৭১টি দেশের ২৫২টি চলচ্চিত্র নিয়ে ঢাকায় উৎসব শুরু

ছবি: সমকাল
বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৩ | ১৫:১৪ | আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৩ | ১৬:৪৯
জাতীয় জাদুঘরের মূল ফটকের ভেতরে ঢুকলেই চোখে পড়ে বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতাদের ছবি। কেউ কেউ পছন্দের নির্মাতার প্রতিকৃতির পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন। অনেকে আবার তাঁদের জীবনী খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ছেন। চারদিকে চলচ্চিত্রপ্রেমীর বেশ ভিড়। শীতের বিকেলে এমন দৃশ্যের দেখা মিলল উৎসব প্রাঙ্গণে।
শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় জাদুঘরের শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মিলনায়তনে ৭১টি দেশের ২৫২টি চলচ্চিত্র নিয়ে ৯ দিনের ২১তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন চলচ্চিত্র উৎসবের পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন। সভাপতিত্ব করেন উৎসবের পৃষ্ঠপোষক ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'চলচ্চিত্র হচ্ছে প্রবহমান নদীর মতো। এটি ইতিবাচক ও সুস্থধারার জাতীয় চলচ্চিত্র সংস্কৃতি গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখছে। যার মাধ্যমে সমাজের দুঃখ-দুর্দশা, প্রেম-বিরহ ও পারিবারিক বন্ধনের চিত্র ফুটে ওঠে। চলচ্চিত্র শুধু চিত্তবিনোদনের মাধ্যম নয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ইতিহাস-ঐতিহ্যের দলিল হয়ে ওঠে। মানুষকে সচেতন ও শিক্ষিত করার মাধ্যম এটি। ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব খুবই মর্যাদাপূর্ণ একটি উৎসব। এই চলচ্চিত্র উৎসব তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের বৈশ্বিক শৈল্পিক ধারার সঙ্গে সংযোগ তৈরি করে দিচ্ছে বলে আমি মনে করি। এই চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজকদের সাধুবাদ জানাই।'
ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজন করেছে রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন পরিচালক জন জোস্ট, পশ্চিমবঙ্গের অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তীসহ ইরান, তুরস্ক ও বিভিন্ন দেশের একাধিক নির্মাতা। উৎসবের উদ্বোধনী চলচ্চিত্র হিসেবে ফাখরুল আরেফীন খান পরিচালিত 'জে কে ১৯৭১' প্রদর্শিত হয়। এরপর একই ভেন্যুতে দেখানো হয়েছে মার্টিন ডুপ্লাকুইট পরিচালিত চিলির সিনেমা 'ক্যাজাডোরা'।
উদ্বোধনী আয়োজনের আগে ছিল শিল্পকলা একাডেমির ফাইন আর্টসের শিক্ষর্থী ও রিদম ড্যান্স গ্রুপের সদস্যদের পরিবেশনা। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন সাদিয়া রশ্মি সূচনা।
জানা গেছে, প্রতিদিন ৫টি ভেন্যুতে দেখানো হবে ১২৯টি পূর্ণদৈর্ঘ্য, ১২৩টি স্বল্পদৈর্ঘ্য ও স্বাধীন চলচ্চিত্র। এর মধ্যে ৮১টি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র। ভেন্যুগুলো হলো জাতীয় জাদুঘরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মিলনায়তন ও কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা ও নৃত্যশালা মিলনায়তন, আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ মিলনায়তনে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে এসব সিনেমা প্রদর্শিত হবে।
'নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ' স্লোগান নিয়ে শুরু হওয়া এ উৎসব চলবে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত। ৯ দিনের এ উৎসবে এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ, বাংলাদেশ প্যানারোমা, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড, শিশুতোষ চলচ্চিত্র, স্পিরিচুয়াল, উইমেন্স ফিল্মমেকার, স্বল্পদৈর্ঘ্য ও স্বাধীন চলচ্চিত্র বিভাগে চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে সকাল সাড়ে ১০টা, দুপুর ১টা ও বিকেল ৩টার প্রদর্শনী শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে দেখতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে। সুফিয়া কামাল মিলনায়তনের সব প্রদর্শনী সবাই বিনামূল্যে উপভোগ করতে পারবেন। এ ছাড়া শিল্পকলা একাডেমি ও আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ মিলনায়তনে প্রদর্শনীগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
১৯৯২ সাল থেকে নিয়মিত চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করে আসছে রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি।