অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার চিন্তার বিষয়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ফাইল ছবি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০১৯ | ০৯:৫৪
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে সংসদকে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বৃহস্পতিবার সংসদের বৈঠকে তার পক্ষে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বক্তব্য দেন। এর আগে বিকেল সোয়া ৪টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।
বিএনপি দলীয় সদস্য রুমিন ফারহানার এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, 'চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে অনেক রোগীর অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স তৈরি হচ্ছে। পরে সেই রোগীর আর কোনো অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না। ফলে ওই রোগী এক সময় মারা যান। আমরা এ ধরনের ব্যবসায়ীদের একটি নির্দেশনা দেব, যাতে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি না করা হয়।'
সামিল উদ্দিন আহমদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, 'নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রির অপরাধে এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালত ৯৯০টি মামলা দায়ের করেছে। অপরাধে জড়িত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে তিন কোটি ২৩ লাখ টাকা জরিমানা আদায়, ২৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ২৯টি প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হয়েছে।' প্রতিমন্ত্রী জানান, ওষুধের অনিয়ম প্রতিরোধে কঠোর শাস্তির বিধান রেখে ওষুধ আইনকে যুগোপযোগী করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।
আফজাল হোসেনের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'তৃণমূলে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর অংশ হিসেবে বর্তমানে সারাদেশে ১৩ হাজার ৭৪৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু আছে।' জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু ও গণফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর প্রশ্ন করতে গিয়ে অভিযোগ করেন, উপজেলায় চিকিৎসকদের ২৬টি পদ থাকলেও কর্মরত থাকেন মাত্র ৩ থেকে ৫ জন। তারাও আবার জেলা ও ঢাকায় প্রেষণে থাকেন।
জবাবে প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, 'আমাদের চিকিৎসকের সংকট আছে। সরকার একটি নির্দেশনা জারি করেছে যে, নতুন নিয়োগ পাওয়া চিকিৎসকদের বাধ্যতামূলকভাবে দু'বছর উপজেলায় সেবা দিতে হবে।'
বিএনপির গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, 'দেশে গত ৫ নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৯৭ হাজার ৯ জন। এতে মারা গেছেন ১২২ জন।'
আবদুল লতিফের অপর এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'শিশুদের চিকিৎসা সেবা বাড়ানোর জন্য বিভাগীয় শহরে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট শিশু হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা সরকারের আছে। এর মধ্যে একটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।'
এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, 'নৌযান নিবন্ধনের জন্য নিবন্ধকের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আগে মাত্র চারজন নিবন্ধকের মাধ্যমে নিবন্ধন করা হতো। এই সংখ্যা বাড়িয়ে ভৈরব ও চট্টগ্রামে অফিস খোলা হয়েছে। রাজশাহী, চাঁদপুর, কপবাজার, পটুয়াখালী, ভোলা, রাঙামাটি ও সুনামগঞ্জে নিবন্ধন অফিস স্থাপনের কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে।'
নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশে ১৯৭৬ সাল থেকে নৌ দুর্ঘটনার তথ্যরেকর্ড করা হচ্ছে। সেই থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫৭টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে মারা গেছেন ৪ হাজার ৭১১ জন। আহত ও নিখোঁজের সংখ্যা যথাক্রমে ৫৩৯ ও ৪৮২ জন।
নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রশ্নের জবাবে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশের ছোট-বড় নদীগুলো খনন করে নাব্য ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার একটি ড্রেজিং মাস্টার প্ল্যান তৈরি করেছে। এর আওতায় ১৭৮টি নদী খনন করে ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ নাব্য করা হবে।