‘মানুষটা বাংলা গানে একটা আলাদা স্রোতধারা হয়ে বইছেন’

আসিফ আকবর ও নকীব খান
বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৪ | ১৭:৫২
‘মন শুধু মন ছুঁয়েছে’, ‘এখন অনেক রাত’, ‘তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে’সহ বেশ কিছু জনপ্রিয় ও কালজয়ী গানের সুরকার নকীব খান। ৫৪ বছরের সংগীত জীবনে তাঁর কণ্ঠের গান শুনে কয়েক প্রজন্ম বেড়ে উঠেছে। এদেশের ব্যান্ড সংগীতকে যারা জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে এসেছেন তাদের অন্যতম তিনি। তাঁর গাওয়া ‘ভালো লাগে জ্যোৎস্না রাতে’ গানটি তো এখনও শ্রোতাদের মুখে ফিরে। গুণী মানুষটির আজ জন্মদিন। ১৯৬০ সালের এইদিনে [১৮ মার্চ] চট্টগ্রামের লোহাগাঢ়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নে জন্মেছেন তিনি। তাঁর বাবা আইয়ুব খান। বড় ভাই সুরকার ও গীতিকার জালাল উদ্দিন খান জিল্লু এবং ছোট ভাই শাহবাজ খান পিলু ড্রামার, ভোকালিস্ট ও গীতিকার।
কিশোর বয়সেই ব্যান্ড সংগীতের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন নকীব খান। ‘বালার্ক’ নামের একটি ব্যান্ডে গায়ক ও পিয়ানিস্ট হিসেবে তার প্রথম আত্মপ্রকাশ। কিছুদিন গাওয়ার পর ‘বালার্ক’ ছেড়ে যোগ দেন ‘সোলস’-এ। এই ব্যান্ড দলের সঙ্গে কেটেছে প্রায় ১০ বছর। ১৯৮৫ সালে নকীব খান ‘সোলস’ ছেড়ে ঢাকায় আসার পর এই ব্যান্ড গঠন করেন। জন্মের তিন বছর পর ১৯৮৮ সালে দলটির প্রথম অ্যালবাম ‘রেনেসাঁ’ বাজারে আসে। প্রথম অ্যালবামেই বাজিমাত।
১৯৯৩ সালে বিয়ে করেন নকীব খান ও নুসরাত খান। তাঁদের রয়েছে এক মেয়ে ফাবিহা খান ও এক ছেলে জারিফ খান। নকীব খান চাকরি করেছেন বেশ কিছু বহুজাতিক ও দেশীয় প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদে। তিনি মিউজিক কম্পোজার সোসাইটি বাংলাদেশের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৯৩ সালে ‘তৃতীয় বিশ্ব’ নামে দ্বিতীয়, ১৯৯৮ সালে ‘৭১-এর রেনেসাঁ’ নামে তৃতীয় এবং ২০০৪ সালে ‘একুশ শতকের রেনেসাঁ’ নামে চতুর্থ অ্যালবাম বাজারে আসে।
নন্দিত সংগীত ব্যক্তিত্বের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন তার ভক্ত-সহকর্মীরা। সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর তাঁর ফেসবুকে লেখেন, ‘বাংলাদেশে একজন নকীব খান আছেন। সোলস এবং রেনেসাঁ ব্যান্ডের মাধ্যমে কালজয়ী বেশ কিছু গান জন্ম দিয়েছেন তিনি। সেই ছোটবেলা থেকে দেখছি মানুষটা বাংলা গানে একটা আলাদা স্রোতধারা হয়ে বইছেন। তাঁর প্রতিটি সুরের মূর্ছনা ছুঁয়ে যায় অমরত্ব! এ যেন ঐশ্বরিক এক মাদকতা! রেনেসাঁ ব্যান্ডের পারফরমেন্স আমার ভবিষ্যতের স্কেচ। আমার ড্রামার বিকাশ রয় রেনেসাঁয় বাজায় তাদের নিয়মিত ড্রামার শাহবাজ খান পিলু ভাই না থাকলে। একবার রেনেসাঁ আর আমার কনসার্ট ছিল একই দিনে। আমি বিকাশকে বললাম- তুমি দ্বিধাহীন চিত্তে রেনেসাঁর শো করো, তাদের সাথে স্টেজ শেয়ার করতে পারাটাও এক জীবনের সৌভাগ্য।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘ব্যক্তিজীবনে নকীব ভাই মদূভাষী হাসিখুশী কর্পোরেট মানুষ। বাংলা গানের জন্য নিবেদিতপ্রাণ এই ভদ্রলোকটিকে যে কোন কারনে ডাকলেই ছুটে আসেন। আর্ট কালচারে প্রকৃত বিনয় বলতে যা বোঝায় তার পুরোটাই রয়েছে শ্রদ্ধেয় নকীব ভাইয়ের মধ্যে, সেই তুলনায় আমি জংলী। সারাজীবনে তিনি আমাকে একটি গানই দিয়েছেন। গত প্রায় ১৬/১৭ বছর লেগে আছি যদি আরেকটি গান পাই! আজ বাংলা গানের এই অবাক বিস্ময় প্রতিভার জন্মদিন। শুভ জন্মদিন নকীব ভাই। আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।’
- বিষয় :
- নকীব খান