ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

সবুজ কারখানা শেয়ারবাজারে আনতে চায় ডিএসই

সবুজ কারখানা শেয়ারবাজারে আনতে চায় ডিএসই

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ২১:৪৭ | আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ২১:৪৭

পরিবেশবান্ধব গ্রিন ফ্যাক্টরি বা সবুজ কারখানাগুলোকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। বর্তমানে দেশের সিংহভাগ গ্রিন ফ্যাক্টরি রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের হওয়ায় এ খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইর সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি করতে যাচ্ছে স্টক এক্সচেঞ্জটি।

ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার সমকালকে বলেন, চলতি মাসেই বিজিএমএইর সঙ্গে ডিএসইর সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হতে পারে। তিনি জানান, দেশের শেয়ারবাজারে ভালো মানের কোম্পানির তালিকাভুক্তি কমে গেছে। যদিও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চাহিদা আছে। সবুজ কারখানাগুলোকে শেয়ারবাজারে আনা গেলে বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগ আসবে। অনেক বিদেশি ফান্ড আছে, যেগুলো শুধু পরিবেশবান্ধব টেকসই কারখানায় মূলধনি শেয়ার বা বন্ডে বিনিয়োগ করে থাকে। এতে দেশেরও ব্র্যান্ডিং হবে।

যেসব কারখানা পরিবেশ দূষণ ন্যূনতম পর্যায়ে এনে উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা, বিশেষত উৎপাদন পর্যায়ে কার্বন নিঃসরণ কম করে এবং প্রাকৃতিক শক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে প্রথাগত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয় করে, সেগুলো গ্রিন ফ্যাক্টরি হিসেবে পরিচিত। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) এ ধরনের কারখানা বা ভবনকে ‘লিড’ (লিডারশিপ ইন এনার্জি এনভায়রনমেন্ট ডিজাইন) সনদ দিয়ে থাকে।

তৈরি পোশাক শিল্পে ইউএসজিবিসি থেকে সর্বাধিক রেটিং প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ময়মনসিংহের গ্রিন গার্মেন্ট। এটিসহ এ খাতে বিশ্বের শীর্ষ ২৭ কারখানার মধ্যে ১৪টিই বাংলাদেশের। দেশীয় বেসরকারি কারখানাগুলোর মধ্যে ২০১১ সালে প্রথম লিড সনদ পায় এপিক গ্রুপের সাভারের আশুলিয়ার কসমোপলিটন ইন্ডাস্ট্রিজ। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৮৭টি লিড সনদপ্রাপ্ত কারখানা রয়েছে।

ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত এমডি আরও বলেন, সব গ্রিন ফ্যাক্টরি হয়তো শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে চাইবে না। কারণ অনেক উদ্যোক্তা তার প্রতিষ্ঠানে নতুন অংশীদার নিতে চান না। কিন্তু এ ধরনের উদ্যোক্তারা কারখানা সম্প্রসারণে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে থাকেন। তারা চাইলে বন্ড ইস্যু করে শেয়ারবাজার থেকে অর্থায়ন করতে পারেন। স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে এসব বিষয়ে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।

বিজিএমইএ এ ক্ষেত্রে কী ভূমিকা পালন করবে– এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহে আগ্রহী প্রতিষ্ঠান বা কারখানাকে স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিতে সহায়তা করবে। এর বাইরে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতেও কাজ করবে। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পরই বিজিএমইএ কার্যালয়ে এ বিষয়ে একাধিক সভা ও কর্মশালার আয়োজন করা হবে।

ডিএসইর অন্য এক কর্মকর্তা জানান, দেশের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা অনেকের মধ্যে ভুল ধারণা আছে যে শেয়ারবাজার বুঝি ‘রাতারাতি পয়সা কামানোর জায়গা’। শেয়ারবাজার প্ল্যাটফর্ম যে টেকসই অর্থায়ন ও নিজের ব্র্যান্ডিংয়েরও জায়গা, সে বিষয়ে অনেকে সচেতন নন। এ বার্তা ব্যবসায়ীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার চিন্তা থেকে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, দেশে আড়াই লক্ষাধিক কোম্পানি নিবন্ধিত হলেও শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি চারশও নয়। অথচ এ বাজারে বৃহৎ শিল্প বা ট্রেডিং কোম্পানির তালিকাভুক্ত হওয়ার সুযোগ আছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তির জন্য পৃথক প্ল্যাটফর্ম আছে। যে কোনো কোম্পানি তালিকাভুক্ত না হয়েও শুধু মালিকানা বদল বা শেয়ার হস্তান্তরের জন্য অলটারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড-এটিবি নামে পৃথক প্ল্যাটফর্ম হয়েছে। আগে কার্যকর বন্ড বাজার না থাকলেও এখন বন্ড বাজারটিকেও কার্যকর করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

×