ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

প্রতিবন্ধীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের উপযোগি করতে হবে

প্রতিবন্ধীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের উপযোগি করতে হবে

ছবি: সমকাল

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২৩ | ১৩:৪৯ | আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৩ | ১৩:৪৯

সরকারের নানা পদক্ষেপ সত্ত্বেও ডিজিটাল সেবা শতভাগ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ব্যবহার উপযোগী (অভিগম্যতা) করা যায়নি। ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহারে প্রতিবন্ধীদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণেরও অভাব রয়েছে। তাদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হলে সরকারি ও বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানকেই এগিয়ে আসতে হবে। নয়তো ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অভিষ্ঠ লক্ষ্য পূরণ ব্যহত হতে পারে।

মঙ্গলবার জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত ‘প্রতিবন্ধিতা ও ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি: গণমাধ্যমকর্মীদের সচেতনতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট ও এটুআই এই সেমিনারের আয়োজন করে। জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) নূরুন নাহার হেনা’র সভাপতিত্বে সেমিনারে আলোচক ছিলেন এটুআই’র ন্যাশনাল কনসালট্যান্ট (অ্যাকসেসেবিলিটি) ভাস্কর ভট্টাচার্য এবং ডা. অজন্তা রাণী সাহা। আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ফায়জুল হক, পরিচালক (প্রশিক্ষণ প্রকৌশল) নজরুল ইসলাম, পরিচালক (প্রশাসন ও উন্নয়ন) এ. কে. এম আজিজুল হক, এটুআইয়ের ইয়াং প্রফেশনালস এমএম তারিকুল হক। গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠান) ড. মো. মারুফ নাওয়াজের সঞ্চালনায় সেমিনার সমন্বয় করেন উপপরিচালক সুমনা পারভীন ও সহকারী পরিচালক তানজিম তামান্না।

সভাপতির বক্তব্যে ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক নূরুন নাহার হেনা নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষায় গণমাধ্যমকর্মীদের সক্রিয় ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহবান জানান। তিনি বলেন, ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সাফল্যের ঘটনাগুলো গণমাধ্যমে যথাযথভাবে উপস্থান করা দরকার। তারাও সমাজের অংশ। সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে তাদেরকে সমাজের মূলধারায় আনতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নাগরিক হিসেবে আমাদেরকেও প্রতিবন্ধী ও তাদের পরিবারগুলোর পাশে সহমর্মিতার হাত প্রসারিত করতে হবে।’

এটুআইয়ের ন্যাশনাল কনসালট্যান্ট (অ্যাকসেসিবিলিটি) ভাস্কর ভট্টাচার্য নিজেও একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। তিনি সেমিনারে তাঁর বক্তৃতায় প্রতিবন্ধিতার সংজ্ঞা, ধারণা, মডেল, জাতীয় আইন ও আন্তর্জাতিক কনভেনশন, সফল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নাম, স্ক্রিন রিডিং সফটওয়্যার, অ্যাকসেসেবিলিটি টুল, মাল্টিমিডিয়া টকিং বই, অ্যাক্সেসযোগ্য অভিধান ও সাংবাদিক হিসাবে প্রতিবন্ধীদের জন্য করণীয় আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘সমাজ সেবা অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী দেশে ১২ ধরনের ৩২ লাখ প্রতিবন্ধী রয়েছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি।’

ডা. অজন্তা রাণী সাহা তার মেয়ের প্রতিবন্ধিতাকে উচ্চশিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কীভাবে জয় করেছেন তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘প্রতিবন্ধীদের প্রতিবন্ধী নামেই পরিচিত করতে হবে। এ নিয়ে সংকোচের কিছু নেই। আইনেও এখন প্রতিবন্ধীদের সুরক্ষার কথা বলা রয়েছে। গত এক দশকে সরকারের নানা পদক্ষেপের ফলে প্রতিবন্ধীরা এখন দেশের বোঝা নয়। তারা ক্রমশ দেশের মূলধারায় কর্মমুখী হয়ে উঠছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে এলে প্রতিবন্ধীদের আর ঘরের চার দেয়ালে থাকতে হবে না। তারা সামর্থ অনুযায়ী পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ভূমিকা রাখতে পারবে।’

সেমিনারে অংশগ্রহণকারী নানা ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা বলেন, সরকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহারে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। ভবিষ্যতে সব ডিজিটাল সেবা যেন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ব্যবহার উপযোগী হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

আরও পড়ুন

×