শাহবাগে জামায়াতের সংবর্ধনায় আজহার
গলায় রশির পরিবর্তে ফুলের মালা পাচ্ছি

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পাওয়া জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম বুধবার মুক্তি পেয়েছেন। সকালে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে মুক্তির পর রাজধানীর শাহবাগে তাঁকে সংবর্ধনা দেন দলটির নেতাকর্মী। ছবি:
সমকাল ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৫ | ০৯:৪১
যে শাহবাগ থেকে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের দাবি জানানো হয়েছিল, সেখানে দলটির নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে সংবর্ধনা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ফাঁসির সাজা পাওয়া আজহার আপিল বিভাগ থেকে খালাস পেয়ে বলেছেন, গলায় রশির পরিবর্তে ফুলের মালা পাচ্ছি।
আগের দিন সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পর গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন এটিএম আজহার মুক্তি পান। ২০১৪ সালে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পর প্রায় ১০ বছর ফাঁসির আসামির কনডেম সেলে ছিলেন। ৫ আগস্টের পর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল মুক্তি পেয়ে শাহবাগ মোড়ে সংবর্ধনা মঞ্চে যান তিনি।
এ কারণে অফিস শুরুর সময়ে শাহবাগে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কর্মদিবসে শাহবাগ মোড় বন্ধ হওয়ায় আশপাশের সড়কে তীব্র যানজট এবং জনদুর্ভোগ হয়। সংবর্ধনা শেষে শাহবাগ থেকে হাজারো নেতাকর্মী, গাড়িবহরসহ মগবাজারে জামায়াত কার্যালয়ে যান দলটির সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল। এতে ওইসব সড়কেও যান চলাচল বিঘ্নিত হয়ে ভোগান্তি হয়।
শাহবাগে আজহারের সংবর্ধনা মঞ্চে ছিলেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান, নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, শফিকুল ইসলাম মাসুদ প্রমুখ। তারা এটিএম আজহারকে ফুল দিয়ে বরণ করেন।
২০১১ সালের ২২ আগস্ট গ্রেপ্তারের পর প্রায় ১৪ বছর কারাগারে থাকা এটিএম আজহার বলেন, অতীতে আদালতকে ব্যবহার করা হয়েছে। এখন আদালত জনগণের আশার প্রতীক হয়ে উঠেছে। যাদের কারণে মুক্তি পেয়েছি, সেই ৫ আগস্টের মহাবিপ্লবী নায়কদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। ছাত্রসমাজই রাজপথে রক্ত ঢেলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটিয়েছে।
তিনি বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অতীতে দণ্ডিত জামায়াত এবং বিএনপি নেতাদের জুডিশিয়াল কিলিং করা হয়েছে। যারাই এসব হত্যায় যেখানে যে পর্যায়ে জড়িত, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতের নেতৃত্বে নয়, ১৮ কোটি মানুষের সম্মিলিত চেষ্টায় স্বৈরাচার পতন হয়েছে। জাতির প্রয়োজনে এক থাকতে হবে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দণ্ডিত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পুত্র মাসুদ সাঈদী, মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে নাজিবুর রহমান মোমেন, আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ছেলে আলী আহমাদ মাবরুর, আবদুল কাদের মোল্লার ছেলে হাসান জামিলও সংবর্ধনা মঞ্চে ছিলেন।
- বিষয় :
- জামায়াত