ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

রাশিয়ায় পড়ালেখা শেষে দেশে, বিয়ের পর বিচ্ছেদ, ঘরে মিলল গলাকাটা লাশ

রাশিয়ায় পড়ালেখা শেষে দেশে, বিয়ের পর বিচ্ছেদ, ঘরে মিলল গলাকাটা লাশ

প্রতীকী ছবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৩ | ১৪:৩৫ | আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৩ | ১৪:৩৫

রাশিয়ায় পড়ালেখা শেষ করে বছর তিনেক আগে দেশে ফেরেন শেফাত আকবর প্রত্যয় (৩৩) নামে এক যুবক। বিয়ে করেন। কিন্তু দম্পত্য জীবন সুখের ছিল না। পরবর্তীতে স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়। অনেকটা হতাশায় ছিলেন তিনি। শনিবার সকালে রাজধানীর পল্লবীর বাসা থেকে তার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘর থেকে রক্তাক্ত বটি জব্দ করা হয়। মরদেহের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে।

পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, হতাশা থেকে প্রত্যয় বটি দিয়ে গলা কেটে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি খুন হতে পারেন, এমন কোনো আলামত ওই বাসায় যাওয়া যায়নি। এরপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, পল্লবীর সি ব্লকের দুই নম্বর সড়কের পাঁচ নম্বর বাড়ির তৃতীয়তলায় মেস করে প্রত্যয়সহ ছয়জন থাকতেন। এক কক্ষে থাকতেন প্রত্যয়সহ দুই জন। অন্য কক্ষে চারজন। তিনি একটি বায়িং হাউজে চাকরি করতেন। গ্রামের বাড়ি যশোরের বেজপাড়ায়। রাশিয়া থেকে দেশে ফিরে বিয়ে করলেও পরবর্তীতে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। শনিবার সকালে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রত্যয়ের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় চারজন রুমমেট ওই বাসায় ছিলেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তারা গোঙানির শব্দ পেয়ে জেগে ওঠেন। এরপর উঠে যেতে যেতে প্রত্যয়ের রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান তারা। তাদের মধ্যে একজন ৯৯৯-এ ফোন করে বিষয়টি জানান। মরদেহের পাশে থেকে পাওয়া চিরকুট পাওয়া গেছে। হাতের লেখাটি তার বলে পরিবারের লোকজন নিশ্চিত করেছে। তাতে লেখা আছে–‘পৃথিবীতে আমিই একমাত্র গ্রহ, যার প্রাণ আছে। সেটাকে ধ্বংস করে ফেললাম। আল্লাহ তুমি আমাকে ক্ষমা করো।’ এ ছাড়াও জীবন নিয়ে অনেক হতাশার কথা লেখা আছে তাতে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।

পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম সমকালকে জানান, ডায়নিং রুমের বেসিনের সামনে থেকে প্রত্যয়ের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে–আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বটি দিয়ে গলা কাটেন তিনি। রক্ত ছিটকে পড়েছে আয়না ও বেসিনে। ওই বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা, চিরকুট ও প্রাথমিক তদন্তে আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। অবশ্য আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার পরিবারের লোকজন জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে প্রত্যয় মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। যশোরে এক মানসিক রোগের চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসাও নিচ্ছেলেন।

ওসি বলেন, ‘আমি ওই চিকিৎসকের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি। তিনি জানিয়েছেন, এ ধরনের রোগীর গলাকেটে আত্মহত্যা করার প্রবণতা থাকে।’

আরও পড়ুন

×