ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

শেয়ারবাজার 

দরপতন আর বাড়েনি, সূচকের পতন কমেছে খানিকটা

দরপতন আর বাড়েনি, সূচকের পতন কমেছে খানিকটা

ফাইল ছবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪ | ১৩:৩৮ | আপডেট: ১৫ মে ২০২৪ | ১৩:৪০

ফের লাগাতার দরপতনের কবলে শেয়ারবাজার। দরপতন দীর্ঘায়িত হতে পারে- এমন আতঙ্কে শেয়ার বিক্রি করছেন বিনিয়োগকারীরা। এতে ভালো বা মন্দ, সব ধরনের শেয়ার দর হারাচ্ছে। তবে গত কয়েকদিনের দরপতনের পর বুধবার দিনের লেনদেনের শুরুতে যে হারে দরপতন শুরু হয়েছিল, তা কমে এসেছে।

সকাল ১০টায় দিনের লেনদেন শুরুর ৩৪ মিনিট পর সিংহভাগ শেয়ারের দরপতনে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স গতকালের তুলনায় ৭০ পয়েন্ট হারিয়ে ৫৫১৫ পয়েন্ট পর্যন্ত নেমেছিল।

তবে দুপুর ১টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় সূচকটি ৪৪ পয়েন্ট হারিয়ে ৫৫৪০ পয়েন্টে অবস্থান করতে দেখা যায়।

আগের ছয় কার্যদিবসের মধ্যে পাঁচদিনের দরপতনের পর আজ বুধবারও লেনদেন শুরু হয়েছিল বড় দরপতনে। 

আরও পড়ুন: এক ঘণ্টাতেই সূচক হারাল ৬৬ পয়েন্ট, আতঙ্কে বিনিয়োগকারীরা

সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর এক ঘণ্টা না পেরোতোই শতাধিক শেয়ার ক্রেতা শূন্য হয়েছিল। তবে ক্রেতা শূন্য শেয়ারগুলোর অধিকাংশই দুর্বল মৌলভিত্তির। দুপুর ১ টায় ক্রেতা শূন্য শেয়ার সংখ্যা ৭০টিতে নেমে আসতে দেখা গেছে।

দুপুর ১টায় প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে ৮০ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছিল। বিপরীতে দর হারিয়ে কেনাবেচা হচ্ছিল ২৬২টি শেয়ার এবং অপরিবর্তিত অবস্থায় ছিল ৫২টি। 

আজকের লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় প্রায় সোয়া তিনশ কোম্পানি দর হারিয়েছিল। 

এদিকে দরপতনে লেনদেনও কমেছে। টাকার অঙ্কে আজ লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ১৫৩ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল। এর দুই ঘণ্টা শেষে তা মোট ৩৬৫ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। এ লেনদেন গতকালের তুলনায় কম। গতকাল একই সময়ে ৪৯৭ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল।

চলতি এই দরপতনের কোনো কারণ জানা নেই বলে জানিয়েছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম।

তবে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ১৩ বিলিয়নের ঘরে নেমেছে এবং প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ কত, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজে থেকে কোনো তথ্য প্রকাশ করছে না- গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশের পর গতকাল লাগাম ছাড়া দরপতন হয়।

এরপরই ‘ফের বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ হ্যাক হয়েছে’ মর্মে- মঙ্গলবার ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে প্রকাশ করে। এ খবরেরও একটি নেতিবাচক প্রভাব শেয়ারবাজারে পড়ছে বলে অনুমান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শীর্ষ এক ব্রোকারেজ হাউসের সিইওর।

তিনি জানান, ভারতীয় গণমাধ্যমটির খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি এই হ্যাকের ঘটনা ঘটেছে। এতে বাংলাদেশ ব্যাংক কয়েক বিলিয়ন ডলার হারিয়েছে। ভারতীয় হ্যাকার এ হ্যাকের ঘটনায় জড়িত কি-না, তা নিয়ে ওই প্রতিবেদনে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়।

তবে গতকালই বাংলাদেশ ব্যাংক এ খবরকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তারা বলেন, ঘটনা সত্য বা মিথ্যা হোক, এ ধরনের নেতিবাচক খবর শোনার পর বিনিয়োগকারীরা প্রথমে শেয়ার বিক্রি করেন। এটা দরপতনকে ‍উস্কে দেয়। 

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমলে আমদানি-রপ্তানি ব্যাহত হবে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যার প্রভাব পড়বে তালিকাভুক্ত কোম্পানির আয় ও মুনাফায়- এমন ভাবনা থেকে সর্তকতা হিসেবে বিনিয়োগকারীদের একটা অংশ বিনিয়োগে সর্তকতা অবলম্বন করছেন বলে মনে হচ্ছে- এমন মত আরও কিছু ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ কর্মকর্তাদের। অনেকে আবার দরপতন দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা করে আগাম শেয়ার বিক্রি করছেন। এতে দরপতন বাড়ছে বলে অনুমান ওই ব্রোকারেজ হাউস কর্মকর্তারা।

তবে দরপতন ঠেকাতে তৎপরতা শুরু করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিসহ সংশ্লিষ্টরা। এতে দরপতনের হার আর বাড়েনি। 

দরপতন রুখতে বিএসইসি ইতিপূর্বে সব শেয়ারের দরে ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন দর সীমা আরোপ করে রেখেছিল। গত জানুয়ারি শেষে তা প্রত্যাহার করে নেয়।

তবে দুই সপ্তাহ না যেতেই ফের দরপতন শুরু হলে শেয়ারদরের সার্কিট ব্রেকারের নিম্নসীমা ৩ শতাংশে বেধে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। এতে এখন কোনো শেয়ারের দর একদিনে ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারছে না।

গতকাল পর্যন্ত সর্বশেষ ছয় কার্যদিবসের মধ্যে পাঁচ দিনের দরপতন হয়েছিল। এতে ডিএসইএক্স সূচকটি ১৪৪ পয়েন্ট হারিয়েছিল। এর মধ্যে গতকালই হারিয়েছিল ৮১ পয়েন্ট।

আরও পড়ুন

×