ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

ঢাকা চেম্বারের আলোচনায় শাস্তির সুপারিশ

অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যমূল্য বাড়াচ্ছে

অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যমূল্য বাড়াচ্ছে

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৩ | ২১:১৮ | আপডেট: ২৩ আগস্ট ২০২৩ | ২১:১৯

শুধু আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাবেই পণ্যমূল্য বাড়ছে তা নয়, অসাধু ব্যবসায়ীরাও এখনকার উচ্চ মূল্যস্ফীতির জন্য দায়ী। ভোক্তারা তাদের অপতৎপরতার শিকার হচ্ছেন। বুধবার ঢাকা চেম্বার আয়োজিত ‘বেসরকারি খাত এবং সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় সুসংহতকরণ’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা এমন মত দেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার বলেন, বাজারের অব্যবস্থাপনার কারণে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনায় উদ্যোক্তারা যেমন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন, তেমনি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও মান হ্রাসের ফলে ভোক্তারা মানসম্মত পণ্য প্রাপ্তিতে বঞ্চিত হন। তিনি ব্যবসায়ীদের হয়রানিমুক্ত ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা এবং ভোক্তা অধিকার সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও সচেতনতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন। ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে বেসরকারি খাত এবং সরকারি সংস্থার মধ্যকার সমন্বয় একান্ত আবশ্যক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে সহায়ক নীতিমালা নিশ্চিত করা একান্ত অপরিহার্য। ব্যবসায়িক কাজে প্রয়োজনীয় ‘স্যাম্পল’ ছাড় করাতে যদি সময় বেশি লাগে, তাহলে ব্যবসা চলে যাবে ভিয়েতনামসহ প্রতিযোগী অন্যান্য দেশে। তিনি আরও বলেন, যারা ব্যবসা পরিচালনায় অসাধু পন্থা অবলম্বন করছেন, তাদের শনাক্ত করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। মেয়র আতিক বলেন, উত্তর সিটি করপোরেশন আওতাভুক্ত অঞ্চলের জন্য ট্রেড লাইসেন্সপ্রাপ্তি সেবা অনলাইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে, যা উদ্যোক্তাদের সময় ও ব্যয় হ্রাসে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।

বিশেষ অতিথি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, তেল-চিনিসহ বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের স্থানীয় চাহিদা আমদানির মাধ্যমে মেটাতে হয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের মূল্যের অস্থিতিশীলতার কারণে দেশীয় বাজারে তার প্রভাব রয়েছে। তবে স্থানীয় বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতার কারণেও আমাদের পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে ভোক্তারা মূল্যস্ফীতির শিকার হচ্ছেন। বাণিজ্য সচিব বলেন, ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় সরকারের কিছু নীতিমালা ও নিয়ম রয়েছে, যা ব্যবহারে উদ্যোক্তারা আরও বেশি হারে সচেতন হলে হয়রানিসহ অনেক ক্ষেত্রে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব।

বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের মাঝে দূরত্ব নিরসন করা দরকার।

এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ব্যবসা পরিচালন ব্যয় কমাতে সক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। কৃত্রিমভাবে পণ্যের সংকট তৈরি করা ও মূল্য বৃদ্ধিকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, অসাধু চক্রের কারণে সৎ ও সত্যিকারের ব্যবসায়ীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন, যা রোধে সবার যৌথ ও সমন্বিত উদ্যোগ একান্ত অপরিহার্য।

ক্যাবের কোষাধ্যক্ষ ড. মো. মনঞ্জুর-ই খোদা তরফদার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের মধ্যকার ‘ইকো-ফ্রেন্ডলি বিজনেস এনভায়রনমেন্ট’ নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক মেহেদী হাসান বলেন, এ অধিদপ্তর থেকে দোকান পরিদর্শন করা হলে মূলত ২৫টি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। বর্তমানে অনলাইনেই কলকারখানা অধিদপ্তরের লাইসেন্স প্রাপ্তি সম্ভব।

আরও পড়ুন

×