কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
সেশনজটের প্রতিবাদ করায় শোকজ ৪০ শিক্ষার্থীকে

ফাইল ছবি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ০৯:৩৬ | আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ০৯:৩৬
সেশনজটের প্রতিবাদ জানিয়ে আন্দোলন এবং এ নিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি করায় একসঙ্গে ৪০ শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। রোববার ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের সব শিক্ষার্থীকে বিভাগীয় প্রধান মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন স্বাক্ষরিত এ নোটিশ দেওয়া হয়। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের এ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা চার বছর ৯ মাসে মাত্র পঞ্চম সেমিস্টারের পরীক্ষা দিচ্ছেন। যেখানে একই ব্যাচের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অষ্টম সেমিস্টারের পরীক্ষা দিচ্ছেন।
নোটিশে বলা হয়, 'আপনারা ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের বিভাগীয় চতুর্থ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা গত ১ সেপ্টেম্বর ও পরবর্তী সময়ে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ফেসবুকে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ও বিভাগীয় শিক্ষকদের নিয়ে নানা ধরনের কটূক্তি ও বিব্রতকর মন্তব্য করেছেন। শিক্ষকের সঙ্গে আপনাদের একাডেমিক অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের ভাষ্য উন্মুক্তভাবে উপস্থাপন এবং স্ট্ক্রিনশট শেয়ার করে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। এটি আপনারা করতে পারেন কি-না, সে বিষয়ে বিভাগ জানতে চায়।'
নোটিশে আরও বলা হয়, একাডেমিক বিষয় নিয়ে এ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বিভাগীয় ছাত্র উপদেষ্টা ও বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া বিভাগের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও সরাসরি উপাচার্যের স্মরণাপন্ন হয়েছেন; এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
তবে ভুক্তভোগী একাধিক শিক্ষার্থীর দাবি, বিভাগের সেশনজট নিয়ে কথা বলায় এবং পরীক্ষার দাবিতে আন্দোলনে যাওয়ায় এ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। যে আন্দোলনের কথা বলা হচ্ছে, সেখানে অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও ছিলেন, শুধু তাদের বিভাগই ছিল- এমন নয়। এ জন্য তারা সবাই মিলে উপাচার্যের কাছে গেছেন।
এ বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রধান মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন বলেন, বিভাগের শিক্ষাসংক্রান্ত সীমাবদ্ধতা এবং করোনাকালে অচলাবস্থায় যে সেশনজট তা নিয়ে ছাত্রদের মনে অসন্তোষ থাকতেই পারে। ছাত্ররা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে, তা নিয়ে তাদের দুশ্চিন্তা হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু এটাকে প্রেক্ষিত করে কোনো শিক্ষককে নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য করলে সেই শিক্ষক ছোট হন, বিভাগও ছোট হয়। পাশাপাশি ওই বিভাগের ছাত্ররাও কিন্তু ছোট হয়। তারা বিভাগের সমস্যা নিয়ে প্রথমে ছাত্র উপদেষ্টা, বিভাগের প্রধানের সঙ্গে কথা বলবে- এটাই শোভন ও উচিত। বিভাগের শিক্ষক যদি সমাধান এবং সদুত্তর দিতে না পারেন, তখন বিভাগের সভাপতি তাদের পরামর্শ দেবেন যে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে। বিভাগীয় প্রধান আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের নোটিশ দেওয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে তাদের এ বিষয়ে সতর্ক করা।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এমরান কবির চৌধুরী জানান, তিনি এ বিষয়টি নিয়ে বিভাগের সঙ্গে কথা বলবেন।