গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অক্লান্ত যোদ্ধা ছিলেন আতাউস সামাদ
স্মরণসভায় বক্তারা

আতাউস সামাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে আলোচনা সভা
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৮:৩২ | আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৮:৩২
বরেণ্য সাংবাদিক আতাউস সামাদ মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সাংবাদিকতার পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন। শুধু তাই নয়, দেশে স্বৈরাচারের আর্বিভাব ঘটলে তিনি এর বিরুদ্ধে কলম ধরেছেন। গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে তিনি ছিলেন অক্লান্ত যোদ্ধা। তিনি ছিলেন আপাদমস্তক আদর্শিক মানুষ। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আতাউস সামাদের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
আতাউস সামাদ স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন রয়টার্সের আলোকচিত্র সাংবাদিক রফিকুর রহমান। আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, আতাউস সামাদের ভাতিজা ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি এম আবদুল্লাহ, দৈনিক আমার দেশের বার্তা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী, সাংবাদিক নেতা জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বাছির জামাল, সাংবাদিক নেতা মোহাম্মদ মহসিন ও ড. সাদিকুল ইসলাম স্বপন।
শওকত মাহমুদ বলেন, আতাউস সামাদের অন্তর্বোধে একটা আগুন ছিল। হতাশা তো বটেই। তার ‘একালের বয়ান’ বইয়ে কষ্টের উল্লেখটা পরিষ্কার পাওয়া যায়। তিনি লিখেছেন, ‘জীবনের এতটা পথ হাঁটলাম, কিন্তু আলোর দেখা পেলাম না। কবে দেখব দেশকে উদ্ভাসিত আলোয়? সময় তো নিষ্ঠুর, কাউকে রেয়াত করে না।’
তিনি আরও বলেন, আতাউস সামাদ ছিলেন একজন পাবলিক ইন্টেলেকচুয়াল। দেশ ও মানুষ অন্তপ্রাণ। মানুষের অধিকার আর মুক্তির জন্য লেখালেখি এবং কিছু একটা করার তাগিদ সর্বদাই তাঁর মনস্তত্বে ছিল। মৌলিক ও মানবাধিকারের জন্য মিডিয়া ও রাজপথে সমান সক্রিয় ছিলেন।
আতাউস সামাদের অতি ঘনিষ্ঠ শওকত মাহমুদ বলেন, ১৯৭০-এ ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে স্বাধীন বাংলাদেশের স্লোগান দেওয়া, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং যখনই সরকার স্বৈরাচার হয়েছে সাংবাদিকতা এবং দায়িত্ববোধ নিয়ে রুখে দাঁড়ানোর ঘটনাবলিতে তিনি অবিস্মরণীয়। শেখ হাসিনার কুশাসনকালে তাকে পড়তে হয়েছে রোষানলে, এরশাদের আমলে জেল খেটেছেন। তিনি ও বিবিসি একাত্মা হয়ে গিয়েছিল। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দিল্লি থেকে শেখ মুজিবের দেশে ফেরার ফ্লাইটে তিনি একমাত্র সাংবাদিক সহযাত্রী ছিলেন। বাংলাদেশের সব শাসকই এই ‘গোলমেলে’ লোকটাকে সমীহ করতেন ধড়ফড় বুকে।
প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান আক্ষেপ করে বলেন, দেশ স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়। তবে সংবাদপত্র-টেলিভিশন ফ্যাসিবাদমুক্ত হয় না।