নারীর ডাকে মৈত্রীযাত্রা
গুজব-ধর্মীয় উসকানির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিন

‘নারীর ডাকে মৈত্রীযাত্রা’ কর্মসূচি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৫ | ১৯:৪৫
‘নারীর ডাকে মৈত্রীযাত্রা’ কর্মসূচি থেকে নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা নিশ্চিত এবং গুজব ও ধর্মীয় উসকানির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে কর্মসূচিতে পাঠ করা ঘোষণাপত্রে এই দাবি জানানো হয়। ঘোষণাপত্রটি পাঠ করেন জুলাই শহীদ পরিবারের তিন নারী সদস্য। তারা হলেন- জুলাই আন্দোলনে শহীদ মামুন মিয়ার স্ত্রী শারমিন আক্তার, শহীদ সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়র মা শামসী আরা জামান এবং জয়ন্তী চাকমা।
ঘোষণাপত্রে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারকে তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করতে হবে, বিশেষত নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সহিংসতার হুমকি, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ঘিরে গুজব ও অপপ্রচার এবং ধর্মীয় মূল্যবোধকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে আতঙ্ক সৃষ্টির বিরুদ্ধে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, যারা আমাদের সমর্থন চায় তাদের নির্বাচনী অঙ্গীকারের মাধ্যমে হোক বা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে হোক, তাদের স্পষ্ট করতে হবে নারী, শ্রমিক, জাতিগত, ধর্মীয়, ভাষাগত ও লৈঙ্গিক সংখ্যালঘুদের অধিকার এবং এসব জনগোষ্ঠীর পূর্ণ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ব্যক্তিগত মুক্তির বিষয়ে তাদের অবস্থান। বিশেষ করে আসন্ন নির্বাচন থেকে তাদের প্রার্থীদের অন্তত শতকরা ৩৩ ভাগ (ক্রমে জনসংখ্যার অনুপাতে) নারী হতে হবে। নারী ও প্রান্তিক জনগণের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে অন্তর্বর্তী সরকারকে আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
ঘোষণাপত্রে বলা হয়, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা ও বৈষম্য চালিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা তাঁরা মেনে নেবেন না। তাঁদের মৌলিক অধিকারগুলোকে অস্বীকার করার ষড়যন্ত্র তারা প্রতিরোধ করবেন। তাঁরা বলেন, বিশৃঙ্খলা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা, সংস্কৃতি ও ধর্মকে দমনমূলক অস্ত্রে পরিণত করার চেষ্টা প্রতিরোধ করা হবে।
ইতিহাসবিচ্ছিন্ন কূপমণ্ডূকতার মাধ্যমে সহিংসতা ও বৈষম্য চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকে কিছুতেই সফল হতে দেওয়া হবে না উল্লেখ করে ঘোষণাপত্রে বলা হয়, আমাদের সংস্কৃতি, ধর্ম ও ইতিহাস দারুণ বৈচিত্র্যময় ও সংবেদনশীল। সেই বিশালতাকে উপেক্ষা করে আমরা গুটিকয়েক মানুষের সংকীর্ণ ব্যাখ্যাকে সর্বজনীন হতে দেব না। আমরা অধিকার ও ধর্মের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি করতে দেব না, মর্যাদা নিয়ে কোনো ধরনের দ্ব্যর্থকতা মেনে নেব না। আমরা সরকার ও প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নারী বিষয়ক অবস্থান নজরদারিতে রাখব। যে ক্ষমতাকাঠামো এসব জুলুমবাজি জিইয়ে রাখে, আমরা সেই কাঠামোকে ভাঙব।
ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশের স্বপ্ন ও তা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নারীরা হাল ছাড়বেন না বলে ঘোষণাপত্রে বলা হয়।