ঘুমের ওষুধের লেবেল বদলে তৈরি হতো নকল পেথিড্রিন

প্রতীকী ছবি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৪ | ২০:২৪
• ১০ টাকার ইনজেকশন বিক্রি হতো ৬০০ টাকায়
• প্রতারক চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার
ঘুমের ইনজেকশন জি-ডায়াজিপামের লেবেল বদলে চেতনানাশক জি-পেথিড্রিন নামে বাজারজাত করে আসছিল একটি অসাধু চক্র। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অনুসন্ধান চালিয়ে এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা হলেন– আলমগীর খাঁন, মাসুদ রানা ও আহসান হাবীব শাওন।
সোমবার বিকেলে মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কলোনি ও ভাটারার নদ্দা এলাকায় এ অভিযান চালায় ডিবি মতিঝিল বিভাগের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ দল। এ সময় নকল চেতনানাশক ইনজেকশন ও তৈরির উপকরণ জব্দ করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া সহকারী পুলিশ কমিশনার এরশাদুর রহমান জানান, মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কলোনির মসজিদ গেটের পাশের যাত্রী ছাউনির সামনে দুই ব্যক্তি ভেজাল জি-পেথিড্রিন নিয়ে অবস্থান করছে খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালানো হয়। পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পেরে পালানোর সময় আলমগীর ও মাসুদকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে জি-পেথিড্রিনের ৪০টি প্যাকেট জব্দ করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নদ্দা এলাকা থেকে আহসান হাবীবকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। তিনি স্বীকার করেন, মাসুদ রানার কাছ থেকে নকল জি-পেথিড্রিন সংগ্রহ করে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে আসছিলেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, আলমগীর স্বীকার করেছেন, উত্তর যাত্রাবাড়ীর একটি বাসায় তিনি নকল জি-পেথিড্রিন ইনজেকশন তৈরি করেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উত্তর যাত্রাবাড়ীর ফারুক রোডের বাসায় অভিযান চালিয়ে জি-পেথিড্রিন ইনজেকশন ২০০ পিস, জি-পেথিড্রিনের অ্যাম্পুল ২২০ পিস, জি-ডায়াজিপামের অ্যাম্পুল ১ হাজার ১০ পিস, জি-পেথিডিনের ফাঁকা বাক্স ৫২০ পিস, জি-পেথিডিনের স্টিকার ২০০ পিস, জি-পেথিডিন ফয়েল পেপার দুই রোল, জি-পেথিডিনের ব্যবহারবিধি দেড় হাজার পিস, জি-পেথিডিনের ফয়েল লাগানোর মেশিন একটি, পাঁচ কেজি এসিড, পাঁচটি স্ক্রীনপ্রিন্ট করার ফ্রেম ও জি-পেথিডিন রাখার প্লাস্টিকের ট্রে ২৫০ পিস উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এ বিষয়ে কথা বলেন ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সাধারণত অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে চেতনানাশক হিসেবে পেথিড্রিন ইনজেকশন ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই ভেজাল পেথিড্রিন প্রয়োগে নানা দুর্ঘটনার শঙ্কা থেকে যায়। ঘুমের ইনজেকশন কেনা ও লেবেল পাল্টাতে পিস প্রতি ৮-১০ টাকা খরচ হয়। এরপর নকল পেথিড্রিন তারা ৬০০ টাকায় বিক্রি করে আসছিল। এতে চক্রটির লাভ হত প্রতি পিসে প্রায় ৫৯০ টাকা।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিবিপ্রধান বলেন, ভেজাল ওষুধ বিক্রি করে একদিকে মুনাফা, অন্যদিকে রোগীদের ঝুঁকির মুখে ফেলেছে চক্রটি। মিটফোর্ডে কারা এসব ঘুমের ইনজেকশন বিক্রি করতো এবং কোন কোন স্থানে এসব প্যাথেডিন বিক্রি করা হচ্ছে এসব বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই পেথিড্রিন ইনজেকশন প্রয়োগে কেউ মৃত্যুঝুঁকিতে পড়েছে কিনা এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
- বিষয় :
- নকল ওষুধ বিক্রি
- গ্রেপ্তার