ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

সুন্দরবনে বিষ প্রয়োগে মাছ শিকার

সুন্দরবনে বিষ প্রয়োগে মাছ শিকার

মুহাম্মদ শফিকুর রহমান

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২২ | ১২:০০

সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে প্রবহমান ছোট-বড় ৪৫০টি নদ-নদী ও খাল-বিল আছে। প্রায় ৪০০ প্রজাতির মাছ ও জলজপ্রাণীর বসবাস এখানে। সাপই আছে ২৫ প্রজাতির। ২১৫ প্রজাতির পাখির ডাকে মুখরিত হয় সুন্দরবন। এক কথায় সুন্দরবন আমাদের এক অমূল্য সম্পদ। অর্থনীতি, পরিবেশগত সব মাপকাঠিতে এই ম্যানগ্রোভ বনের বিশাল ভূমিকা রয়েছে। প্রচণ্ড বেগে ছুটে আসা ঝড়-ঝঞ্ঝার সঙ্গে লড়াই করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে নিরাপদ রাখে সুন্দরবন। এক দল মানুষ নানাভাবে এ বনের ক্ষতি করে আসছে বহু দিন। বন্যপ্রাণী শিকার নিষিদ্ধ হলেও একটি চক্র অবাধে এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। নির্বিচারে উজাড় করা হচ্ছে বন। সুন্দরবনের গাছ বিক্রির অভিযোগ অনেক পুরোনো। এ চক্রটির সঙ্গে কিছু বন কর্মকর্তার যোগসাজশের খবর অতীতে সংবাদমাধ্যমে এসেছে। এভাবে বন উজাড় করা হলে রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীর জীবন হুমকির মুখে পড়বে।
সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে প্রবহমান ছোট-বড় নদ-নদী ও খালে বিষ প্রয়োগে মাছ শিকারের ফলেও পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিষ দিয়ে মাছ শিকার এক ধরনের সর্বনাশা খেলা। বিষ প্রয়োগে কেবল মাছ মরে না। অন্যান্য প্রাণী সেই মাছ খেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। সম্প্রতি বনের চাঁদপাই রেঞ্জের শুয়ারমারা ও কাটাখালী খালে বিভিন্ন প্রজাতির মরা মাছ ভেসে ওঠার দৃশ্য দেখা গেছে। এটা যে এবারই প্রথম, তা নয়। বিভিন্ন সময় বিষ প্রয়োগের খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। যে কোনো মূল্যে এই সর্বনাশা তৎপরতা বন্ধ করা দরকার। অল্প সংখ্যক দুর্বৃত্ত এ বিষ প্রয়োগে জড়িত। এ রাহু থেকে রক্ষা পেতে বন বিভাগের টহল যেমন বাড়াতে হবে, অন্যদিকে গোপনে কৌশলগত অবস্থান নিয়ে দুর্বৃত্তদের আটক করা অতি প্রয়োজন। বিষ প্রয়োগে মাছ শিকার গোটা সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এ বিষয়ে বন বিভাগ দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেবে- সেটাই প্রত্যাশা।
বনানী, ঢাকা

আরও পড়ুন

×