প্রণোদনা নয়, ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ দিন: সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর

অর্থনীতিবিদ সম্মেলনে অতিথিরা। ছবি: সংগৃহীত
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ২০:০২
রপ্তানি বাণিজ্যে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে সরকারের কাছে ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিৎ করার অনুরোধ জানিয়েছেন বিশিষ্ট উদ্যোক্তা অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর। তিনি বলেছেন, ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ দিন, প্রণোদনার দরকার নেই।
আজ রোববার ঢাকায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক অর্থনীতিবিদ সম্মেলনের শেষ দিনে ‘বাংলাদেশের রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণের চ্যালেঞ্জ এবং কাঠামোগত রুপান্তর’ শিরোনামে এক অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনোমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন এতে সভাপতিত্ব করেন। প্যানেল আলোচক ছিলেন গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান ড. জায়েদী সাত্তার, বসরকারি খাতবিষয়ক বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান বিশেষজ্ঞ ড. সৈয়দ আক্তার মাহমুদ। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনোমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান। সানেম সপ্তমবারের মত ঢাকায় এ সম্মেলেনের আয়োজন করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে তিন দিনের এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। সম্মেলনে এবারের প্রতিপাদ্য ‘নিউ ফ্রন্টিয়ার্স ইন ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ইমার্জিং ডাইনামিকস’।
বর্তমান ব্যবসা পরিবেশের বাস্তবতা তুলে ধরে সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, গ্যাসের দাম বেড়েছে ৪০০ শতাংশ, টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ। শ্রমিকদের মজুরি বেড়েছে। পণ্য পরিবহন ব্যয় বেড়েছে। এসব কারণে শেষ পর্যন্ত পণ্যের উৎপাদন ব্যয় অনেক বেড়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সক্ষমতায় বাড়াতে উৎপাদন ব্যয় কমানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। দক্ষ শ্রমিক নেই। মধ্যম পর্যায়ে ব্যবস্থাপনায় আছে দুর্বলতা। সবাই বিসিএস অফিসার হতে চায়। অফিসে কাজ করতে চায়। কারখানায় কেউ কাজ করতে চায় না। দরকার হচ্ছে টি-লেভেল, অর্থাৎ টেকনোলজির কর্মী। আছে এ লেভেলের কর্মকর্তা। বহুদিন ধরে শিল্পের সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক উন্নয়নের কথা বলা হচ্ছে। বাস্তবে কিছুই হচ্ছে না।
সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, ভালো ভালো নীতি আছে, পেপার আছে। প্রয়োজন শুধু বাস্তবায়নের। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিলে রপ্তানিতে সক্ষমতায় অনেক দূর এগিয়ে যাবে দেশ।
মূল প্রবন্ধে ড. সেলিম রায়হান বলেন, কাঠামোগত সংস্কার না হলে রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আসার কোনো সুযোগ নেই। আর রপ্তানিতে বৈচিত্র্য না আসলে বর্তমানের নির্দিষ্ট কয়েকটি পণ্যের উপর ভর করে প্রতিযোগিতায় টেকা সহজ হবে না। এ বাস্তবতায় মধ্যম আয়ের দেশের ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ নেই। ইতিহাসে এরকম নজির নেই। ভালো নীতি থাকা সত্বেও বাস্তবায়ন না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারের সবগুলো পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বেশ ভালো নীতি নেওয়া আছে। তবে এগুলো বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ নেই।
সানেমের এবারের অর্থনীতিবিদ সম্মেলন আয়োজনে সহযোগিতা দিয়েছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশন। তিনি দিনে মোট ১৬টি অধিবেশনে ১১ দেশের অর্থনীতিবিদ, গবেষক, উন্নয়নকর্মী এবং শিক্ষার্থীরা গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন।
- বিষয় :
- সানেম