অনিয়মের অভিযোগ
তৃতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা পেল ডিএনসিসির পশুর হাটের ইজারা

ফাইল ছবি
লতিফুল ইসলাম
প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৫ | ২১:২২
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পশুর হাটের ইজারায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সংলগ্ন খালি জায়গার হাটটিতে সর্বোচ্চ দরদাতা দুই প্রতিষ্ঠানকে ইজারা না দিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। আর এসব অনিয়মের অভিযোগে সোমবার দুপুরে ডিএনসিসি নগর ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছে হাটের সর্বোচ্চ দরদাতা ইজারাদার জায়ান এন্টারপ্রাইজ।
মানববন্ধনে তারা অভিযোগ করেন, ‘ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সংলগ্ন খালি জায়গায় পশুর হাটটিতে জায়ান এন্টারপ্রাইজ সর্বোচ্চ দর দেয়। তবে করপোরেশন পিপিআর আইন ভঙ্গ করে তাকে হাটের ইজারা না দিয়ে তৃতীয় দরদাতাকে ইজারার জন্য নির্ধারণ করেছে।
করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ এপ্রিল ডিএনসিসি এলাকায় ১০টি পশুর হাটের ইজারা বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৯টি হাটের ইজারার দরপত্র বাক্স গত ১৮ মে উন্মুক্ত করে যাচাই-বাছাই শেষে গত শনিবার খিলক্ষেত মস্তুল সংলগ্ন হাটটি সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে সুরমি এন্টারপ্রাইজকে ১ কোটি ৫১ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়। তবে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সংলগ্ন খালি জায়গায় পশুর হাটটি সর্বোচ্চ দুই দরদাতাকে না দিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ দরদাতাকে ইজারা দেয় করপোরেশন।
সম্পত্তি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সংলগ্ন খালি জায়গায় পশুর হাটটির উন্মুক্ত ইজারায় মোট এগারজন ইজারা দর দাখিল করেন। হাটটির সরকারি মূল্য ছিল ৬৪ লাখ টাকা। আর এতে জায়ান এন্টারপ্রাইজ ২ কোটি ১৭ লাখ টাকা সর্বোচ্চ দর দাখিল করেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দর দাখিল করেন মেসার্স বিএম এন্টারপ্রাইজ ১ কোটি ৫১ লাখ টাকা। তবে সিটি করপোরেশনের যাচাই-বাছাই কমিটি সর্বোচ্চ দুই দরদাতাকে ইজারা না দিয়ে এস এফ কর্পোরেশনকে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকায় ইজারা দেয়। কারণ হিসেবে করপোরেশন উল্লেখ করেছে- প্রতিষ্ঠান দুইটির ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি, এছাড়া ভ্যাট ট্যাক্সও বাকি রয়েছে।
করপোরেশন সূত্র জানায়, ইজারা পাওয়া এস এফ কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে চলতি মাসের শুরুতে মিরপুর গাবতলী পশুর হাটের ইজারায় পে-অর্ডার জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছিল ডিএনসিসি। ওই হাটের বিজ্ঞপ্তিতে অংশ নিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ইজারা দর দেয় প্রতিষ্ঠানটি। তবে ইজারা যাচাই-বাছাইয়ের সময় অগ্রণী ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখা তাদের দুইটি পে–অর্ডারের মধ্যে একটির ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকার পে-অর্ডার সঠিক নয় বলে করপোরেশনকে জানায়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে পিপিআর অনুযায়ী প্রতারণার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি করপোরেশন।
এদিকে জায়ান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান সমকালকে বলেন, ‘পিপিআর নিয়ম অনুযায়ী করপরোশেনর অস্থায়ী পশুর হাটে শুধু জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি দিয়ে একজন ব্যক্তি ইজারায় অংশ নিতে পারেন। তবে আমি আমার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইজারায় অংশগ্রহণ করেছি। আমার প্রতিষ্ঠানটির ট্রেড লাইসেন্স নবায়নকৃত আর ভ্যাট ট্যাক্সও নিয়মিত পরিশোধ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, যেখানে অস্থায়ী হাটের ইজারায় সর্বোচ্চ দরদাতার কাগজপত্র নিয়ে সংশয় থাকলে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে করপোরেশনের যোগাযোগ করার কথা, সেখানে আমি কয়েকবার প্রশাসক, প্রধান নির্বাহী আর প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা কাগজপত্রের বিষয়ে কখনই কিছু বলেনি। অথচ গাবতলী পশুর হাটে পে-অর্ডার জালিয়াতি করা প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়ম অনুযায়ী ব্লাকলিস্ট না করে তাদেরকে ইজারা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান সমকালকে বলেন, ‘ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সংলগ্ন খালি জায়গায় উন্মুক্ত ইজারায় অংশগ্রহনকারী দু্ইটি প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স নবায়নকৃত না, আবার ভ্যাট ট্যাক্সও বাকি আছে। তাই তাদেরকে ইজারা না দিয়ে এসএফ কর্পোরেশনকে ইজারা দেওয়া হয়েছে।
- বিষয় :
- পশুর হাট
- ডিএনসিসি
- অনিয়মের অভিযোগ