ঢাকা মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫

মন্ত্রণালয়ে চাকরি দেওয়ার নামে কোটি টাকা হাতিয়েছেন তারা

মন্ত্রণালয়ে চাকরি দেওয়ার নামে কোটি টাকা হাতিয়েছেন তারা

প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তাররা -সমকাল

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২১ | ০৮:০৩

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তাদের নাম-পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে চাকরি দেওয়ার নামে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন দুই যুবক। টাকা নেওয়ার পর তারা চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিতেন। একপর্যায়ে ভুক্তভোগীরা বুঝতে পারতেন তারা প্রতারণার ফাঁদে পড়েছেন। এমন বেশ কিছু অভিযোগ পাওয়ার পর দুই প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) গুলশান বিভাগ।

গ্রেপ্তাররা হলো- দ্বীন ইসলাম ও নুরুল ইসলাম। রোববার রাজধানীর খিলক্ষেতের রাজউক ট্রেড সেন্টারের সামনে এ অভিযান চালানো হয়। তাদের কাছে পাওয়া গেছে হোম মিনিস্ট্রি লেখা দু'টি কার্ড, অফিস সহকারী পদের ভুয়া নিয়োগপত্র, ফিল্ড অফিসার পদে নিয়োগ পরীক্ষার ভুয়া প্রবেশপত্র, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের চারটি সিল, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ডায়েরি, পুলিশের মনোগ্রাম সম্বলিত ব্যাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের প্যাড ও দুই হাজার পিস ইয়াবা। সোমবার তাদের আদালতে হাজির করা হয়েছে।

ডিবি গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান সমকালকে বলেন, মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা পদোন্নতি পাওয়ার পর তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে যান দ্বীন ইসলাম। সেই ছবি ব্যবহার করে তিনি কর্মকর্তার ঘনিষ্ঠ পরিচয়ে প্রতারণা শুরু করেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভুয়া আইডি কার্ড বানিয়ে কম্পিউটার অপারেটর বনে যান। এরপর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে নিয়োগ দেওয়ার নামে অর্থ হাতিয়ে নেন।

ডিবি সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. হারুন অর রশিদ বিশ্বাস, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব আব্দুল্লাহ আল শাহীন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-সহকারী পরিচালক আবুল কালামের পরিচয় ব্যবহার করে লোকজনকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলা হত। তারা নিজেদের ওইসব কর্মকর্তার অধীনস্থ কর্মচারী হিসেবে পরিচয় দিতেন। কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার সুযোগ আছে জানিয়ে লোকজনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতেন তারা। ফায়ার সার্ভিস ও আনসার ব্যাটালিয়নে চাকরি দেওয়ার নামে বরগুনার আমিরুল ইসলাম ও তার ভাইয়ের কাছ থেকে তারা নেন ১৪ লাখ টাকা। এমন আরও বেশ কিছু ঘটনা রয়েছে। বিশ্বস্ততা অর্জন করতে মন্ত্রণালয়ের ভুয়া প্যাড বানিয়ে নিয়োগপত্রও তৈরি করে দিতেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে বরিশাল থেকে ঢাকায় আসেন দ্বীন ইসলাম। তখন থেকেই এক কর্মকর্তার মাধ্যমে সচিবালয়ে যাতায়াত শুরু করেন। এরপরই মন্ত্রণালয়ের কম্পিউটার অপারেটর সেজে ভুয়া নিয়োগ বাণিজ্য শুরু করেন। পাশাপাশি নিরপরাধ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি, তদন্ত প্রভাবিত করা ও অভিযোগপত্র বদলে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগও রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ঢাকা, গাজীপুর, বরিশাল ও বরগুনাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। ডিবি বলছে, এই চক্রে মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

×