অর্থ পাচারে যাবজ্জীবন সাজা চান হাইকোর্ট

সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | ১০:৩৭
অর্থ পাচারের মামলার বিচারে বিদ্যমান আইনে সাজা কম থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, আইনে (মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২) সাজার পরিমাণ অনেক কম। এ ধরনের গুরুতর অপরাধের মামলার বিচারের জন্য আইনে যাবজ্জীবন সাজার বিধান রাখা দরকার ছিল।
চট্টগ্রামের বিসমিল্লাহ গ্রুপের অর্থ পাচারের মামলার এক আসামির জামিন শুনানির সময় বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ মন্তব্য করেন।
আদালত বলেন, লঘু দণ্ড দিয়ে এ ধরনের অর্থ পাচারের মতো দুর্নীতির অপরাধ রোধ করা যাবে না। প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে সাজার পরিমাণ বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে।
২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার ১০ নম্বর বিশেষ আদালত বিসমিল্লাহ গ্রুপের অর্থ পাচারের এক মামলায় গ্রুপের এমডি খাজা সোলেমান আনোয়ার চৌধুরী, তার স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান নওরীন হাবিবসহ ৯ জনকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে ৩০ কোটি ৬৭ লাখ টাকার অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। এই মামলার আরেক আসামি জনতা ব্যাংক এলিফ্যান্ট রোড শাখার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার এসএম শোয়েব উল কবিরের ১০ বছর সাজা হয়। এরপর আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠান আদালত। কারাগার থেকে তিনি সাজার বিরুদ্ধে আপিল করেন। এরপর হাইকোর্টে জামিন চান।
বুধবার আসামির জামিন শুনানিতে দুদকের কৌঁসুলি ব্যারিস্টার হাসান এমএস আজিম বলেন, এই অর্থ পাচারের ঘটনায় সহযোগিতা করেছেন ওই ব্যাংক কর্মকর্তা। তাকে বিচারিক আদালত ১০ বছরের সাজা দিয়েছেন। এ পর্যায়ে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এই মামলায় আসামিদের ১০ বছর সাজা কম হয়ে গেছে। অর্থ পাচারের মতো গুরুতর অপরাধে যাবজ্জীবন সাজা দিতে হবে। আইনে সর্বোচ্চ সাজার পরিমাণ কত? এ সময় দুদক কৌঁসুলি বলেন, সর্বোচ্চ সাজা ১২ বছর। আদালত বলেন, ১২ বছর সাজা সেখান থেকে আবার দেওয়া হয়েছে ১০ বছর। এজন্য আইন সংশোধন করে সাজার পরিমাণ বাড়াতে হবে।
জানা গেছে, ব্যাংকিং খাতের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে নাম আসে বিসমিল্লাহ গ্রুপের বিরুদ্ধে। তাদের বিরুদ্ধে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১২টি মামলায় অন্তত ৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
- বিষয় :
- হাইকোর্ট
- অর্থ পাচার
- যাবজ্জীবন সাজা