ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

শস্যে শস্যে বঙ্গবন্ধুর ছবি, হবে গিনেজ বুক রেকর্ড

শস্যে শস্যে বঙ্গবন্ধুর ছবি, হবে গিনেজ বুক রেকর্ড

ছবি: সমকাল

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২১ | ১০:৪০ | আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২১ | ১১:০৪

কৃষিজমিকে ক্যানভাস হিসেবে ব্যবহার করে নানা প্রজাতির ফসলের সুপরিকল্পিত ও শৈল্পিক চাষের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে আঁকার উদ্যোগ নিয়েছে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদ। শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু কার্যক্রমের উদ্বোধন হবে শুক্রবার দুপুর ১২টায় বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বালেন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইন্সিটিটিউশন মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের আহ্বায়ক ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলি, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শহীদুর রশীদ ভুইঞা, কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ, কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশনের মহাসচিব খায়রুল আলম প্রিন্স প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১০০ বিঘা জমির ওপর নির্মিত ভিন্নরকম এই চিত্রকর্মের উদ্দেশ্য গিনেজ বুক রেকর্ড করা। গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এর তথ্য অনুযায়ী, সর্ববৃহৎ শস্যচিত্র ২০১৯ সালে চীনে তৈরি করা হয়, যার আয়তন ছিল ৮ লাখ ৫৫ হাজার ৭৮৬ বর্গফুট। বাংলাদেশের শস্যচিত্রের আয়তন হবে প্রায় ১২ লাখ ৯২ হাজার বর্গফুট বা ১ লাখ ২০ হাজার বর্গমিটার। শস্যচিত্রটির দৈর্ঘ্য ৪০০ মিটার ও প্রস্থ ৩০০ মিটার।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বিশ্বের সর্ববৃহৎ শস্যচিত্র হিসেবে নতুন রেকর্ড গড়ার জন্য গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ফি পরিশোধ করেছে। গিনেজ বুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে নিয়মিত আলোচনা চলছে। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে 'শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু'-এর ভিডিওসহ প্রয়োজনীয় দলিল গিনেজ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। ১৭ মার্চে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে নতুন এই বিশ্বরেকর্ড অর্জন উদযাপন করা হবে বলে আয়োজকদের বিশ্বাস।

তারা জানান, সৃষ্ট চিত্রকর্মকে বলা হয় ক্রপ ফিক মোজাইক বা শস্যচিত্র। এসব চিত্রকর্ম এতোই বড় হতে পারে যে, সেগুলো স্যাটেলাইট থেকেও দেখা যায়। ব্যাপক প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা থাকা সত্ত্বেও করোনা দুর্যোগের কারণে তারা যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করতে পারেননি জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী। তাই কৃষি প্রধান সবুজ বাংলার বিশাল ক্যানভাসকে ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো তারা আঁকতে যাচ্ছে একটি নতুন ধরনের চিত্রকর্ম যা আবারও বিশ্ববাসীর সামনে মাটি ও মানুষের তথা কৃষি ও কৃষক দরদী বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরবে।

অঙ্কনের পরিকল্পনার বিষয়ে আয়োজকরা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন লড়াই করেছেন মানুষের ভাত-কাপড়ের অধিকার ও কৃষকের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। সোনালী ও বেগুনি এই দুই রংয়ের ধান ব্যবহার করে আঁকা হবে জাতির পিতার এক বিশাল পোট্রেট, ইতিমধ্যে তারা যার ফিল্ড ট্রায়াল সম্পন্ন করেছেন। ফিল্ড ট্রায়ালে বিভিন্ন উচ্চতা ও অ্যাঙ্গেল থেকে বিশেষ পদ্ধতিতে সংগৃহীত ছবি বিশ্লেষণ করে ডিজাইন তৈরি করা হয়েছে। জমি তৈরি করা হয়েছে চারা রোপনের জন্য। এরই মধ্যে বীজতলায় চারা রোপন উপযোগী হয়ে উঠেছে।

বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের আহ্বায়ক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, গত বছরের মাকামাঝি থেকে এ আয়োজনের পরিকল্পনা শুরু হলেও ধান বপন ও চারা রোপনের নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। ১০০ বিএনসিসি ক্যাডেটকে সঙ্গে নিয়ে লেআউট তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। ২৯ জানুয়ারি সেই লেআউট বা নকশা অনুযায়ী ধানের চারা রোপন শুরু হবে। চারা থেকে হবে গাছ, ধান হবে; আর প্রতিটি ধাপেই তৈরি হবে জাতির পিতার একেক ধরনের পোট্রেট। এ কার্যক্রমে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রুপ। মিডিয়া পার্টনার হিসেবে রয়েছে চ্যানেল টোয়েন্টিফোর। জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এমন উদ্যোগের জন্য ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমানকে ধন্যবাদ জানান আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

আরও পড়ুন

×