ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সৃজনশীল ক্লাব

সবার পাশে সবসময়

সবার পাশে সবসময়

আর্ট অ্যান্ড ফটোগ্রাফি ক্লাবে থাকে বছরজুড়েই নানা আয়োজন

মো. খশরু আহসান

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৪ | ০৫:৩২ | আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৪ | ১২:৪৯

আর্ট অ্যান্ড ফটোগ্রাফি ক্লাব 

ঘড়ির কাঁটা, দিনপঞ্জিকার পৃষ্ঠা, মহাবিশ্বের কক্ষপথগুলোতে ঘুরতে থাকা গ্রহ-নক্ষত্র সবকিছুই তাদের নিজেদের মতো করেই চলমান। পৃথিবীর কোনো মুহূর্তকেই আটকে রাখা সম্ভব হয়নি কখনোই । তবে ছোট্ট একটি ফ্রেমে যারা বিশেষ কোনো সময়কে লেন্সের মাধ্যমে বন্দি করে রাখেন; তারা আলোকচিত্রী। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট অ্যান্ড ফটোগ্রাফি ক্লাবে রয়েছে এমন একঝাঁক আলোকচিত্রী। যারা শহরের অলিগলিতে, গ্রামগঞ্জে ঘুরে বেড়ান ছবির আশায়। নদনদী, পাহাড়ের চূড়ায়, সমুদ্র থেকে সমতলে ছুটে চলে বিশেষ মুহূর্তগুলো বন্দি করে রাখার নেশায় 

আর্ট অ্যান্ড ফটোগ্রাফি ক্লাব বছরে মোট ৩টি ফিল্ড ট্রিপ এবং ২টি প্রদর্শনীর আয়োজন করে থাকে। তাদের একটি ওয়ানডে ফটোগ্রাফি ফিল্ড ট্রিপ। ঢাকার আশপাশের ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে একটি জায়গা বেছে নিয়ে হয় একদিনের আয়োজন। মানুষের জীবনধারণ বা স্থানীয় সংস্কৃতিকে ফ্রেমবন্দি এবং ফিরে এসে সেগুলো বিশ্লেষণ করা হয়। দ্বিতীয়টি, ন্যাশনাল ফটোগ্রাফি ফিল্ড ট্রিপ। দেশের আনাচে কানাচে চোখের আড়াল হয়ে থাকা সভ্যতা ও পরিস্থিতিকে তুলে ধরতে জাতীয় এ আয়োজন। আলোকচিত্রীরা পিঠে ব্যাগ আর হাতে ক্যামেরার লেন্স নিয়ে হারিয়ে যান ছবির নেশায়। তৃতীয় ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আয়োজন হলো, ইন্টারন্যাশনাল ফটোগ্রাফি ফিল্ড ট্রিপ। ভারত, নেপাল ও ভুটানসহ পৃথিবীর আকর্ষণীয় বিভিন্ন দেশে যাওয়া হয় এই বিভাগের কার্যক্রমে। সেখানকার জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার পাশাপাশি প্রকৃতি ও পরিবেশকে ফ্রেমবন্দি করতে আলোকচিত্রীরা ছুটে চলেন অবিরাম পথ যাত্রায়। সেই যাত্রায় কত যে উৎসব-আনন্দ হয়; তার হিসাব রাখা মুশকিল! আলোকচিত্রীদের তোলা ছবির প্রদর্শনী ক্লাবটির অন্যতম একটি আকর্ষণীয় ইভেন্ট। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দুই পর্যায়েই প্রদর্শনী হয় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে। তরুণ প্রজন্মের হাতে থাকা ক্যামেরার লেন্সের মাধ্যমে নিজেকে প্রকাশ করার এক অন্যরকম সুযোগ তৈরি করেছে ক্লাবটি। তরুণ প্রজন্মের চোখে পৃথিবী দেখতে কেমন হয়– তা ভেসে থাকে ফ্রেমে। বাঁধিয়ে রাখা হয় ক্লাবের দেয়ালে। প্রদর্শনীতে একেকটি ফ্রেমে থাকে হাজার ধরনের গল্প। একটু মনোযোগ দিয়ে খেয়াল করলেই তা বোঝা যায়।
 অল স্টারস ড্যাফোডিল

ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিনয়, সংগীত ও নৃত্যকলায় আগ্রহী শিক্ষার্থীদের মিলনস্থল ‘অল স্টারস ড্যাফোডিল’। মূলত একটি থিয়েটার ক্লাব, তবে অল স্টারসের পদচারণা বহুমুখী। মঞ্চ নাটক, নাচ, গান, প্রযোজনার পাশাপাশি অসহায়দের জন্য চ্যারিটি প্রোগ্রাম, দক্ষতা উন্নয়নের কর্মশালাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে তাদের অংশগ্রহণ থাকে স্বতঃস্ফূর্ত। ২০১০ সালে ‘গাহি সাম্যের গান’ নাটক মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু হয় ক্লাবটির। নাটকটি রচনা করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সৈয়দ মিজানুর রহমান। দেশের ছোট-বড় বিভিন্ন মঞ্চে এ পর্যন্ত ৩৪ বার মঞ্চায়িত হয়েছে নাটকটি। এরপর থেকে ১৩ বছরে প্রায় ২০টি নাটক প্রযোজনা করেছে অল স্টারস নাট্যদল। বেশ কয়েকটি মঞ্চ নাটক দেশের নাট্যপ্রমীদের মাঝে দারুণ সাড়া ফেলেছে। এর মধ্যে ‘বনমায়া’, ‘ডেঙ্গু সাঙ্গলিলা’, ‘স্বত্বা’, ‘সান্তাল হুলে’ উল্লেখযোগ্য। তাদের নাটকের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, সামাজিক সচেতনতা। সেখানে অন্যায়-অত্যাচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের দিকটা খুব দারুণভাবে ফুটে ওঠে। সমাজের অসহায়-দরিদ্র-নিপীড়িত মানুষের কথাগুলো তারা তুলে ধরেন নিজেদের ভঙ্গিতে, গল্পগুলো সাজিয়ে নেন নিজেদের ঢং-এ। এ বিষয়ে ক্লাবের সভাপতি তৌহিদুর রহমান নিশান বলেন, ‘স্বল্প সময়ের মধ্যে আমাদের থিয়েটার দলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরেও ছড়িয়েছে সুখ্যাতি। এই জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পেছনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে আমাদের মৌলিকত্ব। সূচনালগ্ন থেকেই অল স্টারস ড্যাফোডিলের সব পরিবেশনায় গুরুত্ব পেয়েছে নিজেদের গল্প ও মৌলিক ছন্দ। শিক্ষার্থীদের শৈল্পিক বোধ ও মুক্তচিন্তার প্রসার ঘটাতে কাজ করে যাচ্ছেন অল স্টারস ড্যাফোডিলের সদস্যরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে দক্ষতা বাড়াতে তাদের নিয়মিত আয়োজনে রয়েছে– বাচিক শিল্প, অভিনয়, নৃত্য, সুর-তাল এবং সংগীতবিষয়ক কর্মশালা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার ক্লাব

২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সংগঠনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের ক্যারিয়ার উন্নয়ন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যান্ড ডেভেলপমেন্ট নিয়ে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে আসছে। প্রতিষ্ঠার পর মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে প্রথমবারের মতো জব ফেয়ার আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের অন ক্যাম্পাস রিক্রুটেড হওয়ার সুযোগ করে দেয়। প্রতিষ্ঠার ৯ বছরে সাতটি জব ফেয়ার ও ছয়টি ক্যারিয়ার ফেস্ট আয়োজন করেছে তারা। ক্লাবটি সেমিনার, কর্মশালা, স্কিল বিল্ডিং অ্যাক্টিভিটিস, কম্পিটিশন, ক্যারিয়ার বিল্ডিং সেশন, বিভিন্ন করপোরেট কোম্পানির সঙ্গে ইন্টার্নশিপ এগ্রিমেন্ট, সিভি ব্যাংক তৈরি, ক্যারিয়ার এবং রিক্রুটমেন্ট রোড শো আয়োজন করে থাকে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার ক্লাবের সভাপতি মো. সাব্বির হোসেন বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করে লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে সদস্য সংগ্রহ করে থাকি। এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তী সময়ে সব সদস্যকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করা হয়।’ 

আরও পড়ুন

×