দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার অঙ্গীকার প্রতিফলিত

.
সমকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ২৩:৪৯
বাংলাদেশের সঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার অভিন্ন অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, করাচি ও চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি নৌযান চলাচলকে স্বাগত জানিয়েছে দু’পক্ষ। আকাশপথে সরাসরি যোগাযোগ চালুর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে। ভ্রমণ ও ভিসা সহজ করতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত বৈঠকের বিষয়ে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব কথা বলেছে। গতকাল শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এটি প্রকাশ করা হয়েছে।
পাকিস্তান বলেছে, ‘১৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হলো পাকিস্তান ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের ষষ্ঠ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। ঢাকায় সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন বৈঠকে নেতৃত্ব দেন।’
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বৈঠকে উভয় দেশ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষাগত ও কৌশলগত সহযোগিতার বিষয়ে মতবিনিময় করেছে। পাশাপাশি দুই দেশের অভিন্ন ইতিহাস, সাংস্কৃতিক বন্ধন
এবং জনগণের অভিন্ন আকাঙ্ক্ষার ওপর জোর দেওয়া হয়।
নিউইয়র্ক, কায়রো, সামোয়া ও জেদ্দায় সম্প্রতি দু’পক্ষের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। ওই সব যোগাযোগ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে সহায়তা করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, উভয় দেশ দ্বিপক্ষীয় চুক্তিগুলো দ্রুত চূড়ান্তকরণ, নিয়মিত প্রাতিষ্ঠানিক সংলাপ এবং বাণিজ্য, কৃষি, শিক্ষা ও সংযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান। অন্যদিকে, মৎস্য ও সামুদ্রিক বিষয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তির প্রস্তাবে বাংলাদেশ কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছে এবং শিক্ষা খাতে আরও গভীর সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।
ক্রীড়া, গণমাধ্যম ও সংস্কৃতিতে বড় পরিসরে সহায়তায় বিভিন্ন সমঝোতা স্মারক নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বৈঠকে উভয় দেশ সার্কের কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করার পক্ষে মত দিয়েছে। এ সময় কাশ্মীর ইস্যুতে জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুসারে শান্তিপূর্ণ সমাধানের ওপর জোর দিয়েছে পাকিস্তান। এ ছাড়া বৈঠকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও সেখানে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাঁর সঙ্গে বৈঠকে আঞ্চলিক সম্পৃক্ততা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে বাহ্যিক চাপমুক্ত রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। শিগগির পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুহাম্মদ ইসহাক দারের বাংলাদেশ সফরের প্রত্যাশার কথা জানানো হয়। দুই দেশের মধ্যে পরবর্তী বৈঠক ২০২৬ সালে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।
- বিষয় :
- সম্পর্ক