ডিজাইন, বিল্ড, ফ্লাই প্রতিযোগিতা
এশিয়ায় চতুর্থ এমআইএসটির নভোনীল

এমআইএসটির টিম নভোনীল
ফরিদুল ইসলাম নির্জন
প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৪ | ০১:১৫
এমআইএসটির নভোনীল আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব অ্যারোনটিকস অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনটিকস আয়োজিত ডিজাইন, বিল্ড, ফ্লাই প্রতিযোগিতায় দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় হয়েছে। গোটা এশিয়ার মধ্যে হয়েছে চতুর্থ। মার্কিন ইনস্টিটিউট অব অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনটিক্স দ্বারা প্রতি বছর আয়োজিত হয় ডিজাইন বিল্ড ফ্লাই। যে প্রতিযোগিতার বিষয় থাকে একটি বিমানের নকশা ও উৎপাদন। এই প্রতিযোগিতায় বিমানের নকশা, নির্মাণ এবং উড্ডয়ন সক্ষমতা– এই তিনটি বিষয়ে দলগুলোকে মূল্যায়ন করা হয়। তারা ১৮ থেকে ২১ এপ্রিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কানসাসে এ ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেছিল। ৪০টি দেশের মর্যাদাপূর্ণ ১১০টি দলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এ দলটি। যেখানে এমআইটি ও ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানও অংশ নিয়েছিল। টিম নভোনীল দক্ষিণ এশীয় দলগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় এবং এশিয়ায় চতুর্থ স্থান দখল করে নেয়। তাদের উদ্ভাবনী নকশা ও বাজেট দক্ষতার জন্য প্রশংসা অর্জন করেছে। প্রতি বছর AIAA প্রতিযোগিতার একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়, যার এ বছরের লক্ষ্য ছিল ডেলিভারি, মেডিকেল ট্রান্সপোর্টসহ আরবান এয়ার মোবিলিটি মিশন নিয়ে কাজ করা। আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব অ্যারোনটিকস অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনটিকস (AIAA) প্রতি বছর ডিজাইন, বিল্ড অ্যান্ড ফ্লাই প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে; যেখানে বিশ্বব্যাপী এয়ারক্রাফট ডিপার্টমেন্টের স্টুডেন্টদের জন্য বাস্তব বিশ্বের
উন্নতমানের বিমানের নকশা ও গবেষণা নিয়ে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়। মূলত আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব অ্যারোনটিকস কর্তৃক আয়োজিত এ প্রতিযোগিতা একটি উল্লেখযোগ্য ইভেন্ট যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাস্তব বিশ্বের বিমান ডিজাইনের অভিজ্ঞতা প্রদান করে ও এটি উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করে এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগ দেয়। প্রতি বছর কিছু লক্ষ্য নির্ধারণ করে দেয় এবং সে অনুযায়ী বিমানটির ডিজাইনও বানানো হয়। এ বছর উদ্দেশ্য ছিল আরবান এয়ার মোবিলিটি মিশন প্রদর্শনের জন্য একটি বিমানের নকশা, নির্মাণ ও পরীক্ষা করা। এ বছর মেডিকেল পরিবহন, যাত্রী পরিবহনসহ আরবান এয়ার মোবিলিটি মিশনগুলো কেন্দ্র করে একটি বিমানের নকশা, উৎপাদন ও আকাশে ওড়ানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। প্রতিযোগিতাটি তিনটি পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমত, দলগুলোকে গত বছরের অক্টোবরের শেষের দিকে প্রস্তাব ও দলের রোস্টার এবং এ বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে ডিজাইন রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছিল। চূড়ান্ত ধাপে ১৮ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত বহুল প্রত্যাশিত ‘ফ্লাই অফ’ প্রতিযোগিতা
অনুষ্ঠিত হয়।
এ রকম একটি কঠিন প্রতিযোগিতায় নভোনীল দল তাদের নির্মিত বিমান ‘আকাশতরী’-এর মাধ্যমে বিচারকদের মন জয় করে নেয়। আকাশতরীর নকশা, নির্মাণ ও উড্ডয়ন সক্ষমতা সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এ দলের সবাই মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিমান প্রকৌশল
বিভাগের শিক্ষার্থী। নভোনীল দলের ৭ সদস্য হলেন নাভিদ ইবনে নেওয়াজ চৌধুরী, নাফিজ রেদোয়ান, শাহ ইশরাক, মাশরুর নাফিম, মাশহুনুর রহমান, কাজী তাউহিদ হোসেন ও স্বপ্নীল এন্দ। টিম নভোনীল এমআইএসটি অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনটিক্স ক্লাবের সঙ্গে যৌথভাবে সমন্বয় সাধন করে ধারাবাহিকভাবে তাদের দক্ষতা প্রদর্শন করেছে। এ বছরের উদ্ভাবিত প্রজেক্ট ‘আকাশতরী’ ধারণাগত নকশা, বহুবিভাগীয় অপ্টিমাইজেশন, অ্যারোডায়নামিক এবং কাঠামোগত বিশ্লেষণ ও মনুষ্যবিহীন এরিয়াল ভেহিকল (UAV) উৎপাদনে তাদের দক্ষতা প্রদর্শন করেছে। দলটি তাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও গবেষণার মাধ্যমে বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের হয়ে সুনাম বয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। দলের অন্যতম সদস্য নাভিদ ইবনে নেওয়াজ চৌধুরী বলেন, ‘জার্নিটা বেশ ভালো ছিল। বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিমান ও মহাকাশ সেক্টরে তাদের শিক্ষার্থীদের কীভাবে গড়ে তুলছে, সেটা দেখতে পেরেছি। নতুন অনেক কিছুই শিখেছি; বাস্তবে একটা বিমান কীভাবে ডিজাইন করা হয়, বানানো হয়। বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হয়েছে, নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে, ফলে ভবিষ্যতে সম্ভাবনা তৈরি হবে।’ v
- বিষয় :
- রকমারি ডটকম