ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা
ছাড় দিয়ে ক্রেতা টানছে আসবাবপত্রের কোম্পানি

সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৩ | ০৩:৩৯ | আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২৩ | ১১:২৩
ঢাকার পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় নানা কারুকার্যের আসবাবপত্রের পসরা সাজিয়েছে বিভিন্ন কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানগুলো মেলা উপলক্ষে তাদের পণ্যে ৮ থেকে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে। দরকষাকষিতে আরও বেশি ছাড় দিচ্ছে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান। একই সঙ্গে মেলায় পণ্যের অর্ডার দিলে গ্রাহকের বাড়িতে পণ্য পৌঁছে দেওয়ারও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। গ্রাহকের বাসা ঢাকায় হলে পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে কোনো চার্জ দিতে হচ্ছে না।
গতকাল রোববার মেলায় অংশ নেওয়া আসবাবপত্রের স্টল-প্যাভিলিয়নের প্রতিনিধিরা এসব তথ্য জানিয়েছেন। ফার্নিচারের স্টল-প্যাভিলিয়নে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। বিক্রয় প্রতিনিধিরা তাঁদের পণ্যের গুণগত মান, ডিজাইন ও দাম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাচ্ছেন ক্রেতাদের। সাধ ও সাধ্যের মধ্যে পছন্দের ফার্নিচার বেছে নিচ্ছেন ক্রেতারা। কোন প্রতিষ্ঠান কত ছাড় দিচ্ছে সে বিষয়েও নিচ্ছেন খোঁজখবর।
ঢাকার উত্তর বাড্ডা এলাকা থেকে স্ত্রী-পুত্র নিয়ে সোফা সেট কিনতে গতকাল মেলায় আসেন মামুনুর রশিদ নামে একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। সমকালকে তিনি বলেন, 'বাসাবাড়ি সাজাতে আসবাবপত্র প্রয়োজন। মেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নতুন ডিজাইনের আসবাব পণ্য দেখা ও যাচাইয়ের সুযোগ পাওয়া যায়। পছন্দমতো কেনা যায়। দেখেশুনে একটা সোফার অর্ডার দেব। পরে বাড্ডার আশপাশের শোরুম থেকে নিয়ে নেব।'
হাতিল, আখতার, নাভানা, পারটেক্সসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবার মেলায় তাদের পণ্য প্রদর্শন করছে। পণ্যের দামের ওপর ৮ থেকে ১৭ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে আখতার ফার্নিচার। মেলায় প্রতিষ্ঠানটির স্টলের বিক্রয় বিভাগের জুনিয়র এক্সিকিউটিভ জামাল উদ্দিন বলেন, গ্রাহকরা এখানে পছন্দ করে তাঁর আশপাশের এলাকার শোরুম থেকে একই ধরনের আসবাবপত্র কিনতে পারবেন। আখতারের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ডেল্টা ফার্নিচারও ১৫ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড় দিচ্ছে।
৫ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড় দিয়ে ক্রেতা টানছে হাতিল ফার্নিচার। প্রতিষ্ঠানটি বাসাবাড়িতে কক্ষের জায়গা সাশ্রয়ী খাট, সোফা কাম বেড, জায়গা সাশ্রয়ী ডাইনিং টেবিল এবং ওয়াল কেবিনেটসহ বিভিন্ন আধুনিক ফার্নিচার প্রদর্শন করছে মেলায়। এর মধ্যে বেড কাম সোফার দাম চাওয়া হচ্ছে ৪৭ হাজার টাকা। রকিং চেয়ার প্রায় ২৫ হাজার টাকা।
হাতিলের স্টলের সিনিয়র সেলস অ্যাসোসিয়েট রাজীব বাড়ৈ জানান, গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনা করেই আসবাবপত্রের ডিজাইন করা হয়। প্রতিবেশী ভারত, নেপাল ও ভুটান এবং অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে হাতিলের পণ্য রপ্তানি হয়। হাতিম ফার্নিচার মূল্যছাড় দিচ্ছে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত।
এ ছাড়া নাদিয়া ফার্নিচার ৮ থেকে ১৫, ব্রাদার্স ফার্নিচার ৫ থেকে ১৫, নাভানা ফার্নিচার ১০ থেকে ১৭, হাইটেক ফার্নিচার ৮ থেকে ১৫ এবং পারটেক্স ফার্নিচার ১০ থেকে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড়ের অফার দিয়েছে।
আসবাবপত্র খাতের উদ্যোক্তাদের তথ্যমতে, দেশে এ খাতের বাজার প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার মতো। দেশের চাহিদার প্রায় ৯৫ শতাংশই পূরণ করে স্থানীয় কোম্পানিগুলো। দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানিও হয় আসবাবপত্র।
গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ১১ কোটি ৩ লাখ ডলারের আসবাবপত্র রপ্তানি করা হয়েছে। তবে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রপ্তানি কিছুটা কম। রপ্তানি হয়েছে ৪ কোটি ৭ লাখ ডলারের, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৫ শতাংশ কম।
গত ১ জানুয়ারি থেকে ঢাকার পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) শুরু হয়েছে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ৯টা এবং ছুটির দিনে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলায় বেচাকেনা চলছে।