ঢাকা মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫

১৭তম জাতীয় ফার্নিচার মেলায় ‘বহু’র নান্দনিক আসবাব

১৭তম জাতীয় ফার্নিচার মেলায় ‘বহু’র নান্দনিক আসবাব

জাতীয় ফার্নিচার মেলায় বহু'র স্টলে ক্রেতাদের ভিড়। ছবি-সমকাল

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২২ | ০০:০২ | আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২২ | ০০:১৬

রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরাতে ১৭তম জাতীয় ফার্নিচার মেলার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি। ৬ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে এই মেলা। চলবে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত। 

আক্তার ফার্নিচার্স লিমিটেড, নাভানা ফার্নিচার লিমিটেড, পারটেক্স ফার্নিচার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, বহু বাংলাদেশ লিমিটেডসহ মোট আঠারোটি আসবাব তৈরির প্রতিষ্ঠান এবারের মেলায় অংশগ্রহণ করেছে। 

প্রতিদিন মেলায় আসবাব প্রেমীরা যাচ্ছেন নতুন নতুন ডিজাইনের সব আসবাবের খোঁজে। বেডরুম সেট থেকে শুরু করে ক্যাবিনেট, ডিনার ওয়াগন,  সু বক্স, রকিং চেয়ার সবই পাওয়া যাচ্ছে এবারের মেলাতে।  নানা আসবাবে মেলা যে বর্ণিল ও আনন্দময় হয়ে উঠেছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। এই বছর 'বহু'  ক্রেতাদের জন্য আগের চাইতে অনেক বেশি আকর্ষণীয় আসবাব এসেছে। মেট্রো ২১ কালেকশনগুলো বহু'র স্টলে এবারের প্রধান আকর্ষণ। প্রাণবন্ত ও সজীব রঙের এই কালেকশনগুলো একেবারে আলাদা।

এবারের মেলায় এই প্রতিষ্ঠান বৈচিত্র্যময় সব আসবাবের সমাহার ঘটিয়েছে। উল্লেখযোগ্য আসবাবের মধ্যে রয়েছে- বেডরুম সেট, মডার্ন বুক কেস, ডিনার ওয়াগন, মডার্ন কেবিনেট, টল গ্লাস কেস, ডাইনিং টেবিল, মডার্ন ড্রেসার, নেমসেক বেডসাইড টেবিল, সোফা, সু বক্স, রাউন্ড চেয়ার, টাইনি সোফা, রকিং হর্স। এর সঙ্গে আরও অনেক ধরনের আসবাবও রয়েছে। 

ডিজাইন, রঙে ও নির্মাণে ‘বহু বাংলাদেশ লিমিটেড’-এর আসবাবগুলো যে একটু আলাদা তা বলতেই হবে। প্রতিটি আসবাবই বানানো হয়েছে ক্রেতার মনোজগতকে আরও আনন্দময় করার দৃঢ় প্রত্যয়ে। ‘বহু বাংলাদেশ লিমিটেড’-এর কনসেপ্ট হলো-‘বহু রঙ্গে রঙিন হোক জীবন’। একটি আসবাব যেনো ক্রেতার মনকে প্রফুল্ল রাখে, আসবাব যেনো ক্রেতার হৃদয়কে আনন্দময় করে। মেলায় ‘বহু বাংলাদেশ লিমিটেড’ প্রতিটি পণ্যে ২৫ শতাংশ ছাড়ের ব্যবস্থা রেখেছে।

বহু’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আর্কিটেক্ট নাবিলা নওরিন। বয়সে একেবারেই তরুণ। নাবিলা নওরিন তার বান্ধবী নাহিদ শারমীনকে নিয়ে অনেকটা শখ থেকেই এমন ব্যবসায়ে উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন আড়াই বছর হলো। ২০২০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বহু আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে। সে বছর ফাগুনের প্রথম দিনে গুলশান- তেজগাঁও লিংক রোডে বহু’র প্রথম শাখার উদ্বোধন করেন ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লি. এর ভাইস চেয়ারম্যান হাসনীন মুক্তাদির।

নাবিলা নওরিন জানান, শুরুতে কেবলই বাসার বারান্দা, ঘরের কোণ এবং আশেপাশের স্পেসের জন্য তাঁরা বিভিন্ন ধরনের ছোটখাটো আসবাব বানানো শুরু করেন। সে সময় মূল উদ্দেশ্য ছিল বৈচিত্র্যময় আসবাব দিয়ে একটি বারান্দা, কর্নার বা অন্যান্য স্পেসকে নান্দনিক এবং আনন্দময় করে তোলা। তাই কাঠের সঙ্গে রঙের ব্যবহারকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে যাত্রা শুরু করেন। সে যাত্রায় সফলও হন। এবার তাই নিজেদের কাজ আর স্বপ্নের সীমানাকে বেশ বড় করে তুলেছেন। সোফা, ডাইনিং টেবিল, বেডরুম সেট সবই তৈরি করছেন। এখানেও বৈচিত্র্যময় রঙের ব্যবহারকে তাঁরা বড় বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।

নাবিলা নওরিনের মতে, প্রতিটি মানুষের জীবন রাঙাতে রঙের গুরুত্ব অপরিসীম। রঙের নান্দনিক ব্যবহার সবাই পছন্দ করেন এবং আমোদিত হন। আর এ কারণেই সকল ধরনের আসবাবে কাঠের রঙের যে গতানুগতিক ব্যবহার ছিল সেটাকে পরিবর্তন করে ফার্নিচার তৈরিতে তারা নতুন এক ধারণার সম্মিলন করেছেন। এই ধারণা আর বিশ্বাস নিয়েই ‘বহু বাংলাদেশ লিমিটেড’কে তাঁরা আরও আসবাব প্রেমীদের কাছে নিয়ে যেতে চান।

বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি আয়োজিত ১৭তম জাতীয় ফার্নিচার মেলার আয়োজন নিয়ে নাবিলা নওরিন খুবই খুশি। তাঁর মতে, এই আয়োজন যেমন অ্যাপ্রিশিয়েট করার মতো তেমনি এটি ব্যাপক উৎসাহব্যাঞ্জকও। এ ধরনের আয়োজন বিভিন্ন দেশে ফার্নিচার রপ্তানির জন্য আরও বড় সুযোগ তৈরি হবে বলেও তিনি মনে করেন। 

নাবিলা নওরিন জানান, এশিয়ার মধ্যে ফার্নিচার রপ্তানিতে ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম অনেক বেশি এগিয়ে। বাংলাদেশকেও তাই এগিয়ে যেতে হবে। এতে করে দেশের কাঠশিল্প আরও এগিয়ে যাবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

এছাড়া এই শিল্পকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারও যথেষ্ট ইতিবাচক বলে জানান নাবিলা।

বর্তমান সময়ে ফার্নিচার রপ্তানির ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার ব্যবসায়ীদের জন্য প্রণোদনা দিচ্ছেন। একই সঙ্গে ফার্নিচার আমদানির ক্ষেত্রে ট্যাক্স বেশি নিচ্ছেন। তাঁর মতে সরকারের এই ইতিবাচক মনোভাব এই শিল্পের জন্য বড় আশীর্বাদ বয়ে নিয়ে আসবে। তিনি নিজেও আমেরিকাতে আসবাবপণ্য পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।  

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ জন্য অনেকগুলো ধাপ পাড়ি দিতে হয়। কিন্তু আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আমরা নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করছি। আশা করি আমরা দ্রুতই আমাদের তৈরি আসবাব আমেরিকাসহ অন্যান্য দেশে পাঠাতে সক্ষম হবো।’ 

আরও পড়ুন

×