ফেনীতে রিজওয়ানা হাসান
প্রতিবেশীর সঙ্গে সরকারি পর্যায়ে নীরবতার সময় শেষ

ফেনীতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি: সমকাল
সমকাল প্রতিবেদক ও ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২০:৩০
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সময়টা শেষ হয়ে গেছে, সরকারি পর্যায়ে যদি কোনো নীরবতা থেকে থাকত, নিষ্ক্রিয়তা থেকে থাকত, সে দিনটা শেষ হয়ে গেছে। সময়মত বন্যার তথ্য দেওয়ার জন্য ভারতসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অনুরোধ জানানো হবে।
রোববার সকালে ফেনীর পরশুরামের মীর্জানগর ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্তসংলগ্ন নিজ কালিকাপুর এলাকায় সীমান্তের বল্লারমুখ বাঁধ পরিদর্শনের সময় উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
জনগণের এ সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হবে উল্লেখ করে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, নদীর পানি শুধু রাজনীতি নয়, এটা কূটনীতি ও অর্থনীতিও। জনগণের চশমা দিয়ে সমস্যা দেখতে এসেছি। জনগণের কাছে জানতে এসেছি তাঁরা কী সমাধান চান। স্থানীয় জনসাধারণ বলেছেন, প্রতিবেশী দেশ বাঁধ কেটে দেওয়ায় তাঁরা বন্যায় চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
পানিসম্পদ উপদেষ্টা আরও বলেন, প্রতিবেশী দেশের নদীতে কোথায় বাঁধ আছে, কী পরিমাণ পানি হলে তারা পানি ছাড়বে, তা জানানো হলে হয়তো বন্যা ঠেকানো যেত না, কিন্তু ক্ষয়ক্ষতি কমানো যেত। স্থানীয় জনগণের বক্তব্য হলো, প্রতিবেশী দেশ থেকে বাঁধ কেটে দেওয়ায় তাঁদের ক্ষতি হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে বসতে হবে। সে জন্য ক্ষতির পরিমাণ জানা দরকার। ক্ষতির পরিমাণ না জেনে তো চিঠি লেখা যায় না।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করার কাজ এরই মধ্যে প্রায় শেষ। ভুক্তভোগী জনগণের সঙ্গে বসব, তাঁরা কী সমাধান চান, ত্বরিত কিছু করার আছে কি না, মধ্যমেয়াদী কিছু করা যায় কি না, এ বিষয়ে প্রকল্প করতে হবে।
এদিকে ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত ফেনী রেগুলেটর পরিদর্শন শেষে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ভবিষ্যতে বন্যা প্রতিরোধে পরিকল্পিতভাবে প্রয়োজনীয় স্থানে বাঁধ নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও, সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ ও রেগুলেটর মেরামতেও সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। ভবিষ্যতে বাঁধ ভেঙে যাতে বন্যা না হয়, সেজন্য সমীক্ষা এবং আধুনিক পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য সংস্থাগুলো এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে।
পানিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, বিভিন্ন স্থানে অবৈধ এবং নিয়মনীতি বিহীনভাবে বালু উত্তোলনের ফলে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এজন্য বাঁধ রক্ষায় অবৈধ লিজ বাতিল করা হবে। বালু মহালের কারণে বাঁধে ভাঙ্গন সৃষ্টি বালু উত্তোলন বন্ধ করা হবে। তিনি বলেন, নদীর অবৈধ দখলও উচ্ছেদ করা হবে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ বাঁধ রক্ষায় সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
একই দিন সাম্প্রতিক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ একরাম হোসেন কাওসারের মা-বাবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলার পাগলীরকুল গ্রামে তাদের বাড়িতে যান। তিনি এসময় পরিবারের খোঁজখবর নেন এবং গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেন।
বিকেলে তিনি ফেনী জেলা প্রশাসক কার্যালয় একটি গণশুনানিতে অংশ নেন। সেখানে বিভিন্ন শ্রেণির পেশার মানুষ বেড়িবাঁধ ও বন্যাসহ নানা বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন। পানিসম্পদ উপদেষ্টার সঙ্গে ফেনীর জেলা প্রশাসক মুসাম্মৎ শাহীনা আক্তার, পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমানসহ সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
- বিষয় :
- ভারত
- বাঁধ
- পরিবেশ উপদেষ্টা
- রিজওয়ানা হাসান