মাধ্যমিক শিক্ষকদের দিয়ে নেওয়া হবে সমাপনী পরীক্ষা!

সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০১৯ | ১০:০৬
প্রাথমিক শিক্ষকদের বর্জনের হুমকির কারণে বিকল্প পন্থায় এ বছরের 'প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী' (পিইসি) ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী (ইইসি) পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে প্রাথমিকের শিক্ষকদের পরিবর্তে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের পরীক্ষার হলে দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এজন্য তালিকাও তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায়। আর ১০ দিন পর আগামী ১৭ নভেম্বর সারাদেশে এই পরীক্ষা শুরু হবে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরে প্রধান শিক্ষকদের বেতন জাতীয় স্কেলের দশম এবং সহকারী শিক্ষকদের একাদশ গ্রেডের দাবিতে শিক্ষক আন্দোলন চলছে। দাবি আদায়ে আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত সরকারকে আলটিমেটাম দিয়ে রেখেছেন তারা। পাশাপাশি ঘোষণা দিয়েছেন, এ সময়ের মধ্যে দাবি পূরণের ব্যবস্থা না হলে সমাপনী পরীক্ষা বর্জন করবেন তারা। এ অবস্থায় বিকল্প পন্থায় পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রকাশ করল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)।
ডিপিইর পরিচালক (প্রশাসন) মো. সাবের হোসেন স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়, আগামী ১৭ নভেম্বর সমাপনী ও ইবতেদায়ি পরীক্ষা সারাদেশে একযোগে অনুষ্ঠিত হবে। এবার ৭ হাজার ৪৫৮টি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩ হাজার ৯৩১টি ও ৩ হাজার ৫২৭টি মাদ্রাসায় কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ডিপিই থেকে সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে কেন্দ্র নির্বাচন কাজ শেষ হলেও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পরীক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে যেসব পরীক্ষাকেন্দ্রে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কেন্দ্র সচিব অথবা ইনভিজিলেটর হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত, সেসব পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রয়োজনে মাধ্যমিক বিদ্যালয় অথবা মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক বা সুপারিনটেনডেন্ট এবং সহকারী শিক্ষকদের দায়িত্ব প্রদান করে পরীক্ষা কার্যক্রম সম্পন্নের বিকল্প প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।
জানা গেছে, ডিপিইর উল্ল্লিখিত নির্দেশনার পর ইতোমধ্যে মাঠপর্যায়ে পরীক্ষা গ্রহণের বিকল্প পন্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বরিশাল অঞ্চলের এক থানা শিক্ষা কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, হাইস্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের সমন্বয়ে আমরা পরিদর্শকসহ অন্যান্য তালিকা তৈরি করে ফেলেছি। এমনকি পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। পরীক্ষা গ্রহণ ও ফল প্রকাশে কোনো সমস্যা হবে না। প্রয়োজনে বার্ষিক পরীক্ষাও আমরা বিকল্প পন্থায় নিতে পারব। তবে মাঠপর্যায়ের সাধারণ শিক্ষকদের মনোভাব দেখে মনে হচ্ছে, তারা পরীক্ষা বর্জন করবেন না।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আন্দোলনে ডাক দেওয়া সংগঠন 'বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদ'-এর প্রধান মুখপাত্র বদরুল আলম সমকালকে বলেন, 'পরীক্ষা গ্রহণে বিকল্প পন্থা গ্রহণে ডিপিই কোনো চিঠি জারি করেছে কি-না আমাদের জানা নেই। আমরা আমাদের দাবি ও আলটিমেটামে এখনও অনড় আছি। আন্দোলন-কর্মসূচির ব্যাপারে পরবর্তী কৌশল নির্ধারণে আমরা দু-একদিনের মধ্যে আলোচনায় বসব।'