ইউটিলিটি বিল পেমেন্টে সবচেয়ে জনপ্রিয় বিকাশ

.
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৪ | ০০:১৬
একসময় বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যাংকের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতেন বেসরকারি চাকরিজীবী বাকের চৌধুরী। কর্মব্যস্ত জীবন থেকে সময়টুকু বের করতে কখনও হয়তো অফিস থেকে ছুটি নিতে হতো, নয়তো নির্ভর করতে হতো বাসার সহকারীর ওপর। এমন অবস্থায় তাঁর জীবনে আক্ষরিক অর্থে স্বস্তি নিয়ে এলো দেশের বৃহত্তম মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ। কেননা, এখন নিজের ফোন থেকেই যে কোনো সময়ে বিল পরিশোধ করতে পারছেন তিনি।
বাকের চৌধুরী বলেন, ‘গত কয়েক বছরে বিদ্যুৎ বিলসহ অন্য সব ইউটিলিটি সেবার বিল পরিশোধে আমার কাছে ভরসার নাম বিকাশ। বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে বিল পরিশোধ করা যায় খুব সহজে এবং পুরো প্রক্রিয়া বেশ স্বচ্ছ। বিল পরিশোধ করার সঙ্গে সঙ্গে ডিজিটাল রিসিট মোবাইলেই চলে আসে। আবার দিনে-রাতে যে কোনো সময় বিল দেওয়ার সুযোগ থাকায় ডেডলাইন মিস হওয়ার ভয়ও থাকে না।
সারাদেশে বাকের চৌধুরীর মতো বিকাশের মাধ্যমে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, ইন্টারনেট, টিভির মতো ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করছেন বহু গ্রাহক। সম্প্রতি বিদ্যুৎ বিভাগের এক জরিপেও উঠে এসেছে ইউটিলিটি বিল পেমেন্টের মাধ্যম হিসেবে বিকাশের জনপ্রিয়তার কথা। জরিপে দেখা যায়, দেশের ৬৮ দশমিক ৩২ শতাংশ গ্রাহক বিভিন্ন ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে পোস্ট-পেইড বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেন। শুধু বিকাশের মাধ্যমেই পোস্ট-পেইড বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেন ৬১ দশমিক ১১ শতাংশ গ্রাহক। এ ছাড়া ১৮ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ গ্রাহক বিদ্যুৎ অফিসে এবং ১৪ দশমিক ২৬ শতাংশ গ্রাহক অন্যান্য এমএফএস সেবার মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে থাকেন।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পাওয়ার ডিভিশনের অধীন পাওয়ার সেলের উদ্যোগে ‘ব্যবহারপূর্বক মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের পরামর্শসহ গ্রাহক সন্তুষ্টি’ শীর্ষক জরিপটি পরিচালনা করা হয়। উন্নয়ন সংস্থা মাইডাস জরিপটি করে। চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, রংপুর, খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির ১৫ হাজার ২৪৫ জন গ্রাহকের ওপর জরিপ চালানো হয়।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৫২ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ গ্রাহক প্রি-পেইড বিদ্যুতের মিটার এবং ৪৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ পোস্ট-পেইড মিটার ব্যবহার করেন। ৬৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ মোবাইল বা অনলাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেন। জরিপে উত্তর দেওয়া ৯৯ দশমিক ১২ শতাংশ গ্রাহক এমএফএস ও অনলাইনে বিল পরিশোধে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। এ সেবাকে নিয়ে ৪৬ দশমিক ৫ শতাংশ গ্রাহক ‘ভালো’, ২৯ দশমিক ৫ শতাংশ ‘খুব ভালো’ এবং ২৩ দশমিক ১ শতাংশ গ্রাহক সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
জরিপে আরও দেখা গেছে, অনলাইনে বিল দেওয়া বর্তমানে অনেক আধুনিক ও নিরাপদ একটি সেবা, যা আগের চেয়ে অনেক সহজ এবং গ্রাহকরা ঘরে বসেই পেমেন্ট করতে পারছেন। গ্রাহকরা যাতে ঘরে বসেই নির্বিঘ্নে বিল পরিশোধ করতে পারেন, সে বিষয়ে ইউটিলিটি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় জরিপে।
কেবল ইউটিলিটি বিলই নয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফি, বিভিন্ন সরকারি ফি, ক্রেডিট কার্ডের বিলসহ বিভিন্ন সেবার বিল বিকাশের মাধ্যমে পরিশোধ করার সুবিধা গ্রাহকের জীবনকে করেছে সহজ ও গতিশীল। প্রয়োজনের মুহূর্তে বিল পরিশোধের জন্য বিকাশে পর্যাপ্ত ব্যালান্স না থাকলেও কোনো সমস্যায় পড়তে হয় না বিকাশ অ্যাপের ‘অ্যাড মানি’ সেবার কল্যাণে। কেননা, দরকারের সময় গ্রাহক তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অথবা ভিসা, অ্যামেক্স বা মাস্টারকার্ড থেকে নিমেষেই টাকা ট্রান্সফার করতে পারেন বিকাশ অ্যাকাউন্টে। আবার বিকাশ অ্যাপে আছে ‘অটো পে’ সুবিধা, যা সেট করে রাখলে নির্দিষ্ট ইউটিলিটি বিলের ক্ষেত্রে নির্ধারিত তারিখে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পেমেন্ট হয়ে যায়। এই সেবা চালু করে রাখলে ডেডলাইন মিস হওয়ার ঝুঁকি এড়ানো যায় খুব সহজেই।
- বিষয় :
- বিল পাস