ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

গণঅভ্যুত্থান

অদম্য ইচ্ছায় ঘুরে দাঁড়ানোর সংগ্রাম

অদম্য ইচ্ছায় ঘুরে  দাঁড়ানোর সংগ্রাম

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পা হারিয়েছেন তারা। তবে অদম্য ইচ্ছা শক্তিতে কৃত্রিম পায়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন রাইমুল ও আকাশরা - সংগৃহীত

 সাজিদা ইসলাম পারুল

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৫ | ০১:৩৪

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অংশ নিয়ে গত বছরের জুলাই-আগস্টে অঙ্গ হারিয়েছেন অনেকে। কেই হাত, কেউ পা, কেউ হারিয়েছেন চোখের জ্যোতি। তবে সংগ্রামী মানুষগুলোর কেউই হারাননি মনোবল। অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও সাহস নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তারা। এই লড়াইয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে ব্র্যাক লিম্ব অ্যান্ড ব্রেইস সেন্টার (বিএলবিসি)।
প্রতিষ্ঠানটির তত্ত্বাবধানে এরই মধ্যে জুলাই আন্দোলনে আহত ৩১ জনের কৃত্রিম পা ও তিনজনের কৃত্রিম হাত সংযোজন করা হয়েছে। অত্যাধুনিক এসব হাত-পা দিয়ে অনেকটা স্বাভাবিকভাবে কাজ করা সম্ভব। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাবর রোডে বিএলবিসি সেন্টারে কথা হয় এমনই কয়েকজন জুলাই-আগস্ট যোদ্ধার সঙ্গে।

তাদের মধ্যে মোহাম্মদ আকাশ (১৯) জানান, তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের মদন উপজেলার বিয়াশি গ্রামে। কৃষক বাবার সংসারে সাত ভাইবোনের মধ্যে তিনিই সবার বড়। অভাবের কারণে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েই নেমে পড়তে হয় কাজে। গত বছর ছাত্র আন্দোলনের সময় নারায়ণগঞ্জের চিটাগং রোডে সুইট ভান্ডারে বিক্রয়কর্মী ছিলেন। গত ২০ জুলাই পুলিশের গুলিতে বাঁ পা হারান তিনি। 
অথচ গত বছরই আকাশের সৌদি আরবে পাড়ি দেওয়ার কথা ছিল। তিনি বলেন, পাসপোর্ট করা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ভিসার জন্য জমানো দুই লাখ টাকা দিয়েই শেষ পর্যন্ত আমার চিকিৎসা করতে হয়েছে। তবে আফসোস নেই তাঁর। দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, ‘দেশের জন্য এক পা হারিয়েছি। প্রয়োজনে আরেক পা দেব।’ 

সতেরো বছরের রিফাত হাওলাদারের ধ্যান-জ্ঞান ছিল ফুটবল। রাজধানীর মেরুল বাড্ডা এলাকায় গুলিতে পা হারিয়ে তার ফুটবলার হওয়া স্বপ্ন নিমেষে শেষ হয়ে যায়। এখন আধুনিক কৃত্রিম পা সংযোজনের পর আবারওমাঠে নামার স্বপ্ন দেখছে। রিফাত বলে, আবার মাঠে ফুটবল খেলার যে স্বপ্ন আমি ভুলে যেতে বসেছিলাম, এখন মনে হচ্ছে আমি পারব। তাই এসএসসি পরীক্ষা শেষ হলে ফুটবল টিমে যোগ দেব। 
ব্র্যাকের হেলথ প্রোগ্রামের প্রধান ডা. শাহীনুল হক রিপন এ বিষয়ে বলেন, আন্দোলনের প্রথম দিন থেকেই আহতদের তালিকা করে সহযোগিতা করা হচ্ছে। তাদের দেওয়া কৃত্রিম হাত-পাগুলো অত্যাধুনিক। আর্টিফিশিয়াল হলেও হাতের কাজ ৬২ থেকে ৭০ শতাংশ কাভার করতে পারবে। একেকটি ডিভাইসে খরচ হয়েছে সাড়ে আট লাখ টাকা। এ ছাড়া প্যারালাইজড ৬১ জনকে ব্রেস দেওয়া হয়েছে। ফিজিওথেরাপি, কয়েক ধাপে অস্ত্রোপচার, সাইকো-সোশ্যাল কাউন্সেলিংও করা হচ্ছে। 

আরও পড়ুন

×