ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

‘সুপার সানডের’ পাল্টা ‘ মেগা মানডে’

রক্তারক্তিতে জড়াল তিন কলেজের শিক্ষার্থীরা

ডেমরা-যাত্রাবাড়ী রণক্ষেত্র, লন্ডভন্ড মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ

রক্তারক্তিতে জড়াল তিন কলেজের শিক্ষার্থীরা

আগের ঘটনার জের ধরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা যাত্রাবাড়ী এলাকায় ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা চালায়। সোমবার এ হামলার সময় ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট ও বেধড়ক পেটানোর ঘটনা ঘটে -সাজ্জাদ নয়ন

সমকাল ও জবি প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৪ | ০১:৩০ | আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৪ | ০৮:৩১

একদিকে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ, অন্যদিকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং কবি নজরুল কলেজ। গতকাল সোমবার জোট বেঁধে যেন রক্ত ঝরানোর খেলায় মেতেছিল তিন কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা এলাকা রূপ নেয় রণক্ষেত্রে। দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘাতে শতাধিক শিক্ষার্থীর রক্ত ঝরেছে। তাদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা গুরুতর। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যাত্রাবাড়ী-ডেমরা এলাকায় ছয় প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

গতকাল দুপুর ১২টার দিকে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ডেমরার ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে ঘোষণা দিয়ে হামলা চালায়। এ সময় কলেজটির তিনটি বহুতল ভবনের সবকিছু লন্ডভন্ড করে দেওয়া হয়। ভাঙচুর করা হয় কম্পিউটারসহ মূল্যবান আসবাব। লুটপাট হয়েছে টাকা; তছনছ করা হয়েছে কাগজপত্র। এক পর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল।

মোল্লা কলেজে হামলার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়লে এক ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। দলবদ্ধ হয়ে লাঠিসোটা নিয়ে এক পক্ষ আরেক পক্ষের ওপর হামলে পড়ে। ঘটনাস্থলে গিয়ে পিঠে ব্যাগসহ কলেজের পোশাক পরা বেশ কয়েকজনকে রক্তাক্ত পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এ পরিস্থিতিতে সোহরাওয়ার্দী, কবি নজরুল, ঢাকা কলেজ এবং সেন্ট গ্রেগরি হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। স্থগিত হয়ে গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের মঙ্গলবারের চূড়ান্ত পরীক্ষা।

এদিকে পূর্ববিরোধের জের ধরে মোল্লা কলেজে সোমবার হামলার ঘোষণা দেওয়া হলেও কেন তা প্রতিরোধে প্রশাসন আগেভাগে আরও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি– এমন প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। 
তবে পুলিশ বলছে, এ ঘটনা পরিকল্পিত। সরকারের তরফ থেকে সংঘাতে না জড়িয়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছিল। 

পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ১৮ নভেম্বর মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিৎ হাওলাদারের মৃত্যুর ঘটনার জেরে সংঘাতের শুরু। ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে– এমন অভিযোগ ছিল শিক্ষার্থীদের। তাঁর মৃত্যু ঘিরে ২০ ও ২১ নভেম্বরে হাসপাতাল অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, ওই দিন ন্যাশনাল মেডিকেলের পক্ষ নিয়ে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এর প্রতিবাদে ৩৫ কলেজের শিক্ষার্থীরা এক হয়ে অনলাইনে ‘সুপার সানডে’ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। ওই কর্মসূচি থেকে রোববার ন্যাশনাল মেডিকেল এবং পাশের সোহরাওয়ার্দী কলেজ, তিতুমীর কলেজ ও সেন্ট গ্রেগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে হামলা হয়। ওই হামলা ও লুটপাটের প্রতিবাদে সোমবার ‘মেগা মানডে’ কর্মসূচির ডাক দেয় সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। এর অংশ হিসেবে গতকাল সকাল থেকে সোহরাওয়ার্দী কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকে। পরে তারা মিছিল নিয়ে কবি নজরুল কলেজের সামনে যায়। সেখান থেকে শত শত শিক্ষার্থী একত্রিত হয়ে মোল্লা কলেজে হামলা চালায়।

রণক্ষেত্র যাত্রাবাড়ী-ডেমরা
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা ডেমরায় জড়ো হয়ে মোল্লা কলেজে ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। এ সময় মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনতার সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এক পর্যায়ে পিছু হটে মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষুব্ধ সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা মাইকিং করে মোল্লা কলেজে ভাঙচুর চালায়। কলেজের সব তলা লন্ডভন্ড করা হয়। দুই ঘণ্টা এ তাণ্ডব চলে। দু’পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে বেধড়ক মারধর করা হলে তারা সড়কে লুটিয়ে পড়ে। আর মোল্লা কলেজের সামনের কাচসহ বিভিন্ন অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় অনেকের হাতে লাঠিসোটা, দেশীয় অস্ত্র দেখা যায়। মোল্লা কলেজের ভেতরে সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজের কয়েকজন আটকা পড়ে। পরে তাদের ব্যাপক মারধর করা হয়। দুপুরে অন্তত তিনজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় কলেজের ভেতর থেকে বের করতে দেখা গেছে। সংঘাতের কারণে এক পর্যায়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দেখা দেয় তীব্র যানজট। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সবাইকে সড়ক থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে মাইকিং করেন।

কবি নজরুলের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘রোববার ওরা যেভাবে সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে তাণ্ডব চালিয়েছে, তা কল্পনাতীত। এটা ছিল আমাদের জবাব। আর ক্ষতিপূরণ হিসেবে মোল্লা কলেজ থেকে কম্পিউটার, প্রিন্টার, চেয়ারসহ বিভিন্ন জিনিস নিয়ে আসা হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী কলেজে যে পরিমাণ ক্ষতি করেছে, তার ১০ শতাংশও ক্ষতিপূরণ হয়নি।’ 

সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থী রাকিব হাওলাদার বলেন, ‘এর পরও যদি মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা বাড়াবাড়ি করে, তার পাল্টা জবাব দেওয়া হবে। এ ছাড়া দনিয়া কলেজসহ আশপাশের কলেজের বিরুদ্ধেও অ্যাকশনে যাওয়া হবে।’ 

সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার পর মোল্লা কলেজের মধ্যে আটকা পড়া কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বাইরে বের করে নিয়ে এসে বেদম মারধর করে মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরে তাদের মৃত্যুর খবর ছড়ালে আতঙ্ক দেখা দেয়। সর্বশেষ মোল্লা কলেজের পক্ষ থেকে মৃত্যুর বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে দাবি করা হয়। 

ডেমরার স্থানীয় বাসিন্দা আতিক ইসলাম বলেন, দুপুর ১২টার পর থেকে হাজার হাজার শিক্ষার্থী স্লোগান দিতে দিতে এলাকায় আসে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ ছিলেন না। দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা ঘণ্টাখানেক তাণ্ডব চালায়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। আতঙ্কে আশপাশের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়।

মোল্লা কলেজের অধ্যক্ষ ওবায়দুল্লাহ নয়ন বলেন, কবি নজরুল, সোহরাওয়ার্দীসহ কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীদের হামলায় প্রতিষ্ঠানের ৭০ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। ভবনের কোনো কাচ আর অক্ষত নেই। পাঁচটি লিফট, কম্পিউটার ও সায়েন্স ল্যাব ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। হামলাকারীরা টাকা, শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় নথি, সনদ, তিন শতাধিক ফ্যান, ৩০টির মতো ল্যাপটপ, অসংখ্য কম্পিউটারসহ মূল্যবান ও প্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিস লুট করেছে। তিনি বলেন, হামলার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা দূরে থেকে পরিস্থিতি দেখেছেন; কোনো ব্যবস্থা নেননি।

মোল্লা কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফ সামীর বলেন, আমাদের ১ থেকে ১২ তলা পর্যন্ত সব ধ্বংস করে দিয়েছে; আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। এমন হামলার শঙ্কায় গতকাল রাত থেকে আমাদের চেয়ারম্যান প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে। প্রশাসন সহযোগিতা করলে আজ এমন হতো না। হামলায় আমাদের কলেজেরই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। 

এর আগে গতকাল সকালে সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে প্রথমে ক্যাম্পাসে জড়ো হয়। এর পর তারা কবি নজরুল কলেজে যায়। এ সময় মাইকে নজরুল কলেজের অধ্যক্ষ শান্ত থাকার আহ্বান জানালে দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকে। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ডেমরা সড়ক-সংলগ্ন মোল্লা কলেজে হামলা চালায়। 

পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার ছালেহউদ্দিন বলেন, সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে ছাত্রবেশে হামলা চালিয়ে লুটপাট করেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি করতেই এ হামলা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে; মামলা হবে। 

তিনি বলেন, ২০-২৫ হাজার শিক্ষার্থী যাত্রাবাড়ী মোড় হয়ে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলার জন্য আসে। আমরা পেছনে পেছনে এসে তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছি। সকাল থেকে যাত্রাবাড়ী মোড়ে পুলিশ প্রস্তুত ছিল। এপিসি রাখা হয়। এর পর হাজার হাজার ছাত্র ব্যারিকেড ভেঙে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে ভাঙচুর করেছে।

পুলিশ বলছে, ৩৫ কলেজের শিক্ষার্থীর সমন্বয়ে ইউনাইটেড কলেজ অব বাংলাদেশ (ইউসিবি) নামে একটি ফোরাম গঠিত হয়। অন্যদিকে ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা কলেজ, মিরপুর বাঙলা কলেজ ও সরকারি কবি নজরুল কলেজ মিলে ছাত্রছাত্রীদের একটি জোট রয়েছে। কয়েক দিন ধরে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিতের মৃত্যু ঘিরে ৩৫ কলেজের ফোরাম ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। 

লন্ডভন্ড মোল্লা কলেজ
কলেজের নিচতলায় ৯টি শ্রেণিকক্ষ। প্রতি শ্রেণিকক্ষে ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে রয়েছে টেবিল, চেয়ার, ব্ল্যাকবোর্ড। বাঁকা করে ফেলা হয়েছে ফ্যানের পাখা। ভাঙা পড়ে থাকতে দেখা গেছে সিসি ক্যামেরা। নিচতলার লাইব্রেরির বই পড়ে আছে ছেঁড়াফাটা অবস্থায়। বুকশেলফগুলো এলোমেলো। এ ছাড়া নিচতলায় থাকা কন্ট্রোল রুম, ক্যাশ কাউন্টার, ফ্রন্ট ডেস্ক ও অফিস রুমও তছনছ। দ্বিতীয় তলার বিভিন্ন অফিস রুম, স্টোর রুমের পাশাপাশি কলেজের অধ্যক্ষ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের রুম রয়েছে। সবক’টিই ভাঙচুর করা হয়েছে। সেখানেও কাগজপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। প্রতিটি লিফটের বাটন ভাঙা। নিচতলা ও দ্বিতীয় তলার কম্পিউটার থেকে শুরু করে দামি জিনিসপত্র সবকিছুই লুটপাট করা হয়েছে।

আহত যারা 
যাত্রাবাড়ী ও ডেমরায় সংঘাতে আহত ৪০ শিক্ষার্থী ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যায়। এর মধ্যে ১০ জনের অবস্থা গুরুতর। আহত ৩০ জনকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সংঘাতে আহতদের মধ্যে আছেন সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাজীব, শাহেদুল, কবি নজরুল কলেজের অনুপম দাস, রানা, সুমন, মারুফ, হাসিনুর, আরাফাত, হুমায়ুন, রুমান, নাইম, সিয়াম, মোল্লা সোহাগ, রাজিম, শরিফুল, জাহিদ, মোস্তফা, রাতুল, শফিকুল ইসলাম, মেহেদী হাসান, সজীব বেপারি, ফয়সাল, সাগর, ইমন ও সিয়াম। যাত্রাবাড়ী ও মাতুয়াইলের স্থানীয় ক্লিনিকে অন্তত ৩৩ জন চিকিৎসা নিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। আহতদের একজন মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী মিহাদ নাফির খালু মোহাম্মদ সাঈদ বলেন, সকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মারামারির খবর শুনে বাসা থেকে বের হয় নাফি। এর একটু পর গুরুতর জখম হয়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে ডেমরার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। 

আট হাজার শিক্ষার্থীর নামে মামলা 
ভাঙচুর ও গুলিভর্তি ম্যাগাজিন চুরির অভিযোগে বিভিন্ন কলেজের আট হাজার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সূত্রাপুর থানায় মামলা করেছে পুলিশ। রোববার উপপরিদর্শক একেএম হাসান মাহমুদুল কবীর বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, রোববার ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজসহ বিভিন্ন কলেজের সাত থেকে আট হাজার শিক্ষার্থী অস্ত্রশস্ত্রসহ দাঙ্গা সৃষ্টি করে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করে। সরকারি অস্ত্রের (পিস্তল) গুলিভর্তি ম্যাগাজিন চুরি, সরকারি ডিউটিতে ব্যবহৃত সাঁজোয়া যান বা এপিসি (আর্মার পার্সোনাল ক্যারিয়ার) ভাঙচুর করে ক্ষতিসাধন করে। কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের ওপর আক্রমণ, জীবননাশের হুমকি এবং ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করে। এ ছাড়া পুলিশের এপিসি ও ডিউটিরত পুলিশের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করায় ২ লাখ ৭০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

আরও পড়ুন

×