এমএসএফের বার্ষিক পর্যবেক্ষণ
চার মাসে ৩১২ গায়েবি মামলা, বেড়েছে সাংবাদিক নির্যাতন

সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ | ১৫:১৬ | আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ | ১৫:১৬
দেশে নাগরিকের বাকস্বাধীনতা ও রাজনীতিতে নিজস্ব মতামত প্রকাশ করার অধিকার খর্ব হচ্ছে প্রতিনিয়ত। গত চার মাসে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৩১২টি গায়েবি মামলা হয়েছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা না থাকায় সাংবাদিক নির্যাতন বেড়েছে। বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থা মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) তাদের বার্ষিক পর্যবেক্ষণে এসব তথ্য দিয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২০২২ সালে রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকার, সর্বোপরি মানবাধিকারের ক্ষেত্রে কার্যত কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি; বরং প্রায় সব ক্ষেত্রে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। রাজনৈতিক সহিংসতা ও সভা-সমাবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ হয়নি, সাংবাদিক নির্যাতন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা এবং পুলিশ হেফাজত ও কারা হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা বেড়েছে।
সাংবাদিকতা ও মত প্রকাশের অধিকার সম্পর্কে বলা হয়েছে, সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এ বছরের চিত্র ছিল উদ্বেগজনক। গত বছরের তুলনায় সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় মহিউদ্দিন নাঈম নামের একজন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। ২৬৬ সাংবাদিক পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৯ জন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ২১ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, যার মধ্যে পুলিশ ২০ জন। এ ছাড়া এই বছর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ৮২টি মামলা হয়েছে; এসব মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ৭৭ জন।
অন্যদিকে নির্বাচনী সহিংসতায় ২০২২ সালে ৫০ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে দুই শিশু রয়েছে এবং সহিংসতায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১ হাজার ৫৪১ জন।
বন্ধ হয়নি বিচারবহির্ভূত হত্যা :মানবাধিকার সংগঠনগুলো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখলেও 'ক্রসফায়ার' বা বন্দুকযুদ্ধে মৃত্যুর ঘটনা সরকার অস্বীকার করে আসছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফের সংগ্রহ করা তথ্যের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধের ২২টি ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এতে এক নারী ও ১২ যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন একজন সেনা ও তিনজন র ্যাব সদস্য। গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন এক নারী ও ১৩ যুবক।
পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতির জন্য রাজনৈতিক বিক্ষোভকারীদের দমনে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ না করে মানবিক ও সংবেদনশীল ভূমিকা পালন করা, কথিত গায়েবি মামলা ও এ-সংক্রান্ত মামলায় গ্রেপ্তার করা থেকে বিরত থাকা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা করাসহ বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে।