ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

উদ্ভাবন

এলো নতুন ৩ জাতের ধান

এলো নতুন ৩ জাতের ধান

নতুন জাতগুলোর মধ্যে ব্রি ধান-১১২ মাঝারি মেয়াদি রোপা আমনের জাত। লবণাক্ত জমির জন্য এটি উপযোগী। ছবি: সমকাল

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫ | ০৬:২৮

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত লবণাক্ততা সহনশীল, উচ্চফলনশীল বোরো ও ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী– এমন তিনটি নতুন ধানের জাতের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় বীজ বোর্ড (এনএসবি)। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এনএসবির ১৪৪তম সভায় এসব জাতের অনুমোদন দেওয়া হয় বলে গতকাল ব্রির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

ব্রি জানায়, নতুন উদ্ভাবিত তিন জাতসহ সংস্থাটি এখন পর্যন্ত মোট ১২১টি ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে, যার মধ্যে ৮টি হাইব্রিড জাত।

নতুন জাতগুলোর মধ্যে ব্রি ধান-১১২ একটি মাঝারি মেয়াদি রোপা আমনের জাত, যা লবণাক্ত জমির জন্য উপযোগী। চারা অবস্থায় এটি ১২ ডিএস/মি. পর্যন্ত লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে। এ জাতের জীবনকাল ১২০-১২৫ দিন এবং গড় উচ্চতা ১০৩-১০৫ সেন্টিমিটার। প্রতি হেক্টরে ফলন ৪.১৪ থেকে ৬.১২ টন, যা এর মাতৃজাত ব্রি ধান-৭৩ এর তুলনায় ১-১.৫ টন বেশি। প্রতি শীষে গড়ে ২১০টি পূর্ণ দানা থাকে, যা ব্রি ধান-৭৩ এর তুলনায় ৮০-৯০টি বেশি। চাল মাঝারি চিকন, সাদা এবং রান্নার পর ভাত ঝরঝরে হয়। ফসল কাটার পর উপকূলীয় এলাকায় সূর্যমুখী ও লবণ সহনশীল সরিষা চাষের সুযোগ তৈরি হয় বলে জানান গবেষকরা।

ব্রি ধান-১১৩ জাতটি বোরো মৌসুমের জন্য উদ্ভাবিত এবং জনপ্রিয় জাত ব্রি ধান-২৯ এর বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। জাতটির জীবনকাল গড়ে ১৪৩ দিন, গাছের উচ্চতা ১০২-১০৫ সেন্টিমিটার। চাল মাঝারি চিকন ও সাদা, অনেকটা নাজিরশাইল ধানের মতো দেখতে। ১০০০টি দানার গড় ওজন ১৯.৪ গ্রাম। এতে প্রোটিনের পরিমাণ ৮.৪ শতাংশ। প্রস্তাবিত ফলন পরীক্ষায় এ জাতটি ব্রি ধান-৮৮ এর তুলনায় ১১.৫ শতাংশ বেশি ফলন দিয়েছে। গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ৮.১৫ টন হলেও উন্নত ব্যবস্থাপনায় তা ১০.১ টন পর্যন্ত হতে পারে।

তৃতীয় জাতটি ব্রি ধান-১১৪, যা ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী এবং দীর্ঘ জীবনকালীন বোরো জাত। গড় জীবনকাল ১৪৯ দিন। গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ৭.৭৬ টন হলেও উপযুক্ত পরিচর্যায় তা ১০.২৩ টন পর্যন্ত যেতে পারে। চাল মাঝারি মোটা ও সোনালি বর্ণের। ১০০০টি ধানের ওজন ১৭.৪ গ্রাম এবং রান্নার পর ভাত ঝরঝরে হয়। ব্রি জানায়, ব্লাস্ট রোগের কারণে যেসব এলাকায় ধানের ফলন কমছে, সেসব এলাকায় এই জাতটি চাষ করে কৃষকরা উপকৃত হবেন।

ব্রি’র মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান বলেন, আমাদের লক্ষ্য পরিবেশ ও চাষোপযোগী অঞ্চলভেদে জাত উদ্ভাবন। যাতে কৃষকের আয় বাড়ে এবং খাদ্য নিরাপত্তা আরও শক্ত হয়। নতুন এ জাতগুলোর মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন, লবণাক্ততা ও রোগবালাই মোকাবিলায় কৃষকের সক্ষমতা আরও বাড়বে।

আরও পড়ুন

×