‘দেবদাস’ থেকে ‘মহানায়ক'- বুলবুল আহমেদের এই চলচ্চিত্রগুলো দেখতে পারেন

বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৩ | ১১:৩৯ | আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৩ | ১৩:১৬
সত্তর-আশির দশকের সাদাকালো পর্দার যুগে যে ক’জন প্রতিভাবান, সুদর্শন বাঙালি নায়ক ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম বুলবুল আহমেদ। তাকে ঢাকাই সিনেমার স্বর্ণযুগের মহানায়কও বলা হয়। এমনকি ঢালিউডের প্রথম ‘দেবদাস’ও তিনিই।
২০১০ সালের ১৫ জুলাই না- ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি। প্রয়াণ দিবসে এই নায়কের অন্যতম সেরা কয়েকটি ছবি সমকালের দর্শকদের মাঝে তুলে ধরা হলো-
‘ধীরে বহে মেঘনা’
বুলবুল আহমেদের ক্যারিয়ারকে সমৃদ্ধ করা একটি অন্যতম ছবির নাম ‘ধীরে বহে মেঘনা’। আলমগীর কবির পরিচালিত এই ছবিতে বুলবুলের নায়িকা ছিলেন ববিতা। তাদের সঙ্গে আরও ছিলেন গোলাম মুস্তাফা, আনোয়ার হোসেন, খলিল উল্লাহ খান প্রমুখ। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের পটভূমিতে নির্মিত এই ছবিটি। ২০০২ সালে ব্রিটিশ ফিল্ম ইন্সটিটিউটের দক্ষিণ এশিয়ার চলচ্চিত্র তালিকায় সেরা ১০টি চলচ্চিত্রের মধ্যে ৮ নম্বর অবস্থানে স্থান পেয়েছে ‘ধীরে বহে মেঘনা’।
‘সীমানা পেরিয়ে’
‘সীমানা পেরিয়ে’ সিনেমাটি বুলবুল আহমেদকে এক উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছিলো। ১৯৭০ সালে উপকূলীয় অঞ্চলে এক ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছবিটি নির্মিত করেছিলেন আলমগীর কবির। এই ছবির জন্য সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ঘরে তুলেছিলেন বুলবুল আহমেদ। ছবিতে তার বিপরীতে ছিলেন জয়শ্রী কবির। চলচ্চিত্রটি ১৯৭৭ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেতাসহ মোট তিনটি বিভাগে পুরস্কার লাভ করেছিল। এছাড়াও ব্রিটিশ ফিল্ম ইন্সটিটিউট-এর ‘বাংলাদেশের সেরা ১০ চলচ্চিত্র’ তালিকায় স্থান পেয়েছে ‘সীমানা পেরিয়ে’।
‘দেবদাস’
ঢালিউডের প্রথম ‘দেবদাস’ বলা হয় বুলবুল আহমেদ। তার করণ, তিনি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের তুমুল জনপ্রিয় ও আলোচিত চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ‘দেবদাস’ ছবিতে। নন্দিত চলচ্চিত্রকার চাষী নজরুল ইসলাম এটি নির্মাণ করেছিলেন ১৯৮২ সালে। এটি ছিল বাংলাদেশে প্রথম ‘দেবদাস’ উপন্যাসের চলচ্চিত্রায়ণ। ছবিতে বুলবুলের বিপরীতে পারু’র ভূমিকায় কবরী সারোয়ার ও চন্দ্রমুখী’র ভূমিকায় ছিলেন আনোয়ারা। চলচ্চিত্রটি ১৯৮২ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার কয়েকটি বিভাগে মনোনয়নের জন্য জমা দেয়া হয়। কিন্তু জুরিবোর্ড সদস্যরা চলচ্চিত্রিটিকে পুননির্মিত/রিমেক অভিহিত করে কোনো শাখাতেই মনোনয়ন দেয়নি।
‘মহানায়ক’
বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে মহানায়ক বলা হয় বুলবুল আহমেদকে। মূলত এই ছবিটির পর থেকেই তার উপাধি হয়েছিলো মহানায়ক। আলমগীর কবির এই ছবিতে দুর্দান্ত এক অভিনেতাকে দেখিয়েছেন। বুলবুল আহমেদ এখানে তিনজন নায়িকার বিপরীতে কাজ করেছেন। তারা হলেন কাজরী, জুলিয়া ও রিনা খান।
‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত’
বুলবুল আহমেদ সবসময়ই সাহিত্যধর্মী চলচ্চিত্রে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। আর শরৎচন্দ্রের সাহিত্যের প্রতি তার ছিলো বিশেষ অনুরাগ। ‘দেবদাস’ চরিত্রে জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর তিনি একই সাহিত্যিকের তুমুল জনপ্রিয় আরেকটি চরিত্র ‘শ্রীকান্ত’ হিসেবেও নিজেকে রুপালি পর্দায় নিয়ে আসেন। এই ছবিটির পরিচালনা করেছিলেন তিনি নিজেই। চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন বুলবুল আহমেদ, মমতাজউদ্দীন আহমদ ও জহিরুল হক। এখানে তার বিপরীতে রাজলক্ষী চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন নন্দিত অভিনেত্রী শাবানা।
‘দীপু নাম্বার টু’
বুলবুল আহমেদের জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের তালিকায় অন্যতম ‘দীপু নাম্বার টু’। শিশুতোষ এই চলচ্চিত্রে তিনি ববিতার স্বামী চরিত্রে অভিনয় করেন। মুহাম্মদ জাফর ইকবালের ১৯৮৪ সালের একই নামের কিশোর উপন্যাস অবলম্বনে সরকারি অনুদানে নির্মিত হয় চলচ্চিত্রটি। এটি পরিচালনা করেছেন মোরশেদুল ইসলাম।
‘এই ঘর এই সংসার’
নির্মাতা মালেক আফসারীকে বলা হয় বিগ বাজেটের নির্মাতা। তিনি তারকাবহুল চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবেও সুপরচিত। তার ছবিতে একসঙ্গে দেখা যেত অনেক তারকা। আর সব ছবিই ছিলো সুপারব্লাস্ট হিট। তেমনি একটি ছবি ‘এই ঘর এই সংসার’। তার সেরা সিনেমার মধ্যে একটি হলো এই ঘর এই সংসার। মালেক আফসারী পরিচালিত এই সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৯৬ সালে। এখানে সালমান শাহ ও আলীরাজের দুলাভাই চরিত্রে অভিনয় করেছেন বুলবুল আহমেদ। তার স্ত্রীর চরিত্রে আছেন রোজী আফসারী। চমৎকার এক পারিবারিক গল্পের ছবিটি বুলবুল আহমেদ নিজেও খুব পছন্দ করতেন।
এফবি/এএম
- বিষয় :
- বুলবুল আহমেদ
- নায়ক
- সাদাকালো পর্দার নায়ক