ছাত্র জোটের সমাবেশে হামলা ভিন্নমত দমনের ফ্যাসিবাদী আক্রমণ

চট্টগ্রাম নগরীর প্রেস ক্লাব চত্বরে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমাবেশে হামলাকে ভিন্নমত ও চিন্তা দমনের লক্ষ্যে ফ্যাসিবাদী আক্রমণ হিসেবে অভিহিত করেছেন ৩২ নাগরিক। গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন তারা।

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন– লেখিকা ফেরদৌস আরা আলীম, মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজুর রহমান, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অনুবাদক জি এইচ হাবীব, আর রাজী, সায়মা আলম, মুনমুন নেছা, জিহান করিম, সাংবাদিক ও লেখক আহমেদ মুনির, কবি ঋষিণ দস্তিদার, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক ইন্দ্রানী ভট্টাচার্য, স্বপ্ননগর বিদ্যানিকেতনের সমন্বয়কারী ধ্রুব জ্যোতি হোড়, কবি ও লেখক সৈকত দে, নিপীড়নবিরোধী আইনজীবী মঞ্চের আহ্বায়ক ভুলন ভৌমিক, শিক্ষক জুলেখা আক্তার, গবেষক ঈশিতা দস্তিদারসহ ৩২ জন।

বিশিষ্ট নাগরিকরা বলেন, আমরা জেনেছি, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত এ টি এম আজহারুল ইসলামকে খালাস দেওয়ার ত্রুটিপূর্ণ বিচারিক প্রক্রিয়া নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট সমাবেশের আয়োজন করেছিল। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর যদি এটিকে সঠিক মনে না হয়, তবে তাদের আলাদাভাবে প্রতিবাদ জানানোর সুযোগ ছিল। তার পরিবর্তে শাহবাগবিরোধী ঐক্য নামে উচ্ছৃঙ্খল মব সৃষ্টি করে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

তারা আরও বলেন, সমাবেশে শাহবাগবিরোধী ঐক্য নামে মব সৃষ্টি করে হামলায় ১৮ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজন গুরুতর আহত। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ভয়মুক্ত পরিবেশে স্বাধীন মতপ্রকাশের চর্চা এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিনির্মাণের যে আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত হয়েছে, তা নস্যাতেই পরিকল্পিত ও কাপুরুষোচিত ফ্যাসিবাদী এ আক্রমণ করা হয়েছে।

গত বুধবার নগরের জামালখানের চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় ছাত্র জোটের ব্যানার কেড়ে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়। ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’–এর ব্যানারে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা এ হামলা চালায় বলে দাবি ছাত্রজোটের।

ইতোমধ্যে হামলার ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, এক নারীসহ দু’জনকে পেছন থেকে লাথি মারছেন এক যুবক। যিনি লাথি মেরেছেন, তার নাম আকাশ চৌধুরী। বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়।

বৃহস্পতিবার মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বামপন্থি ছাত্র সংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট অভিযোগ করে, হামলায়  ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা জড়িত। তবে তা অস্বীকার করেছে ছাত্রশিবির।