ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

চার ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেয়াদ বাড়লো

চার ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেয়াদ বাড়লো

প্রতীকী ছবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২১ | ০৩:২৬ | আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২১ | ০৪:৪৫

পুরানো চারটি ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। সবকটিই বিদ্যুৎকেন্দ্রই গ্যাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে থাকে। এগুলোর মেয়াদ এক থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। একইসঙ্গে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার নতুন একটি ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনেরও অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। 

বুধবার অনুষ্ঠিত ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে বিদ্যুৎ বিভাগের এসব প্রস্তাব অনুমোদন হয় বলে বৈঠক শেষে এক ভার্চুয়াল সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এছাড়া ওই বৈঠকে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের আরও সাতটি প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে।

যেসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে সিলেটের কুমারগাঁও ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্যাসভিত্তিক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এনার্জি প্রাইমা লিমিটেডের মালিকানাধীন এই কেন্দ্রের মেয়াদ এক বছর বাড়ানো হয়েছে। নতুন চুক্তি অনুযায়ী এই কেন্দ্র থেকে প্রতিকিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ এক টাকা ৯৭ পয়সা দরে কিনবে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৮৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা। একই কোম্পানির ফেঞ্চুগঞ্জ ৫০ মেগাওয়াট ও বগুড়া ২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্যাসভিত্তিক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র দুটির মেয়াদ ৩ বছর করে বাড়ানো হয়েছে। ফেঞ্জুগঞ্জের কেন্দ্র থেকে ২ টাকা ১২ পয়সা দরে এবং বগুড়ার কেন্দ্র থেকে ২ টাকা ৩ পয়সা দরে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ নেওয়ার বিষয়ে সরকারের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। এতে সরকারের ব্যয় হবে ৩৮৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। এছাড়া ইউনাইটেড এনার্জি লিমিটেডের আশুগঞ্জ ৫৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্যাসভিত্তিক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেয়াদ ৫ বছর বাড়ানো হয়েছে। এই কেন্দ্র থেকে ২ টাকা ৪৩ পয়সা দরে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ কিনবে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৪৫১ কোটি ২০ লাখ টাকা।

অন্যদিকে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমার বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি হবে কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র। গ্যাস অথবা আরএলএনজি হবে এই কেন্দ্রের জ্বালানি। কনফিডেন্স পাওয়ার হোল্ডিংস লিমিটেড, জিই ক্যাপিটাল ইউএস হোল্ডিং ইনকর্পোরেশন, কনফিডেন্স পাওয়ার লিমিটেড জিইএস এবং ইলেকট্রোপ্যাক ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড কনসোর্টিয়ামের ভিত্তিতে কেন্দ্রটি স্থাপন করবে। ২২ বছর মেয়াদে এতে ব্যয় হবে ৬৯ হাজার ১৫২ কোটি টাকা।

পুরানো কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র অনেক আগে প্রতিষ্ঠিত। যেকারণে তাদের থেকে এখন যে বিদ্যুৎ কেনা হচ্ছে সেখানে কোনো ক্যাপাসিটি চার্জ নেই। যা বিদ্যুৎ সরবরাহ হবে তারই মূল্য পরিশোধ করা হবে। সরকারের 'নো পাওয়ার নো পেমেন্ট' পলিসিতে এসব চুক্তি করা হয়েছে। ফলে ভয়ের কোনো কারণ নেই। সরকার লোকসান করবে না। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলাসহ বিভিন্ন প্রেক্ষিতে সরকার কয়লাভিত্তিক ৮টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন থেকে সরে এসেছে। ফলে বিকল্প উৎস থেকে বিদ্যুৎ দরকার।

এছাড়া বুধবারের বৈঠকে খুলনা মোংলা পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণে ভেরিয়েশন বাবদ একটি প্রস্তাবে ২৬৭ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। অপর এক প্রস্তাবে ভেরিয়েশন কমানো হয়েছে। অপরদিকে খাদ্য অধিদপ্তরের ৫০ হাজার টন গম কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কমিটি। ভারতের মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এ গম কেনা হবে। প্রতি টন গম ৪০৪ দশমিক ১১ ডলারে কেনা হচ্ছে। এতে মোট ব্যয় হবে ১৭৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এছাড়া নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের দুটি এবং স্বাস্থ্য ও পরিকল্যাণ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগের একটি করে প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কমিটি।

আরও পড়ুন

×