অতিদ্রুত চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগ দেওয়া উচিত। তবে চেয়ারম্যান ও সদস্যদের অবশ্যই নির্দলীয়-নিরপেক্ষ হতে হবে। 

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মোহাম্মদ রিজাউল করিম বলেন, বর্তমানে পরিষদের কাজ সীমিত হয়েছে। আর্থিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রয়েছে। 
পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার একান্ত সচিব (যুগ্ম সচিব) কংকন চাকমা বলেন, দু-একদিনের মধ্যে তিন পার্বত্য জেলায় অন্তর্বর্তী পরিষদ পুনর্গঠন হবে। 

আরও পড়ুন

×