ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

সহায়তার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংককে বাস্তবায়নযোগ্য শর্ত দেওয়ার আহ্বান অর্থ উপদেষ্টার

সহায়তার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংককে বাস্তবায়নযোগ্য শর্ত দেওয়ার আহ্বান

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ- ফাইল ছবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৪:৩৮ | আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৬:৩২

চলমান ঋণ সহায়তার পাশাপাশি বাজেট ও ব্যাংক খাতের তারল্য সংকট থেকে উত্তরণে বিশ্বব্যাংকের কাছে অর্থ সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। একই সঙ্গে সহায়তার জন্য যেসব শর্ত দেওয়া হবে, সেগুলো যেন বাস্তবায়নযোগ্য হয়।

আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া দপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক ম্যাথিউ এ. ভারজিসের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

তিনি বলেন,

আজকে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে একটা নিয়মিত ও ধারাবাহিক আলোচনা হয়েছে। বিশ্বব্যাংক হচ্ছে আমাদের সবচেয়ে বড় ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান। তাদের কাছ থেকে আর্থিক ও কারিগরি সাহায্য চেয়েছি।

‘আমাদের সংস্কারগুলোর জন্য সহায়তা দরকার, সহসা একটা বাজেট সাপোর্ট দরকার। লিকুইডিটি সাপোর্ট চেয়েছি। ওরা দিতে সম্মত হয়েছে। আমি চলমান প্যাকেজের বাইরে বাড়তি কিছু সাহায্য চেয়েছি। ওরাও দিতে সম্মত হয়েছে। মোটামুটি ইতিবাচক। ওরা বেশ খোলা মনে আলোচনা করেছে,’ বলেন উপদেষ্টা।

সরকারের পক্ষ থেকে সর্বমোট দুই বিলিয়ন ডলার সাহায্য চাওয়া হয়েছে বলে এক সাংবাদিক উল্লেখ করলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি বিলিয়ন বা টাকার অংকের কথা বলবো না। এই বছরের জন্য তারা একটা বাজেট সহায়তা দেবে। আমরা আরও কিছু এক্সপেক্ট করেছি। কী কী প্রকল্প আমরা নেবো, সে অনুযায়ী সেটা চূড়ান্ত হবে।’

বিশ্বব্যাংক ঋণের সঙ্গে কোনো শর্ত দিচ্ছে কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, ‘শর্ত নয়, আমাদেরকে কতগুলো একশন নিতে হবে। আমরা বলেছি যে, ওটা যেন বাস্তবায়নযোগ্য হয়। এমন একশন নেওয়া যাবে না, যেটা আমাদের পক্ষে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। এবং পরে টাকাও দেবে না। তাহলে তো হবে না। আমরা সোজাসুজি বলেছি যে, আমাদের সংস্কারের জন্য যেসব বিষয় বাস্তবায়ন যোগ্য হয় সেধরনের একশন যেন আমাদের দেওয়া হয়।’

আর্থিক খাত সংস্কারে বাংলাদেশকে বিশ্ব ব্যাংক এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলারের ঋণসহায়তা দেবে। এর মধ্যে পলিসি বেসড লোন হিসেবে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার এবং ইনভেস্টমেন্ট লোন ও গ্যারান্টি ফ্যাসিলিটি হিসেবে ২৫০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা দেওয়া হবে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বিশ্ব ব্যাংকের বোর্ডে এ ঋণ অনুমোন হওয়ার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তরফে এভাবে বলা হচ্ছে বলে অর্থ উপদেষ্টাকে জানালে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বললে বলেছে। সে বিষয়ে আমি আর কিছু বলছি না।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, ঋণ পেতে তিনটি শর্ত পালন করতে হবে বাংলাদেশকে। বেসরকারি খাতে অ্যাসেস ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি করা, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে খেলাপি ঋণের নতুন সংজ্ঞায়ন করা, নতুন গঠিত টাস্কফোর্সের অডিট ফার্মের কার্যবিবরণী বিশ্বব্যাংকে উপস্থাপন করা।

উল্লেথ্য, আওয়ামী লীগ সরকার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রধান যে সমস্যা বা চ্যালেঞ্জগুলো রেখে গেছে এর মধ্যে আর্থিক দুর্দশা অন্যতম। ব্যাংকে রিজার্ভ বা বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন এখন ২০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে যা দুবছর আগের তুলনায় অর্ধেকেরও কম। পাশাপাশি বিদ্যুৎ-জ্বালানি আমদানি, মেগা প্রকল্পগুলোর জন্য চীন, রাশিয়া ও অন্যান্য দাতা সংস্থাগুলোর ঋণের কিস্তি পরিশোধের চাপ রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দাতাদের সঙ্গে নতুন ঋণ নিয়ে একের পর এক বৈঠক চলছে। পাশাপাশি চীন ও রাশিয়ার ঋণের সুদহার পর্যালোচনা করছে ড. ইউনূসের সরকার।

আরও পড়ুন

×