ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে মতবিনিময়ে ভারতের হাইকমিশনার

শেখ হাসিনার সফর সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে

শেখ হাসিনার সফর সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে

রাজধানীর একটি হোটেলে সোমবার মতবিনিময় শেষে সম্পাদকদের সঙ্গে ভারতের হাইকমিশনার- সমকাল

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২২ | ২২:০২ | আপডেট: ২৯ আগস্ট ২০২২ | ২২:০২

আগামী সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।  সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

মতবিনিময় সভায় ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক একং উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন দোরাইস্বামী। সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনামের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, আজকের পত্রিকা সম্পাদক গোলাম রহমান, নিউ এজ সম্পাদক নুরুল কবির, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন, সংবাদ সম্পাদক আলতামাশ কবির, বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ ও ঢাকা ট্রিবিউন সম্পাদক জাফর সোবহান।

দোরাইস্বামী বলেন, ‘সীমান্ত জটিলতা, সমুদ্রসীমাসহ বড় বড় সমস্যা এরই মধ্যে আমরা সমাধান করেছি। ২০ বছর আগের তুলনায় বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক এখন অনেক পরিপক্ক।’ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের উন্নয়নে গুরুত্ব আরোপ করে তিনি আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে নৌ ও রেলপথের মতো সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব যোগাযোগের নতুন নতুন রুট গড়ে তোলার পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় বাণ্যিজ্য ও পরিবহন যোগাযোগের উন্নতি হলে শুধু ভারত-বাংলাদেশ নয়; এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের জন্যও তা বড় পরিবর্তন আনবে। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো উচ্চ ব্যয়। ভারত-বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি পণ্যের সিংহভাগই পরিবহন হচ্ছে স্থলপথে। এটি খুবই ব্যয়বহুল; পরিবেশবান্ধবও নয়। একটি ট্রাকে সর্বোচ্চ ১৫ টন পণ্য পরিবহন করা যায়। সেই ট্রাককে ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে হয়।’ হাইকমিশনার বলেন, ‘বন্দর, রেলপথসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে বাংলাদেশের তৃতীয় কোনো দেশে রপ্তানি করতে ভারতের কোনো আপত্তি নেই।’

দোরাইস্বামী বলেন, এ আঞ্চলের দেশগুলোর বৃহত্তর কল্যাণের জন্য উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগ সময়ের দাবি। তাঁর দেশ অন্তত চার থেকে পাঁচটি দেশের মধ্যে বন্দর এবং অর্থনৈতিক আন্তঃসংযোগের দিকে নজর দিতে ইচ্ছুক। এটি অর্জনের জন্য একটি প্রচেষ্টা হলো বিমসটেক। তবে এ জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এখনও প্রস্তুত নয়- উদাহরণ হিসেবে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত কানেক্টিভিটির কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নয়ন ছাড়া এটি সম্ভব নয়। বিদ্যমান সঞ্চালন ব্যবস্থার পুরোটাই ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমানে বহরমপুর থেকে ভেড়ামারা পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ভারতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে। আরও প্রায় ১ হাজার ১৬০ মেগাওয়াট সরবরাহ করা হচ্ছে ত্রিপুরা থেকে। এ দুটি ছাড়া ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে আর কোনো সঞ্চালন লাইন নেই। ভারত গ্রিড সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নয়নে আগ্রহী, যা বাংলাদেশের গ্রিডকে শক্তিশালী করে তুলবে। এ ক্ষেত্রে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে আরও বিনিয়োগ আসবে। যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের জন্য অবকাঠামো তৈরি করতে পারলে বাংলাদেশ ও ভারত দু'পক্ষই লাভবান হবে। বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ স্থল সীমান্ত ভারতের সঙ্গে। শুধু ভারত-বাংলাদেশ নয়; পুরো অঞ্চলই এর সুবিধা ভোগ করবে।’

ভবিষ্যতে বিশেষ করে সমুদ্রপথে যোগাযোগ আরও বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরে দোরাইস্বামী বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচলের কোনো সুযোগ নেই। পণ্যবাহী জাহাজগুলোকে সিঙ্গাপুর বা কলম্বো হয়ে চলাচল করতে হয়। এটা হাস্যকর।’

তিনি বলেন, ‘এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় ধারণা সব সময় সঠিক হয় না, যা খতিয়ে দেখা দরকার।’ আসামে এনআরসি কার্যকর বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে দোরাইস্বামী বলেন, ‘ভারত এমন কিছু করবে না, যাতে বাংলাদেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’

আরও পড়ুন

×