রাজাকারের তালিকা নিয়ে সংসদে তোপের মুখে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী
ফাইল ছবি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২০ | ১০:১১
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত বিতর্কিত রাজাকারের তালিকা নিয়ে সংসদে কিছুটা তোপের মুখে পড়েছেন মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। সরকারি দলের সংসদ সদস্যদের ক্ষোভের জবাব দিতে গিয়ে মন্ত্রী বলেছেন, দুঃখ প্রকাশ করে এরই মধ্যে তালিকাটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে সবার সহযোগিতা নিয়ে যাচাই-বাছাই করেই স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করা হবে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আ ক ম মোজাম্মেল হক আরও বলেন, রাজাকারের তালিকা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রণয়ন করা হয়নি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে ১০ হাজার ৭৮৫ রাজাকার, আলবদর, আলশামস এবং স্বাধীনতাবিরোধীদের একটি তালিকা এ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সেটি হুবহু মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ হয়। যেহেতু মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ওই তালিকা প্রস্তুত করেনি, সেহেতু কারও গাফিলতি থাকলে তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিতে পারে।
মন্ত্রীর এমন জবাবে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রশ্নকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন রতন সম্পূরক প্রশ্নে বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেই, এই কথাটি সরাসরি বলা যায় না। তালিকাটি সঠিক কিনা, তা দেখার দায়িত্ব ছিল মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের।
জবাবে মন্ত্রী বলেন, যাতে ভুলত্রুটির পুনরাবৃত্তি না হয়, সেজন্য আমরা সবার সহযোগিতা নিয়ে এবং সম্পূর্ণরূপে যাচাই-বাছাই করে ভবিষ্যতে তালিকা প্রকাশ করব।
এ সময় মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও সরকারি দলের সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তমও অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল আমরা কোনো তালিকা তৈরি করব না। আমাদের লক্ষ্য ছিল যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে তাদের তালিকা বিদ্যমান আছে, সেই তালিকা প্রকাশ করতে হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের হাতে থাকা তালিকাটি প্রকাশ করতে পারত। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী কেন সেটা প্রকাশ করলেন?
জবাবে মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, 'সংসদে আমি এই কথাই বলেছিলাম। আমরা কোনো তালিকা তৈরি বা প্রকাশ করব না। আমরা যেটা পেয়েছি, সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও প্রণয়ন করেনি, তাদের কাছে যা সংরক্ষিত ছিল তাই দিয়েছে। তালিকায় যাদের নাম গেছে, তারা শুধু সক্রিয় ছিল কিনা, তা শুধু যাচাই করার ব্যাপার। তাদের নাম যে তালিকায় আছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আমার যেটা অভিজ্ঞতা হয়েছে, এগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তখন মেম্বার-চেয়ারম্যানদের কাছে যে তালিকা চাওয়া হয়েছে, তারা কী করবে, তাদের অজ্ঞাতেই হয়তো বা অনেকের নাম দিয়ে দিয়েছে। সেজন্যই এই বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। ভবিষ্যতে যাচাই-বাছাই করেই তালিকা প্রকাশ করব।'
