ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

মহিলা পরিষদের সভায় বক্তারা

নারীকে পিছিয়ে রাখতে ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে

নারীকে পিছিয়ে রাখতে ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৪:০২ | আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৪:০২

বাংলাদেশে নারীর প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। রাজনীতিবিদদের চিন্তা চেতনায় পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব আছে। বামদলগুলো নারী অধিকারে সোচ্চার হলেও ৩৩ শতাংশ নারীর উপস্থিতি দলে নিশ্চিত হয়নি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীকে পিছিয়ে রাখতে ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

শনিবার বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে বামদলীয় জোটের নারী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ‘নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন’ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় আলোচকরা এ সব কথা বলেন। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কার্যালয়ের আনোয়ারা বেগম মুনিরা খান মিলনায়তনে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। তিনি বলেন, লিঙ্গ সমতা ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন জরুরি। এটা করতে হবে রাজনৈতিক দলের নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করার মাধ্যমে। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প সবজায়গায় ছড়িয়ে যাচ্ছে। নারীকে দমিয়ে রাখতে ধর্মকে ব্যবহার করা হচ্ছে। 

আলোচনা সভায় বামদলীয় জোটের নারী নেত্রীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য মুর্শিদা আখতার নাহার, সিপিবির (বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি) কেন্দ্রীয় সদস্য লুনা নূর, গণসংহতি আন্দোলনের সদস্য তাসলিমা আখতার; শ্রমজীবী নারী মৈত্রীর সভাপতি বহ্নিশিখা জামালী। এ ছাড়াও সভায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, রাজনীতিতে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ ভালো হলেও নারীর অংশীদারিত্ব কম। রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতায়িত হতে হলে সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ করতে হবে।

আলোচকরা বলেন, একজন নারী ৩টি ওয়ার্ড নিয়ে নির্বাচন করেন যেখানে পুরুষ ১টি ওয়ার্ডে নির্বাাচন করে; তাদের সুযোগ সুবিধাও এক নয় যা বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গির বহি:প্রকাশ। রাজনৈতিক দলে ৩৩ শতাংশ নারীকে দলে রাখার বিধানটি কোনো দলই পূরণ করতে পারেনি। এ ছাড়াও মুক্তবুদ্ধির মানুষের ওপর আঘাত ও ধর্মান্ধতা নারীর ক্ষমতায়নের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

সভায় বামদলীয় জোটের নারী নেত্রীরা বলেন, সমাজে নারীর অবস্থান কি তা যাচাই করলে দেশের প্রকৃত অবস্থা স্পষ্ট হবে। অর্থ ও পেশিশক্তিকে বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচনের জন্য নারী প্রার্থীদের গুরুত্ব কম দেওয়া, ধর্মান্ধতা, মৌলবাদী সংগঠনের ওয়াজের মাধ্যমে নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক আলোচনা, দলের মধ্যে থাকা নারীদের ঐক্যবদ্ধ না থাকা, নারী রাজনীতিবিদদের প্রতি তাদের পরিবারের বিদ্বেষমূলক মনোভাব, নারীর স্বাধীনভাবে চলাফেরায় বাধা, সংরক্ষিত আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে যোগ্যতাকে গুরুত্ব না দিয়ে আর্থিক ও ক্ষমতাবান নারীকে প্রাধান্য দেওয়ার ফলে  রাজনীতিতে নারীর অগ্রগতিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে।

বক্তারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সকল নীতিমালা বা উদ্যোগ বাতিল এবং নারী উন্নয়ন নীতিমালা সংস্কার করে বাস্তবায়নের দাবি জানান। 

আরও পড়ুন

×