‘অন্তর্জাল’ সিনেমার সাতসতেরো

সিয়াম আহমেদ, সুনেরাহ মিম ও এবিএম সুমন
অনিন্দ্য মামুন
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১১:৩১
একদিন ঘুম থেকে উঠে দেখলেন, আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সঞ্চিত সব টাকা হাওয়া! অথচ আপনি এক টাকাও তোলেননি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যেখানে সব সময় নিজেকে আপডেট রাখেন, সেটির নিয়ন্ত্রণ আর নেই আপনার হাতে! হ্যাঁ, এমনটিই তো ঘটছে সাম্প্রতিক সময়ে। ইন্টারনেটের সর্বব্যাপী প্রভাব যেভাবে বিশ্বজুড়ে আমূল বদলে দিচ্ছে মানুষের জীবনযাপন, কাজের ধারা– তেমনি রাষ্ট্রীয় এবং সামাজিক নিরাপত্তার জন্যও বড় ধরনের হুমকি তৈরি হচ্ছে এই ইন্টারনেটের মাধ্যমেই। সাইবার আক্রমণ এখন আর কোনো বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি নয়; এরই মধ্যে এ রকম হামলার শিকার হয়েছে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও দেশ।
সাইবার যুদ্ধ নিয়ে ১৯৮৩ সালে প্রথম তৈরি হয়েছিল সিনেমা। এক টিনএজার মার্কিন সামরিক বাহিনীর সুপারকম্পিউটার হ্যাক করে অর্থাৎ পাসওয়ার্ড চুরি করে কীভাবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাধিয়ে দেওয়ার উপক্রম করেছিল, তা-ই ছিল ওই ছবির মূল কাহিনি। এ হয়তো নিছকই কল্পকাহিনি, কিন্তু ২০২৩ সালে এসে এ রকম সাইবার যুদ্ধ এখন আর কল্পকাহিনি নয়; বাস্তবেই ঘটছে। সাইবার আক্রমণ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়েছিল ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে। ৮১ মিলিয়ন বা ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সে সময় চুরি হয়!
জানা-অজানা সাইবার দুনিয়ার থ্রিলার গল্প নিয়ে এবার বাংলাদেশেই প্রথমবারের মতো নির্মিত হয়েছে সিনেমা ‘অন্তর্জাল’। আগামীকাল চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাচ্ছে দেশের হলে। একই দিনে আন্তর্জাতিকভাবেও রিলিজ হচ্ছে সিনেমাটি।
যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ বিশ্বের রেকর্ডসংখ্যক থিয়েটারে ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে বলে জানালেন পরিচালক। এই রেকর্ডসংখ্যক হল আসলে কত? পরিচালক দীপংকর দীপন বললেন, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের ১৫০টি বিখ্যাত থিয়েটারে চলবে ‘অন্তর্জাল’।
সিনেমাটিতে লুমিন চরিত্রটি করেছেন সিয়াম। সিয়ামের ভাষায়, দারুণ একটি চরিত্র এটি। সিয়াম বললেন, ‘অন্তর্জাল যথেষ্ট সময় নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এরপর মুক্তির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। আমাদের টিমের সঙ্গে যুক্ত যারা, টিমের বাইরে যতজন শুভাকাঙ্ক্ষী রয়েছেন, যারা ছবিটি দেখেছেন বা গল্পের প্লট জেনেছেন– তারা একবাক্যে বলেছেন, এই প্যাটার্নের সিনেমা বাংলাদেশে এর আগে হয়নি। এ ধরনের গল্পের সিনেমা হয়নি। এটি আমাদের জন্য শক্তি, সাহস ও প্রেরণা জোগায়।’
মিমের চরিত্রটি নিয়ে পরিচালক দীপংকর পরিচয় করালেন এভাবে, ‘সাইবার অ্যাটাকের ক্ষেত্রে দেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বিজিডি ই-গভ সার্টের একজন কর্মকর্তা হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করেন মিম। মেয়েটি দেশের বাইরে থেকে প্রযুক্তি ও সাইবার বিষয়ে পড়াশোনা করে আসেন। তবে তাঁর চরিত্রে রয়েছে উত্থান-পতন ও নাটকীয়তা।’
নিজের চরিত্র নিয়ে মিমের ভাষ্য, ‘সিনেমায় আমাকে যতটা সিরিয়াস দেখা যাবে। এমন সিরিয়াস চরিত্রে আগে কখনোই দেখা যায়নি আমাকে। পুরো সিনেমায় আমার মুখে কোনো হাসি ছিল না। সব সময় একটা সিরিয়াস মুড নিয়ে থাকতে হয়েছে। সেটা অবশ্য গল্পের প্রয়োজনেই। আমার বিশ্বাস, এমন চরিত্র দর্শকের পছন্দের হবে।’
সিনেমাটিতে রয়েছেন অভিনেত্রী সুনেরাহ বিনতে কামালও।পরিচালক দীপংকর দীপন তাঁর চরিত্রটি নিয়ে বললেন, ‘সুনেরাহ পরিপূর্ণ অভিনয়শিল্পী, সিনেমায় তাঁর বিশালত্বের একটি ব্যাপার রয়েছে। প্রথাভাঙা আরেকটি চরিত্র এটি।’
সুনেরাহ নিজের চরিত্রটি নিয়ে বললেন, ‘ছবিতে আমার চরিত্রের নাম প্রিয়ম, যে কিনা একজন রোবটিক্স ইঞ্জিনিয়ার। সে ভীষণ বুদ্ধিমতী, সাহসী, রাগী এবং কঠোর পরিশ্রমী এক তরুণী। সে কীভাবে তার বুদ্ধিমত্তা দিয়ে দেশকে বাঁচায়, সেটা দেখা যাবে।’
সিনেমার আরেকটি চরিত্রের নাম রায়হান। সিআইডির ফিনটেক সাইবার ক্রাইমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এই রায়হান। চরিত্রটি করেছেন এ বি এম সুমন। ছবির গল্প লিখেছেন দীপংকর দীপন, সাইফুল্লাহ রিয়াদ ও আশা জাহিদ। সংলাপও সাইফুল্লাহ রিয়াদের। চিত্রনাট্য লিখেছেন পরিচালক নিজেই।