ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

২৫ বছরেও পার্বত্য শান্তি চুক্তির পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি

২৫ বছরেও পার্বত্য শান্তি চুক্তির পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি

আলোচনা সভা চলাকালীন একটি চিত্র

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২২ | ১০:৫৬ | আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২২ | ১০:৫৬

গত ২৫ বছরেও পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। চুক্তির যেসব বিষয় এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি সেগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে। পাহাড়ের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও জীবনমান উন্নয়নের লক্ষে শান্তি চুক্তি করা হয়েছিল।

রোববার পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ২৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে 'সমৃদ্ধির সোপানে বাংলাদেশ এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়ন' শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোসাম্মৎ হামিদা বেগমের সভাপতিত্বে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ওই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং। 

এ ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, আঞ্চলিক পরিষদ, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ, মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন।

সভায় মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেন, শান্তি চুক্তির পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন হয়েছে এটি যেমন ঠিক নয়, আবার চুক্তি একেবারেই বাস্তবায়ন হয়নি- এটিও ঠিক নয়। চুক্তির যেসব অংশ এখনও বাস্তবায়ন হয়নি সেনগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে। ঐতিহাসিক ওই চুক্তির পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম দেশের একটি সম্পদশালী এলাকা হবে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোসাম্মৎ হামিদা বেগম বলেন, বিগত কয়েক বছরে সারাদেশে অতিদরিদ্রের হার বেশ কমেছে। তবে পার্বত্যাঞ্চলের কিছু জায়গায় এখনও অতিদরিদ্র মানুষ আছে। 

তিনি আরও বলেন, পার্বত্য এলাকার মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, বিদ্যুৎ সরবরাহ, শিক্ষার প্রসার, স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নসহ নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। 

পার্বত্য চট্টগ্রাম সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি বাসন্তী চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রাথমিক স্কুল আছে, শিক্ষক নেই। কমিউনিটি ক্লিনিক আছে, ডাক্তার নেই। শিক্ষা না পেলে, চিকিৎসা না পেলে আর্থসামাজিক উন্নয়ন হবে কিভাবে?

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা বলেন, পার্বত্যাঞ্চলের জন্য খসড়া নিয়োগবিধিটি এখন পর্যন্ত আইন মন্ত্রণালয়ের ভ্যাটিং শেষ হয়নি। এটি দ্রুত চূড়ান্ত বিধিতে পরিণত করা দরকার। এ কারণে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। 

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য নিলু কুমার তংচঙ্গা বলেন, জেলা পরিষদগুলোকে সক্ষম করতে হবে। আইনের ফাঁক-ফোকর দূর করতে হবে।

রাঙ্গমাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রো চৌধুরী বলেন, সমন্বয়হীনতার কারণে জেলা পরিষদগুলো ভালোভাবে কাজ করতে পারছে না। আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করে অসঙ্গতি দূর করতে হবে। একই সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী মাধ্যমিক স্কুলসহ অন্যান্য বিষয়াদি জেলা পরিষদগুলোর কাছে হস্তান্তর করতে হবে।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৮ সালের ১৫ জুলাই পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। গত ১৫ জুলাই শুক্রবার ছিল ছুটির দিন। এ কারণে রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসটি পালন করা হয়।

আরও পড়ুন

×