ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদারি

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদারি

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৮:০০

সরকার কা মাল দরিয়া মে ঢাল– এই আপ্তবাক্য কখন চালু হইয়াছিল উহা নিঃসন্দেহে গবেষণার বিষয়। তবে এই বাক্য পানি উন্নয়ন বোর্ড তথা পাউবোর এক শ্রেণির কর্মকর্তার ক্ষেত্রে শতভাগ প্রযোজ্য। দেশের নদনদী রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান এই সরকারি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নাই। ভাঙন প্রতিহতকরণের নামে বিভিন্ন স্থানে নদীতে কংক্রিটের ব্লক এবং বালুভর্তি বস্তা ফেলিবার হিসাবে পাউবোর শুভংকরের ফাঁকি লইয়া নানা গল্প এখন মানুষের মুখে মুখে।

সংস্থাটির বিরুদ্ধে কায়েমি স্বার্থবাদীদের স্বার্থে বহু শাখানদী হত্যার অভিযোগও বিস্তর। কাগজ-কলমে নদী খনন দেখাইয়া প্রকল্পের সম্পূর্ণ টাকা পাউবোর ঠিকাদার-কর্মকর্তাদের মধ্যে বণ্টন করিবার ঘটনাও কম নহে। পাউবোর এহেন দুর্নীতি-অনিয়মের তালিকায় এইবার যুক্ত হইল কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজেরাই ঠিকাদার বনিয়া প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে রাষ্ট্রীয় অর্থ তছরুপের ঘটনা।

রবিবার সমকালের এক প্রতিবেদনে বলা হইয়াছে, সাতক্ষীরার শ্যামনগরের ১৫ নম্বর পোল্ডারের সিংহভাগ প্রকল্পের ঠিকাদার ছিলেন স্থানীয় পাউবো কার্যালয়ের একজন উপসহকারী প্রকৌশলী ও একজন কার্যসহকারী, যাহাদের মূলত প্রকল্প বাস্তবায়ন তদারকি করার কথা। নামসর্বস্ব কোম্পানির পশ্চাতে নিজেরাই প্রকল্পের দরপত্র ক্রয় করিয়া জমা দেন। ফলে অন্য কাহারও টেন্ডারে সর্বনিম্ন দরদাতারূপে কাজ পাইবার কোনো সুযোগ ছিল না। উপরন্তু তদারককারী স্বয়ং ঠিকাদার হওয়ায় কাজের মানও হয় তথৈবচ। ফলে শীঘ্রই মেরামতের নামে একই প্রকল্পে সরকারকে নূতন বরাদ্দ দিতে হয়। অধিকতর উদ্বেগজনক হইল, প্রতিবেদনে স্পষ্ট– প্রকল্পসমূহ দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট উপবিভাগীয় প্রকৌশলী অভিযোগটি গুরুত্বের সহিত গ্রহণ করিতে সম্মত নন।

এমতাবস্থায় অবিলম্বে উক্ত অভিযুক্ত পাউবো কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাহাদের প্রশ্রয়দাতার বিরুদ্ধে যথাযথ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্তপূর্বক কঠোর শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হউক। একই সঙ্গে সংস্থাটিকে অনিয়ম ও দুর্নীতি হইতে স্থায়ীভাবে মুক্ত করাও জরুরি। তজ্জন্য প্রয়োজনে কর্মকৌশলসহ সম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠানকেই পুনর্বিন্যাস করিতে হইবে।

আরও পড়ুন

×