বাজার ওঠানামা করলেই লাভ করার সুযোগ বাড়ে

সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৩ | ১৮:০০
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, ‘শেয়ারবাজার যদি পিক-এ (সর্বোচ্চ উচ্চতায়) থাকে, বেশি ভালো অবস্থায় থাকে, তখন লাভ করার সুযোগ কমে যায়। বাজার ওঠানামা করলেই লাভ করার সুযোগ বাড়ে। আমরা এমনই একটা সক্রিয় শেয়ারবাজার দেখতে চাই। আমরা কখনোই চাইনি ফ্লোর প্রাইস থাকুক। ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও সংকটের সময়ে বাধ্য হয়ে মানুষ ও তাদের বিনিয়োগকে নিরাপত্তা দিতে এটা করা হয়েছে।’
ফ্লোর প্রাইসের কারণে বাজার আটকে আছে– এমন সমালোচনার জবাবে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা শিগগিরই একটু শক্ত অবস্থা দেখতে পেলেই যখন মনে করব মানুষের পুঁজির নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব, কেউ বিপদে পড়বে না, কখনও পুরোনো ইতিহাসের (ধস বা বড় পতন) পুনরাবৃত্তি হবে না, তখন সঙ্গে সঙ্গে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেব। এ জন্য আমরাও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, চেষ্টা ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।’ তবে কবে এমন সময় আসতে পারে– সে বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি।
বাজার ওঠানামা নিয়ে সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, ‘এ বাজারে একদল লোক হুজুগে, আরেক দল লোক গুজবে শেয়ার কেনেন। লাভ হলে সব ঠিক আছে। লোকসান হলেই দোষ দেন। এদের কী দিয়ে সুরক্ষা দেব। দায়িত্ব গ্রহণের গত তিন বছরে স্বাভাবিক পরিবেশ পাইনি। আবার ছয় মাস পরে জাতীয় নির্বাচন। এমন অবস্থার মধ্যেও বাজার যে ধরে রেখেছি, স্থিতিশীল রাখতে পারছি– এটা খুব কঠিন কাজ।’
তিনি বলেন, কেউ কেউ ফোন করে ভারত বা পাকিস্তান বা শ্রীলঙ্কার বাজার বেড়ে গেছে বলে জানান। শ্রীলঙ্কার বাজার এতটাই পড়ে গিয়েছিল যে, তার ভালো করা ছাড়া অন্য কিছু করার ছিল না। সুতরাং ওইসব তুলনা করে লাভ নেই। বাজার একটু পড়ে গেলে তিরস্কার করেন। কিন্তু এটা ভাবেন না, অনেক দেশের মতো এ বাজার হঠাৎ বেড়ে বা কমে যাচ্ছে না।
মানুষ যাতে আস্থার জায়গা খুঁজে পায়, বিনিয়োগ করে স্বস্তি পায় এবং নিশ্চিন্তে থাকে– সে রকম পরিবেশ তৈরির চেষ্টা চলছে জানিয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘তদন্ত করে দেখেছি, আগে আইপিওতে আসা অনেক কোম্পানি বন্ধ। বিল্ডিং আছে, ফ্যাক্টরি আছে, কিন্তু উৎপাদন বন্ধ। এসব কোম্পানি কিন্তু নিজের বা শ্রমিকের জন্য বন্ধ হয়নি।’
তিনি বলেন, কোম্পানি বন্ধ হয় ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও পর্ষদের দোষে। এভাবে কোম্পানিগুলো বন্ধ থেকে জাতীয় সম্পদ নষ্ট হচ্ছে দেখে ৬০-৭০টি কোম্পানি নিয়ে কাজ করছেন তারা। এরই মধ্যে ১০-১৫টি চালু হয়েছে। আরও ২০টি চালুর পথে। এতে প্রায় ২০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে বা হবে। কোম্পানিগুলো খেলাপি অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসেছে। বিনিয়োগকারীরা বছরের পর কিছু পাচ্ছিলেন না, তারাও কিছু পাচ্ছেন।
সেমিনারে ডিএসইর চেয়ারম্যান ড. হাফিজ মো. হাসান বাবু বলেন, দেশের শেয়ারবাজারের মূল অসুবিধা হলো– তারল্য সংকট, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কম ও বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা। সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেন, দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য শক্তিশালী শেয়ারবাজার দরকার।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সিএমএসএফের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, রেস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির সিইও হাসান ইমাম, এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান তমাল পারভেজ। সভাপতিত্ব করেন ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মৃধা এবং সঞ্চালনা করেন ইআরএফ সম্পাদক আবুল কাশেম।